এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শুক্রবার, ১৭ জুলাই, ২০২০

গোমুত্র অপপ্রচার

গোমূত্র নিয়ে কিছু মুসলিমদের করা কটুক্তির জবাবঃ
কথায় কথায় কিছু মুসলমানরা সবসময় হিন্দুদের কে বলতে থাকে, গোমূত্র কি শুদ্ধ জিনিস? ভালো হিন্দু হতে গেলে নাকি গোমূত্র পান করতে হয়। এইটা তো মানবতার লঙ্ঘন এর শামিল।
কিন্তু তারা গোমূত্রের পান করা নিয়ে কোনো রেফারেন্স দেয় না। আর আমি মনে করি যারা রেফারেন্স না দিয়ে কথা বলে, তারা রাস্তার পাগলা কুকুরের মত ঘেউ ঘেউ করার সমান। আর এরা রেফারেন্স দিবে বা কি করে, থাকলেই তো দিবেই। কারন এরা জানে সনাতন ধর্ম থেকে কাউকে দূরে সড়াতে হলে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
সনাতন ধর্মের প্রামান্য শাস্ত্র বেদ, উপনিষদ, মহাভারত, গীতা কোথাও গোমূত্র খাওয়ার কথা উল্লেখ নেয়। যদিও কেউ গোমূত্র খেয়েও থাকে তার জন্য সনাতন ধর্ম কোনোভাবে দায়ী নয়।
প্রকৃতপক্ষে এমন বিধি আছে ইসলামধর্মে। আরবের মুসলিমদের ভেতর উঠের মূত্র পান খুবই জনপ্রিয়। তার প্রমান হাদিস এ বলা আছে দেখুনঃ
"আনাস (রাঃ) হতে বর্নিত আছে, উরাইনা হতে কয়েকজন লোক মাদীনায় আসল। এ অঞ্চলের আবহাওয়া তাদের স্বাস্থ্যের অনুকূল না হওয়ায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে সাদকার উটের এলাকায় পাঠিয়ে দেন এবং বলেনঃ তোমরা এ দুধ ও প্রস্রাব পান কর। (সহীহ আত্-তিরমিজী (তাহকীককৃত), হাদিস নাম্বার ১৮৪৫, প্রকাশনায়: হুসাইন আল-মাদানী প্রকাশনী)
"লায়স আরো বলেছেন যে, ইউনুস (রহ.) ইবনু শিহাব (রহ.) থেকে আমার নিকট বর্ননা করেছেন, তিনি বলেছেন যে, আমি এ হাদিসের বর্ননাকারী (আবূ ইদরীস)-কে জিঙ্গেস করছি যে, গাধীর দুগ্ধ, হিংস্র প্রানীর পিত্তের রস এবং উটের পেশাব পান করা বা তা দিয়ে অযু বৈধ কিনা? তিনি বলেছেনঃ আগেকার মুসলিমগন উটের প্রস্রাবের সাহায্য চিকিৎসার কাজ করতেন এবং এটা তারা কোন পাপ মনে করতেন না।"(সহীহ বুখারী, হাদিস নাম্বার ৫৭৮১, প্রকাশনায়: তাওহীদ পাবলিকেশন্স)
এই দুইটা হাদিস পড়েই আমরা এতক্ষনে বুঝতে পারলাম, ইসলামের উঠের মুত মহা ঔষধ যা ইসলামের নবী মোহাম্মদ নিজে বলে গেছেন।
যাইহোক আমি ভাবলাম উঠের মূত্র আবার কেউ খায় নাকি, কিন্তু সত্যিটা জানতে গিয়ে যা পেলাম সেটা হলো, মুসলিমরা সত্যি সত্যি উঠের মূত্র পান করে। দেখুন ভিডিওতে সৌদি আরবের মুসলিমরা কিভাবে উঠের মূত্র পান করে।
এছাড়াও আরবদেশ গুলোতে পেট্রোলের চেয়ে কয়েকগুন বেশি দামে এই উঠের মূত্র বিক্রি হয়ে থাকে। সম্প্রতি কয়েকটি দোকান সৌদি সরকার বন্ধ করে দিয়েছে, কারন উঠের মুতের পরিবর্তে নিজ প্রস্রাব বিক্রির দায়ে বন্ধ হয়ে গেলো বেশ কিছু সৌদি উঠের মুতের দোকান। বিস্তারিত লিংক এ গিয়ে দেখুন।
Link:
এরপর একদিন জানতে পারলাম, উঠের মুত না খাওয়ার জন্য মুসলমানদের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিস্তারিত জানতে দেখুন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়।
Link:
পরে ভাবলাম মুসলমান ভাইয়েরা হাদিস পড়ে বা মোহাম্মদের কথা শুনে উঠের মুত খাবে তাতেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমস্যা কীসের???
শেষে ঘেটে যা পেলাম তা অবিশ্বাস করার মত। মুসলমানদের মধ্যে এক ধরনের ভাইরাস পাওয়া গেছে যা ভয়ানক ধরনের শ্বাসপ্রশ্বাস জনিত রোগ, এছাড়া জ্বর, সর্দি রোগও সৃষ্টি করছে। সেটি মধ্যপ্রাচ্চে অনেকটা মহামারী আকার ধারন করেছে। এই রোগটির নাম দেয়া হয়েছে Middle East Respiratory Syndrome (MERS). রোগটি শুধুমাত্র মুসলমানদের হচ্ছে এবং সেটি উঠের মুত পান করার জন্য তা নিশ্চিত হয়েছে বিশ্বের এই সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সংস্থা। তাই তারা কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে উঠের মুত না খাওয়ার জন্য। এই রোগে এই পর্যন্ত অনেকজন প্রান হারিয়েছেন এবং এটি ধীরে ধীরে সৌদিদের মাধ্যমে বিশ্বের অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হুঁশিয়ারি এবং এ রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুনঃ
Link:
উপরোক্ত আলোচনা থেকে সেইসব মুসলিমদের আমি বলতে চায় আপনারা যারা গোমূত্র নিয়ে শুদ্ধতার প্রশ্ন তুলেছেন, এখন বলেন তো উঠের মুত কী শুদ্ধতা?
উঠের মুত খাওয়ার ফলে অনেকের মধ্যে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খুলে ঢুলে পড়ছে, যা এ পর্যন্তই অনেকের মৃত্যুও হয়েছে। আপনাদের যখন মনে হয় হিন্দুরা গোমূত্রে খেলে মানবতার লঙ্ঘন হয়ে যায়। যদিও সনাতনধর্মে গোমূত্র খাওয়ার বিধান নেই। তো সেইসব মুসলিমদের আমি বলতে চাই, উপরোক্ত উল্লেখিত থেকে কি প্রমান হয়না যে, উঠের মুত খাওয়ার ফলে মানবতার লঙ্ঘন শামিল হচ্ছে?
তাছাড়া সেইসব মুসলিমদের আরেকটা দাবি হলো ভালো হিন্দু হতে গেলে নাকি গোমূত্র পান করতে হবেই। তাহলে আমি সেসব মুসলিমদের বলতে চাই, আপনাদের ভালো মুসলিম হতে গেলে তো অবশ্যই আপনাকে উঠের মুত পান করতে হবেই। তবে শেষ পরিনিতি কি হবে, উঠের মুত পান করার ফলে আপনার ভাইরাসজনিত মৃত্যু। তাহলে উঠের মুতের চেয়ে গোমূত্র খাওয়া আপনার জন্য মঙ্গলজনক নয় কী? তাহলে তো অনন্ত প্রানে বেঁচে যাবেন।
আশা করি গোমূত্র নিয়ে অপপ্রচারের জবাব দিতে পেরেছি, ভবিষ্যতে যাতে গোমূত্র প্রসঙ্গ নিয়ে সনাতনধর্মকে কটুক্তি করার আগে একবার হলেও ভেবে নিবেন। নয়তো গর্তে পড়লে সেখান থেকে আর বের হয়ে আসতে পারবেন না।
জয় শ্রীরাম জয় শ্রীকৃষ্ণ জয় হোক সত্য সনাতনের🙏
suvongkar deb shuvo

