এই ব্লগটি সন্ধান করুন

মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০২৪

সরস্বতী পূজা নিয়ে

 


সরস্বতী প্রণাম মন্ত্রে অশ্লীল শ্লোক কেনো ?




ফটোপোস্টে দেখুন সরস্বতীর প্রণাম মন্ত্রের অশ্লীল শ্লোক বিষয়ে আর্য সমাজীরা আদা জল খেয়ে মাঠে নেমেছে, এই উদ্দেশ্যে যে এর মাধ্যমে তারা পুরাণ বিশ্বাসীদের অশ্লীল প্রমাণ করেই ছাড়বে। কিন্তু যাদের সত্যকে উপলব্ধি করার ক্ষমতা নেই, তারা কেনো যে সনাতন ধর্ম নিয়ে লেকচার দিতে আসে,সেটাই তো বুঝি না।


যা হোক,সরস্বতীর প্রণাম মন্ত্রে অশ্লীল শ্লোকের বিষয়ে বলার আগে দেবী সরস্বতী সম্পর্কিত অন্যান্য মন্ত্রগুলো একটু দেখে নিন, বিষয়টি বুঝতে সহজ হবে।


সরস্বতীর প্রণাম মন্ত্র হলো-


সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে।

বিশ্বরূপে বিশালাক্ষ্মী বিদ্যাংদেহি নমোহস্তুতে।।


এরপর

সরস্বতীর অঞ্জলি মন্ত্র হলো-


ভদ্রকাল্যৈ নমো নিত্যং সরস্বত্যৈ নমো নমঃ ।

বেদ –বেদাঙ্গ বেদান্তবিদ্যাস্থানেভ্য এব চ ।।


এবং এই মন্ত্রের পরেই ভেজাল হিসেবে ঢোকানো হয়েছে নিচের অংশটুকু,বিষয়টি আপনারা খেয়াল রাখুন, একটু পরেই এটা নিয়ে আলোচনা শুরু হবে।


জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে।

বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।।


এরপর দেখুন সরস্বতীর স্তব মন্ত্র হলো-


শ্বেতপদ্মাসনা দেবী শ্বেত পুষ্পোপশোভিতা।

শ্বেতাম্ভরধরা নিত্যা শ্বেতাগন্ধানুলেপনা।।

শ্বেতাক্ষসূত্রহস্তা চ শ্বেতচন্দনচর্চ্চিতা।

শ্বেতবীণাধরা শুভ্রা শ্বেতালঙ্কারবভূষিতা

বন্দিতা সিদ্ধগন্ধর্ব্বৈর্চ্চিতা দেবদানবৈঃ।

পূঝিতা মুনিভি: সর্ব্বৈঋষিভিঃ স্তূয়তে সদা।।

স্তোত্রেণানেন তাং দেবীং জগদ্ধাত্রীং সরস্বতীম্।

যে স্মরতি ত্রিসন্ধ্যায়ং সর্ব্বাং বিদ্যাং লভন্তি তে।।

এবং তারপর সরস্বতীর বন্দনা মন্ত্র হলো-


যা কুন্দেনু তুষার হার ধবলা যা শুভ্রবস্ত্রাবৃতা

যা বীণা বরদণ্ডমণ্ডিত করা যা শ্বেত পদ্মাসনা।

যা ব্রহ্মাচ্যুতশংকর প্রভৃতির্দেবৈঃ সদাবন্দিতা

সা মাং পাতুসরস্বতী ভগবতী নিঃশেষ জাড্যাপহাম্॥১॥

শুক্লাং ব্রহ্ম বিচার সার পরমাদ্যাং জগদ্ব্যাপিনীম্

বীণা পুষ্পক ধারিণীমভয়দাম্ জাড্যান্ধকারাপহাম।

হস্তে স্ফটিক মালিকাম্ বিদধতীম্ পদ্মাসনে সংস্থিতাম্

বন্দে ত্বাং পরমেশ্বরীম্ ভগবতীম্ বুদ্ধিপ্রদাম্ সারদাম্॥২॥


এবং শেষে সরস্বতীর ধ্যান মন্ত্র দেখুন-


ওঁ সরস্বতী ময়া দৃষ্টবা, বীণা পুস্তক ধারণীম্।

হংস বাহিনী সমাযুক্তা মা বিদ্যা দান করেতু মে ওঁ।।


খেয়াল করুন এই সবগুলো মন্ত্র কিন্তু সংস্কৃত ভাষায় রচিত, কিন্তু যে অশ্লীল মন্ত্রের কথা বলা হয়, যেটা হলো-


জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে।

বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।।


ভালো করে খেয়াল করুন এই মন্ত্রটি কিন্তু সম্পূর্ণ বাংলায় রচিত,সংস্কৃত ভাব আনতে এতে শুধু হস্তে এবং নমহস্তুতে শব্দটি দুটি ব্যবহার করা হয়েছে।


তার মানে সনাতন বিরোধী কোনো দুষ্টচক্র দেবী সরস্বতীর মহিমাকে কলঙ্কিত করার জন্য এই মন্ত্র রচনা করে তা বাজারে ছেড়েছে এবং সাধারণ হিন্দুরা সেটা বুঝতে না পেরে এর শিকার হয়েছে।


নিজেদের পণ্ডিত মনে করা আর্য সমাজীরা যদিও এই মন্ত্রটিকে সরস্বতীর প্রণাম মন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেছে, কিন্তু বাস্তবে এটি সরস্বতীর অঞ্জলি মন্ত্রের মধ্যে যুক্ত করা আছে, যদিও দেবী সরস্বতীর অঞ্জলি মন্ত্র একটি আছে, যা সংস্কৃত ভাষায় রচিত এবং সেটা হলো-


ভদ্রকাল্যৈ নমো নিত্যং সরস্বত্যৈ নমো নমঃ ।

বেদ –বেদাঙ্গ বেদান্তবিদ্যাস্থানেভ্য এব চ ।।


তাহলে এখানে প্রশ্ন উঠে যে- দেবী সরস্বতীর আরেকটি অঞ্জলি প্রদান মন্ত্রের প্রয়োজন কী ? একটি মন্ত্র তো আছেই। অপরাধীরা তাদের অপরাধের সূত্র যেমন রেখে যায়, তেমনি এই মন্ত্র রচয়িতারাও তাদের অপরাধের সূত্র রেখে গেছে, তার প্রমাণ দিচ্ছি নিচে-


তথাকথিত বানানো মন্ত্রটি খেয়াল করুন-


জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে।

বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।।


এটি যে বাংলায় রচিত, সেটা আগেই বলেছি, তাই একে কোনোভাবেই মন্ত্র বলা যায় না, এটাকে বলা যেতে পারে শ্লোক। খেয়াল করুন এটার যে ছন্দ, তা কিন্তু দেবী সরস্বতীকে নিয়ে রচিত অন্যান্য মন্ত্রের ছন্দ থেকে আলাদা, তার মানে এই শ্লোকটি যে কোনো ঋষি রচিত নয়,সেটা প্রমাণিত।


আরো খেয়াল করুন- ‘কুচযুগশোভিত’ শব্দ দ্বারা এটাকে অশ্লীল বানানো হয়েছে, যার সাধারণ অর্থ হলো স্তন জোড়া। অর্থাৎ এই শ্লোক দ্বারা যখন কেউ সরস্বতী দেবীকে অঞ্জলি প্রদান করবে, ঠিকমতো বাংলা বুঝলে তার মনে দেবী সরস্বতীর স্তনের কথা মনে পড়বে, স্তনের দিকে চোখ যাবে, তখন তার মধ্যে ভক্তিভাব বাদ পড়ে যৌন চিন্তা চলে আসতে পারে এবং দেবী সরস্বতী তখন তার কাছে মায়ের মতো না থেকে যৌনতার সামগ্রী হয়ে যেতে পারে।


কিন্তু এই পণ্ডিত কবিরা যে ভুল করে তাদের অপরাধের চিহ্ন রেখে গেছে, সেটা হলো এরা সংস্কৃত শব্দ কুচ এর সাথে জোড়া বোঝাতে যুগ শব্দটি ব্যবহার করেছে। সংস্কৃতে জোড়া বোঝাতে যুগ শব্দটির ব্যবহার হয় না; জোড়া বোঝাতে সংস্কৃতে- “যুগলম” বা “যুগম” শব্দের ব্যবহার হয়। কিন্তু এরা তাদের শ্লোকে কুচযুগ শব্দটি ব্যবহার করেছে, যার দ্বারা কোনোভাবেই স্তনজোড়াকে বোঝায় না; কুচ দ্বারা সংস্কৃতে স্তনকে বোঝালেও যুগ দ্বারা একটি নির্দিষ্ট সময়কে বোঝায়, যুগ দ্বারা কোনোভাবেই জোড়াকে বোঝায় না।


তাই এরকম একটি বানানো শ্লোক দ্বারা সনাতন ধর্মকে প্রশ্নবিদ্ধ করার যে অপচেষ্টা তা যেমন ব্যর্থ, তেমনি একই ভাবে যে ব্যর্থ আর্য সমাজীদের লাফালাফি, আশা করছি- আমার পাঠক বন্ধুদেরকে তা বোঝাতে পেরেছি।


জয় সনাতন।

জয় মা সরস্বতী।


রবিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৪

পৌষ সংক্রান্তি কি জানুন

 

পৌষ সংক্রান্তি কি..কেন পালন করা হয় ?