শনিবার, ১১ জুলাই, ২০২০

কৃষ্ণ ও তাকে নিয়ে অপপ্রচার

অনেকের দাবি হলোঃ



শ্রীকৃষ্ণ তার নিজ আপন মামী রাধার সাথে প্রেম করেছে, এমনকি ১৬১০৮টি মেয়েকে বিবাহ করেন, এই কেমন ঈশ্বর যে পরকিয়া লিপ্ত থাকে। আবার অনেকেই বলে, লক্ষ্মীদেবীর অংশ হলো রাধা, এই সূত্র তারা রাধাকৃষ্ণের প্রেম সত্য বলে ধরে নেই, অনেকে আবার হয়তো রাধাকে, শ্রীকৃষ্ণের স্ত্রী বলে ধরেও নেই।
এই প্রশ্নগুলো সচারচর মুসলমানরা সাধারন সনাতনী ব্যাক্তিদের করে থাকে, কিন্তু তারা এই প্রশ্নের গুলোর সম্মুখীন হলেও তাদেরকে সদুত্তর দিতে পারেনা, অনেক সময় এই প্রশ্নগুলো নিয়ে সাধারন সনাতনীরা হীনমন্যতা ভোগে এবং তারা নিজের ধর্মকে তখন ভ্রান্ত বলে মনে করতে থাকে। আজকে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো।
এখন দেখা যাক রাধা কৃষ্ণের মামী কিনা?
আপনারা জানেন মামীর স্বামী হলো মামা, আর সেই মামা হলো মায়ের ভাই। মুমিনরা বলছে যে, রাধা কৃষ্ণের মামী। তাহলে রাধার স্বামীকে হতে হবে কৃষ্ণের মায়ের কোনো ভাই। এখন দেখা যাক রাধার স্বামী বলে যাকে বলা হয় সেই আয়ান ঘোষ, প্রকৃতপক্ষে কৃষ্ণের মায়ের ভাই কিনা।
কৃষ্ণের মা ছিলো দুইজন। জন্মদাত্রী দেবকী, আর পালক যশোদা। দেবকীর ভাই কংস, কংসের যেহেতু অন্য কোনো ভাই ছিলো না সেহেতু এই দিক থেকে কৃষ্ণের অন্য কোনো মামা থাকা সম্ভব নয়। বাকী রইলো যশোদা; কথিত রাধার কথিত স্বামী আয়ান ঘোষ যে যশোদার ভাই সেই ব্যাপারে শ্রীমদ্ভাগবত, যেটা শ্রীকৃষ্ণের প্রামান্য জীবনী এবং মহাভারত, যাতে কৃষ্ণের জীবনের অনেক কাহিনী আছে, এই দুটো গ্রন্থে কোনো তথ্য নেই। এছাড়া আয়ান ঘোষও যে একটা কাল্পনিক চরিত্র তার প্রমান তার ঘোষ পদবী দিয়ে।কারন কৃষ্ণের সময় ঘোষ পদবী বলে কিছু ছিলো না। এই ঘোষ পদবি মধ্যযুগের উৎপত্তি। সংস্কৃত ভাগবত এবং মূল মহাভারতে রাধা কৃষ্ণের প্রেমের কোনো কথা উল্লেখ নেই।
তারপর দেখা যাক রাধা, লক্ষ্মীদেবীর অংশ কিনা?
হরিদাস সিদ্ধান্ত বাগীশ অনুবাদকৃত মহাভারতে বলা আছে,
"লক্ষ্মীদেবীর অংশ, শ্রীকৃষ্ণেরই প্রীতির জন্য পৃথিবীতে আসিয়া ভীষ্মকরাজার কন্যারূপে রুক্মিণী নামে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন।।
(মহাভারতঃ আদিপর্ব, দ্বিষষ্টিতমোধ্যায় (৬২ অধ্যায়), শ্লোক ১৫৭)
সুতরাং, আমরা দেখতেই পাচ্ছি, রাধা কোনো লক্ষ্মীর অংশ নয়। একমাত্র লক্ষ্মীর অংশ হলো রুক্মিণী। তার মানে শ্রীকৃষ্ণের স্ত্রী হওয়ার যোগ্য রাখে শুধুমাত্র লক্ষ্মীদেবীর অংশ স্বয়ং রুক্মিণী ই। কারন যিনি রুক্মিণী তিনিই হলেন লক্ষ্মী এবং যিনি শ্রীকৃষ্ণ তিনিই হলেন নারায়ন। শ্রীকৃষ্ণই যে স্বয়ং নারায়ন, এই প্রসঙ্গে হরিদাশ সিদ্ধান্ত বাগীশ অনুবাদকৃত মহাভারতে বলা আছে,
" নারায়ন নামে যিনি সনাতন এবং দেবগনেরও দেবতা ছিলেন, তিনিই মর্ত্ত্যলোকে আসিয়া প্রতাপশালী কৃষ্ণরূপে জন্মগ্রহন করিয়াছিলেন।।
(মহাভারতঃ আদিপর্ব, দ্বিষষ্টিতমোহধ্যায় (৬২ অধ্যায়), শ্লোক ১৫২)
এরপর দেখা যাক শ্রীকৃষ্ণ কাকে বিবাহ করেছিলেন?
মহাভারত এর অনুশাসন পর্ব, অধ্যায় ১৪, শ্লোক ৭ এবং আদিপর্ব, অধ্যায় ৬২, শ্লোক ১৫৬ এখানে বলা আছে, শ্রীকৃষ্ণের ১৬০০০ স্ত্রী ছিলো। কিন্তু বাস্তবে এই শ্লোক গুলো প্রক্ষিপ্ত। কেননা মহাভারতের আগে মোট শ্লোক ছিলো ৮৪,৮৩৬। এখন বর্তমানে শ্লোক ১,০৭,৩৯০। যা বর্তমানে সময়ের সাথে সাথে অনেক গুলো শ্লোক প্রক্ষিপ্ত হয়েছে।
পুরান এর কাহিনি অনুসারে আমরা পাই, নরকাসুর থেকে শ্রীকৃষ্ণ এই ১৬০০০ মেয়েকে বন্ধি থেকে উদ্ধার করে বিবাহ করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে অনেকে বলে সেই সময়ে সমাজে এইসব মেয়েদের বিবাহ দেওয়ার সম্ভব ছিলো না বিধায় তাই তাদেরকে শ্রীকৃষ্ণ বিবাহ করে নেই। কিন্তু বাস্তবে এইসব ঘটেও নি সেটার প্রমান আমরা নরকাসুরের জন্মের বৃত্তান্ত থেকেই জানতে পারবো।
বিষ্ণু যখন বরাহ অবতার রূপ ধারন করে জলমগ্ন পৃথিবীকে উদ্ধার করেছিলেন, তখন পৃথিবী ও বরাহের সংস্পর্শে নরকাসুরের জন্ম, এই সূত্রে পৃথিবী মানে Earth হলো নরকের মা। এখন বলেন, বাস্তবে এটা কি সম্ভব? পৃথিবী কি মানুষ, যে সে সরাসরি কোনো মানব সন্তানের জন্ম দেবে?
নরকাসুরের জন্মের এই অবাস্তব কাহিনীই বলে দেয় যে, নরকাসুরের ঘটনা সম্পূর্ণ বানানো।
যদি কৃষ্ণ এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতো, তাহলে যুধিষ্ঠিরের রাজসূয় যজ্ঞের সময়, সেখানে উপস্থিত শিশুপাল, যে ছিলো কৃষ্ণের প্রধান শত্রু ও সমালোচক, সে কৃষ্ণ নিন্দার সময় এই ষোলহাজার একশ আটজন মেয়ের ঘটনার কথা অবশ্যই উল্লেখ করতো, কিন্তু শিশুপালও তা উল্লেখ করেনি, যেমন শিশুপাল উল্লেখ করেনি রাধার কথা। কারন, কৃষ্ণের জীবনে রাধা বলে যেমন কেউ ছিলো না, তেমনি তার জীবনে ১৬,১০৮ মেয়েকে উদ্ধার ও বিয়ে করার ঘটনাও ঘটেনি। যেহেতু শ্রীকৃষ্ণের স্ত্রী একমাত্র রুক্মিণী ছিলেন, তাই সেই সময় শিশুপাল একমাত্র রুক্মিণী দেবীর কথা উল্লেখ করেছিলেন, শুধুমাত্র রুক্মিণী ই হলেন শ্রীকৃষ্ণের স্ত্রী।