১৫ই জানুয়ারী ২০২৪ইং: রোজ সোমবার পৌষ সংক্রান্তি এবং উত্তরায়ণ শুরু৷


প্রতিমাসের শেষ দিন অর্থাৎ যে দিন মাস পূর্ণ হবে সেই দিনকে সংক্রান্তি বলা হয়৷ সংক্রান্তি অর্থ সঞ্চার বা গমন করা৷ সূর্যাদির এক রাশি হতে অন্য রাশিতে গমন করাকেও সংক্রান্তি বলা হয়৷ সং+ ক্রান্তি অর্থ সঙ মানে সাজা ক্রান্তি সংক্রমন বা গমন করাকে বুঝায়৷ অর্থাৎ ভিন্ন রুপে সেজে অন্যত্র গমন করা বা সঞ্চার হওয়াকে বুঝায়৷ মাঘ,ফাল্গুন,চৈত্র, বৈশাখ, জৈষ্ঠ, আষাঢ় এই ছয় মাস উত্তরায়ণ কাল এবং শ্রাবন,ভাদ্র,আশ্বিন,কার্ত্তিক,অগ্রহায়ন,পৌষ, এই ছয় মাস দক্ষিনায়ন কাল৷ পৌষ মাসের শেষ দিনে সূর্য উত্তরায়নের দিকে যাত্রা শুরু করে বলে একে উত্তরায়ণ সংক্রান্তিও বলা হয়৷ অর্থাৎ মানুষের উত্তরায়নের ছয়মাস দেবতাদের একটি দিন এবং মানুষের দক্ষিনায়ণের ছয়মাস দেবতাদের একটি রাত৷ রাতে মানুষ যেমন দড়জা জানালা, প্রধান ফটক বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন তেমনি দেবতাগনও রাত্রে অর্থাৎ দক্ষিনায়নে সবকিছু বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন৷ এসময় বাহির থেকে প্রবেশ করার সুযোগ নেই অর্থাৎ দক্ষিনায়নে দেবলোক পুরোপুরি বন্ধ থাকে৷ আবার দেবতাগনের রাত পৌষ সংক্রান্তির দিন শেষ হয় বলে পরবর্তি সূর্য উদয়ের ব্রহ্মমুহূর্ত থেকে দেবতাগনের দিবা শুরু হয়৷ উক্ত সময়ে স্বর্গবাসী ও দেবলোকের সকলের নিদ্রা ভঙ্গ হয় এবং নিত্য ভগবৎ সেবামূলক ক্রিয়াদী শুরু হতে থাকে৷ এই জন্য সনাতন ধর্মাম্বলম্বীগন ব্রহ্ম মুহূর্তে স্নান, নামযজ্ঞ, গীতাপাঠ, শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি ও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটিকে আনন্দময় করে তুলেন৷


অন্যদিকে গঙ্গাপুত্র ভীষ্ম তাঁর পিতা শান্তনু থেকে বর পেয়েছিলেন যে তিনি যখন ইচ্ছা মৃত্যুবরন করতে পারবেন৷ মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের বীশ্ববিখ্যাত বীর, মহাপ্রজ্ঞ, সর্বত্যাগী ও জীতেন্দ্রিয় মহাপুরুষ ভীষ্মের মহাপ্রয়ানের স্মৃতির জন্য পৌষ


সংক্রান্তি আরও মর্যাদা পূর্ণ হয়েছে৷ উলেক্ষ্য কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে কৌরব পক্ষের চারজন সেনাপতির মধ্যে তিনিই প্রধান সেনাপতি ছিলেন৷ উভয় পক্ষের আঠার দিন যুদ্ধের দশম দিবসে সূর্যাস্তের কিছুক্ষন পূর্বে পান্ডব পক্ষের সেনাপতি অর্জুনের শরাঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে ভীষ্মদেব রথ থেকে পড়ে যান৷ কিন্তু তিনি মাটি স্পর্ষ না করে আটান্নদিন তীক্ষ্ণ শরশয্যায় শুয়ে উত্তরায়নের অপেক্ষা করে পৌষ সংক্রান্তির দিনে যোগবলে দেহত্যাগ করেন৷