যুধিষ্ঠিরের রাজসূয় যজ্ঞের সময় শিশুপাল এর শ্রীকৃষ্ণের নিন্দার সময়, শ্রীকৃষ্ণ বিদর্ভরাজ ভীষ্মক এর কন্যা রুক্মিণী কে তার সম্মতিতে হরন পূর্বক বিবাহ করেন। কারন রুক্মিণীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে শিশুপালের সহিত বিবাহ দেওয়া হচ্ছিলো। মহাভারতের সভাপর্বে এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করে শ্রীকৃষ্ণ বলেন,
"এই মুমূর্ষু মূর্খটার রুক্মিণীকে লাভ করিবার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু শুদ্র যেমন বেদবাক্য শুনিতে পারে না, এ মূর্খটারও তেমন রুক্মিণীকে লাভ করিতে পারে নাই। কিন্তু প্রতাপশালী শিশুপাল কৃষ্ণের সেই কথাগুলি শুনিয়া অট্ট হাস্য করিলেন এবং এই কথা বলিলেন।" (মহাভারতঃ সভাপর্ব, অধ্যায় ৪৪, শ্লোক ১৫-১৬)
এরপর শিশুপাল কৃষ্ণকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
"কৃষ্ণ! সভার মধ্যে বিশেষতঃ বাজাদের সমক্ষে রুক্মিণী পূর্বে আমার পরিগৃহীত ছিলেন এইরূপ বলিতে তোমার লজ্জা হইল না কেন? (মহাভারতঃ সভাপর্ব, অধ্যায় ৪৪, শ্লোক ১৮)
" কৃষ্ণ! তুমি ভিন্ন অন্য কোন পুরুষ সভার মধ্যে নিজের স্ত্রীকে অন্যপূর্ব্বা জানিয়া তাহা কীর্ত্তন করিয়া থাকে। (মহাভারতঃ সভাপর্ব, অধ্যায় ৪৪, শ্লোক ১৯)
এখানে আমরা দেখতেই পাচ্ছি, একমাত্র দেবী রুক্মিণী যে একমাত্র শ্রীকৃষ্ণের স্ত্রী, তা শিশুপাল ও শ্রীকৃষ্ণের এই দুইজনের কথনে, শিশুপাল তা নিজেই স্বীকার করেছেন।
এছাড়াও মহাভারতের আরেকটা শ্লোক এ বলা আছে,
"শ্রীকৃষ্ণ নিজের পত্মি রুক্মিণীর সাথে হিমালয়ে ১২ বছরের মহান ঘোর ব্রহ্মচর্য ব্রত ধারন করে তপস্যা করেছিলেন। দুইজনে সনত্ কুমারের ন্যায় তেজস্বী পুত্র প্রদ্যুম্ন নামক পুত্র উৎপন্ন করেছিলেন।" (মহাভারতঃ সৌপ্তিক পর্ব, অধ্যায় ১২, শ্লোক ৩০-৩১)
এই শ্লোক থেকে আমরা দেখতেই পাচ্ছি, শ্রীকৃষ্ণের একমাত্র স্ত্রী ছিলেন রুক্মিণীদেবী, যিনি ছিলেন পরম ধার্মিক, বিদুষী ও পতিব্রতা। সন্তান জন্মদানের পূর্বে তাঁরা উভয়েই বদরিকাশ্রমে যান ও দীর্ঘ বারবছর কঠোর ব্রহ্মচর্য পালন করেন। এরপর রুক্মিণীদেবী এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন যার নাম রাখা হয় প্রদ্যুম্ন।
সুতরাং উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটাই প্রমানিত যে, শ্রীকৃষ্ণের স্ত্রী বলতে ছিলেন একমাত্র স্বয়ং রুক্মিণীদেবী। ১৬,১০৮ টি মেয়ে ও রাধা নিয়ে যা গল্প রয়েছে, তা আজাগুরি অবাস্তব গল্প মাত্র। সেই হেতু রাধা কোন শ্রীকৃষ্ণের মামী নয়, এমনকি প্রেমলীলা তা কোনোদিন ঘটেও নি।
ॐ শ্রী পরমাত্মানে নমঃ
:সংগৃহীত
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏

Bikash sarker

সনাতনীরা দুর্বল নয়

#সততা_যদি_দূর্বলতা_হয়, তবে মনে রেখো অামরা দূর্বল।


✅হ্যাঁ সনাতনী ছেলেরা দূর্বল,
 কারন সনাতনীরা চাচী মামিকে মা মনে করে, যৌনদাসী না।

✅হ্যাঁ সনাতনী ছেলেরা দূর্বল কারন সনাতনীরা মনে করে একের অধিক বউ রাখা মানে নারীদের স্বামীর ভালবাসা ভাগ করা ।

✅হ্যাঁ সনাতনী ছেলেরা দূর্বল কারন, সনাতনীরা বৌমাকে মেয়ের মতই মনে করে, যৌনদাসী না।

✅হ্যাঁ সনাতনী ছেলেরা দূর্বল কারন,
সনাতনীরা কাকাতো, জেঠাতো বোনদের বিয়ে করতে জানে না। ইহা বৈদিক শাস্ত্রে নিষেধ।

✅হ্যাঁ সনাতনী ছেলেরা দূর্বল,
কারন সনাতনী ছেলেরা বৌদি/ভাবীকে দ্বিতীয় মা মনে করে, যৌনদাসী না।

✅হ্যাঁ সনাতনী ছেলেরা দূর্বল কারন, সনাতনী ছেলেরা মেয়েকে ধর্ষণ করতে জানে না।

✅হ্যাঁ সনাতনী ছেলেরা দূর্বল কারন,
সনাতনীদের শাস্ত্রে অাছে ইন্দ্রিয়গুলোকে দমন করতে পারলে যোগী হওয়া যায় অার সেই যোগই অাত্মাকে দিতে পারে মোক্ষের সন্ধান।