গ্রাম বাংলা সহ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ভোরবেলা আগুন লাগানো হয় খর ও বাঁশ দিয়ে বানানো স্তুপে৷ ৷এটা মূলত পিতামহ ভীষ্মদেবের চিতার স্বরুপ৷৷ পৌষ সংক্রান্তির দিন সূর্য উত্তর মেরুতে হেলে পড়তে থাকে যার জন্য একে মকর সংক্রান্তি বা উত্তরায়ণ সংক্রান্তি বলে৷ শাস্ত্রমতে ভীষ্মদেব মৃত্যুর পরে ভাগবদ্ ধামে যাননি৷ তিনি ছিলেন দৌ মতান্তরে দ্যু নামক অষ্টবসু৷ যিনি মহর্ষি বশিষ্টের অভিশাপ গ্রস্ত হয়ে ইহলোকে মনুষ্য হিসাবে কৃতকর্ম ভোগের জন্য জন্ম নিয়েছিলেন৷ তাই তাঁর পুনরায় দেবলোকে যাবার কথা৷ কারন তিনি সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা৷ দক্ষিনায়ণের সময়ে দেবলোকে রাত্রি,সেই সময় সেখানকার সব কিছুই বন্ধ থাকে,ভীষ্মদেব যদি দক্ষিনায়ণে দেহত্যাগ করতেন তবে তাঁকে তাঁর লোকে প্রবেশ করার জন্য বাইরে প্রতিক্ষা করতে হতো৷ তিনি ইচ্ছামৃত্যু বরন করেছিলেন বলে ভেবে দেখলেন, দক্ষিনায়ণে মহাপ্রয়ান করলে দেবলোকে গিয়ে বাইরে প্রতিক্ষা করার চেয়ে এখানে থেকে উত্তরায়নের প্রতিক্ষা করাই ভালো৷ কারন এখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দর্শণ লাভ হবে এবং সৎসঙ্গ হতে থাকবে৷ যার ফলে সকলেরই মঙ্গল হবে৷ দেবলোকে একলা প্রতীক্ষা করে কী হবে৷ এই ভেবে তিনি দক্ষিনায়ণে শরীর ত্যাগ না করে উত্তরায়ণে শরীর ত্যাগ করেছিলেন৷ দীর্ঘ আটান্নদিন শরশয্যায় অবস্থানের পর পৌষ সংক্রান্তির নিশান্তে পিতামহ ভীষ্মদেব যোগবলে দেহত্যাগ করে দেবলোকে গমন করেন৷


5000 বছর পূর্ব হইতে আমরা প্রতিবৎসর পৌষ সংক্রান্তি বা উত্তরায়ণে প্রাতকালে খরকুটো জড়ো করে পিতামহ ভীষ্মদেবের প্রতিকী শবদাহ করে থাকি, অনেকে এই শবদাহকে বুড়ির ঘরবামেড়ামেড়ির ঘর জ্বালানো বলে থাকেন এবং এই দিনে মাছ,মাংস আহার করে থাকেন যাহা সম্পূর্ণ অনুচিত৷ কারণ উত্তরায়ণ বা পৌষ সংক্রান্তি অন্তোষ্টিক্রিয়া ও শ্রাদ্ধ সংক্রান্ত অনুষ্ঠান৷ অন্যদিকে এই দিনটি এতই গুরুত্বপূর্ন যে, এই দিন প্রাতঃকালে দেবলোকের সকল দেবতাগন ও স্বর্গবাসী পূর্বপুরুষগন নিদ্রা থেকে জাগ্রত হন৷ এই জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীগন ব্রহ্মমুহূর্তে স্নান, শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি, গ্রামে নগড়ে সংকীর্তন, গীতাপাঠ, ইত্যাদি মঙ্গলজনক কাজ করে থাকেন৷ প্রতিবৎসর আমরা শাস্ত্রসন্মতভাবে ভাবগাম্ভীর্যের সহিত এই অনুষ্ঠান পালন করে থাকি। সবাইকে মহা সংক্রান্তির প্রণাম,প্রীতি ও শুভেচ্ছা৷।হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ জয়