✅হ্যাঁ সনাতনী ছেলেরা দূর্বল,
কারন তারা কামকে সবসময় মনে ধারন করে না।
তাইতো কোনদিনও শুনলাম না কোন সনাতনী গরু, ছাগল, পশুকে ধর্ষণ করছে।

এদের সম্বন্ধে যোগেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ গীতায় যথার্থই বলেছেন,

🎇প্রবৃত্তিং চ নিবৃত্তিং চ জনা ন বিদুরাসুরাঃ৷
ন শৌচং নাপি চাচারো ন সত্যং তেষু বিদ্যতে৷।

অর্থ: অসুর স্বভাব ব্যক্তিরা ধর্ম বিষয় প্রবৃত্ত হতে জানে না এবং অধর্ম বিষয় থেকেও নিবৃত্ত হতে জানে না। তাদের শৌচ নেই, সদাচার নেই এবং সত্যও নেই(১৬/৭)

🎇অসত্যমপ্রতিষ্ঠং তে জগদাহুরনীশ্বরম্৷
অপরস্পরসম্ভূতং কিমন্যত্কামহৈতুকম্৷।

অর্থ: অসুর স্বভাব বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বলে এই জগৎ মিথ্যা, অবলম্বনহীন এবং অবিনশ্বর। কামবশত স্ত্রীপুরুষের সংযোগেই এই জগত্ উৎপন্ন হয়েছে এবং কাম ছাড়া অন্য কোন কারণ নেই(১৬/৮)

🎇এতাং দৃষ্টিমবষ্টভ্য নষ্টাত্মানোল্পবুদ্ধয়ঃ৷
প্রভবন্ত্যুগ্রকর্মাণঃ ক্ষয়ায় জগতোহিতাঃ

অর্থ: এই প্রকার সিদ্ধান্ত অবলম্বন করে আত্মতত্তহীন অল্পবুদ্ধি সম্পন্ন উগ্রকর্মা অসুরস্বভাব বিশিষ্ট ব্যক্তিরা জগত্ ধ্বংসকারী কার্যে নিয়োজিত থাকে(গীতা ১৬/৯)
sk roy

শুক্রবার, ১০ জুলাই, ২০২০

জাকির নায়েক ও রবিশঙ্করের তথাকথিত বিতর্কের মূল রহস্যটা আসলে কী ?

জাকির নায়েকের চাপাতি টিভি, চাপাতি টিভি এজন্যই বললাম যে, জাকিরের টিভির নাম তো পিস টিভি, আর পিস মানে শান্তি, কিন্তু মুসলমানরা শান্তি বলতেই তো বোঝে তরোয়াল-চাপাতির মাধ্যমে অর্জিত শান্তি, এজন্যই বললাম চাপাতি টিভি।

এখানে একটা প্রশ্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, ইসলাম মানে যদি শান্তি হয়, তাহলে ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বললে, মুসলমানরা ক্ষেপে যায় কেনো বা চাপাতি দিয়ে কোপাতে চায় কেনো ? কেনো ওরা শান্তি পূর্ণ পদ্ধতিতে আলোচনায় বসে না ? মুসলমানদের রাগ আর সন্ত্রাস কি এটা প্রমান করে যে, ওদের ধর্মের নাম বা ধর্মের বিষয় শান্তি ?

যা হোক, ফিরে যাই মুল আলোচনায়। জাকিরের পিস টিভিতে, রবিশঙ্কর এবং জাকির নায়েকের একটি একটা অনুষ্ঠান খুব ঘটা করে প্রচার করা হতো, যাতে রবিশঙ্কর পরাজিত নয়, বিব্রত হয়। আর এটা নিয়ে মুসলমানরা এটা প্রচার করে বা প্রমান করার চেষ্টা করে যে, যেহেতু রবিশঙ্কর জাকির নায়েকের কাছে পরাজিত হয়েছে, সেহেতু হিন্দুধর্মের চেয়ে ইসলাম শ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং হিন্দুদের উচিত, হিন্দুধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করে ফেলা।

যেসব হিন্দু বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভেবে দেখে নি, তারাও এই সংশয়ে থাকে যে, সত্যিই মনে হয়, ইসলাম, হিন্দুধর্মের চেয়ে শ্রেষ্ঠ, না হলে রবিশঙ্কর জাকির নায়েকের কাছে পরাজিত হলো কেনো ?

প্রত্যেকটি মুসলমানের আজীবনের একটি লালিত স্বপ্ন হলো- কোনো একজন অমুসলিমকে মুসলমান বানানো, তাহলে তারা নাকি বিনা বিচারে বেহেশতে যেতে পারবে। আর বেহেশতে গিয়ে তাদের একমাত্র কাজ হলো ৭২ হুর নিয়ে যৌনলীলায় মেতে থাকা, যদিও মেয়েদের জন্য এরকম কোনো ব্যবস্থা নেই এবং এই একটি কারণেই মুসলমানরা প্রাণপাত করে ইসলাম পালন করে, বোঝেন ইসলাম কত মহান ধর্ম!

যা হোক, জাকিরের এই পিস টিভি খোলার পেছনে উদ্দেশ্যও ছিলো এই এক, ইসলাম প্রচারের আড়ালে ধর্মান্তর করা; এখন যেহেতু ঘাড়ে তলোয়ার ধরে বলার যুগ নাই যে ইসলাম গ্রহণ কর, না হলে মৃত্যু; তাই মুসলমানরা বেছে নিয়েছে ব্রেইন ওয়াশ থিয়োরি, এতে বছরে যদি একজন করেও অমুসলিম ধোকায় প’ড়ে বিভ্রান্ত হ’য়ে, ইসলাম গ্রহন করে, তবুও তো ইসলামের লাভ।

জাকিরের কাজ যেহেতু ভারতীয় উপমহাদেশে এবং এখানকার বেশিরভাগ মানুষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী, তাই জাকিরের টার্গেট হলো হিন্দুরা এবং হিন্দুদের ব্রেইন ওয়াশের জন্য তার থিয়োরি হলো- কল্কি অবতারই মুহম্মদ, বেদ পুরানে আল্লা মুহম্মদের নাম আছে, রবিশঙ্করের ডিবেট, ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি।

“কল্কি অবতার ই মুহম্মদ” এবং “বেদ পুরানে আল্লা মুহম্মদ” বিষয়ে আমার আলাদা দুটি পোস্ট আছে, তাই আজকে শুধু রবিশঙ্করের ডিবেট নিয়েই কথা বলবো।

ভারত এবং ভারতের বাইরে শত শত মানুষ জাকিরকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছে, তাদের সাথে তর্ক বির্তকে বসার জন্য, জাকির তাদের চ্যালেঞ্জ গ্রহন করে নি। কিন্তু কেনো ? তার ভয় কিসের ?
আমি যদি সত্য হই, পৃথিবীর সকল জায়গাতেই আমি নিজেকে সত্য বলে প্রমান করতে পারবো; তাহলে সকলের চ্যালেঞ্জ গ্রহন করতে আমার অসুবিধা কোথায় ? আমি তো আমার অনেক পোস্টে খোলা খুলি এই চ্যালেঞ্জ দিই যে, আমার পোস্টের জবাব কেউ যদি যুক্তিসঙ্গতভাবে দিতে পারে আমি ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয়ে যাবো, কেউ তো আমার চ্যালেঞ্জ গ্রহন করে না। আমি এই চ্যালেঞ্জ দিতে পারি, কারণ, আমি জানি সত্যটা কী এবং তা কোথায় ? তাহলে জাকির, সকলের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে না কেনো ?

অনেকে আমাকে জাকিরের সাথে ডিবেটে যেতে বলে, কিন্তু মুসলমানরা যেহেতু হিংস্র জাতি এবং যেহেতু তারা ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো যুক্তি বোঝে না বা তা মেনে নিতে পারে না বা শুনতেই চায় না, তাই মুসলমানদের সাথে তর্কে জেতা অসম্ভব; যদিও বা আপনি কাউকে তর্কে পরাজিত করেন, সে সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতে, নবীর নামে কটূক্তি করেছে ব’লে আপনার উপর চাপাতি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে বা দল বল নিয়ে এসে আপনার বাড়িতে হামলা করবে বা বাড়ি জ্বালিয়ে দেবে বা গ্রাম জ্বালিয়ে দেবে। ফলে শেষ পর্যন্ত জয় হবে মুসলমানদেরই। তাই মুসলমানদের সাথে ফেস টু ফেস বিতর্কে যাওয়া অসম্ভব; কারণ, আপনি যত বড়ই জ্ঞানী বা শক্তিশালী হোন না কেনো, আপনাকে এটা মাথায় রাখতে হবে যে, একজন মূর্খ মুসলমানের একটি চাপাতির কাছে আপনি অসহায়, যেটা আমি সব সময় মাথায় রাখি।

উপরের এই পদ্ধতির জন্য, ইন্টারনেট আবিষ্কারের আগে পর্যন্ত মুসলমানদের প্রচার ছিলো একতরফা; কারণ, তারা যা বলেছে, তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার কোনো উপায় ছিলো না। শেষ পর্যন্ত ইন্টারনেট এবং ফেসবুক, সেই দুঃসহ অবস্থা থেকে পৃথিবীর মানুষকে মুক্তি দিয়েছে। মুসলমানরা মাঝে মাঝেই ইসলামের বিরুদ্ধে ইহুদি নাসারাদের ষড়যন্ত্রের কথা বলে, যদি ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের কোনো ষড়যন্ত্র থেকেই থাকে, তা হলো এই ইন্টারনেট এবং ফেসবুক আবিষ্কার এবং আমার হিসেবে এটাই হলো ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের সবচেয়ে বড় যড়যন্ত্র; যার মজা এখন মুসলমানরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।

আমি এত ইসলামের বিরুদ্ধে লিখি এবং মুসলমানদের চ্যালেঞ্জ দিই সেগুলোর জবাব দিয়ে আমাকে মুসলমান বানানোর জন্য, কিন্তু এখন পর্যন্ত এক হারামজাদাও আমাকে মুসলমান বানানোর জন্য জবাব দিতে এগিয়ে এলো না, যোগ্য জবাবের পরিবর্তে তারা যা দেয় তা হলো ইনবক্সে বা কমেন্টে গালি গালাজ; যেগুলোকে আমি রাস্তার বেওয়ারিশ কুকুরের ঘেউ ঘেউ বলেই মনে করি এবং যেগুলোকে আমি আমার বাল দিয়েও গুরুত্ব দিই না।

যা হোক, ইউটিউবে একটি ভিডিও পাওয়া যায়, ৫ মিনিটে ২৫ মিথ্যা নামে, এতে জাকির নায়েকের একটি ৫ মিনিটের বক্তব্যে, সে যে ২৫ টি মিথ্যে তত্ত্ব দিয়েছে, সেই পোস্টমর্টেম করা হয়েছে। এরা জাকির নায়েককে ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলো, তাদের সাথে বিতর্ক করার জন্য, কিন্তু জাকির তা গ্রহণ না করায়, তারা ওর ঐ বক্তব্যের পোস্টমর্টেম করে ইউটিউবে ছাড়ে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জাকিরের এত চ্যালেঞ্জকারী থাকতে সবাইকে বাদ দিয়ে জাকির তার টিভিতে রবিশঙ্করক নিয়ে এলো কেনো ? রবিশঙ্কর যে জাকিরকে কোনো দিন চ্যালেঞ্জ করেছিলো, এমন কি কেউ কোনোদিন শুনেছেন ? শুনেন নি। তাহলে পিসটিভিতে রবিশঙ্কর কেনো ?

বাংলাদেশে অনেক ব্যক্তিমালিকানাধীন টিভি চ্যানেল আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত মালিক হচ্ছে, এটিএন বাংলার মালিক মাহফুজুর রহমান। অন্য চ্যানেলগুলোর মালিক কে বা কারা এটা দেশের ৯৫% মানুষ না জানলেও, দেশের ৯৫% মানুষ, যারা নিয়মিত টিভি দেখে, তারা জানে যে, এটিএন বাংলার মালিক মাহফুজুর রহমান। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই মাহফুজুর রহমান, তার চ্যানেলে কি এমন কোনো অনুষ্ঠান দেখাবে, যাতে তার ইমেজ খারাপ হয় ? আপনাদের কমনসেন্স কী বলে, দেখাবে ? দেখাবে না ? তাহলে জাকির নায়েক, তার নিজস্ব টিভি চ্যানেলে এমন কোনো প্রোগ্রাম কেনো দেখাবে, যাতে সে কারো কাছ পরাজিত হয় ?

তাছাড়া পিস টিভিতে বিতর্কমূলক কোনো অনুষ্ঠান কিন্তু লাইভ দেখানো হয় না; তার মানে, এডিট করে, কেটে ছেঁটে সে সব অনুষ্ঠানই দেখানো হয়, যাতে জাকির নায়েকের মান বজায় থাকে এবং সে সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া ই দেখানো হয়, যাতে জাকিরের জবাব যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হয়। পিস টিভিতে রবিশঙ্করের অনুষ্ঠান দেখানো হয়েছে এজন্যই যে, সেই অনুষ্ঠানে রবিশঙ্কর আপাতদৃষ্টিতে পরাজিত হয়েছে, যদি জাকির নায়েক পরাজিত হতো, তাহলে সেটা কি তারা দেখিয়ে ইসলামের বারোটা বাজাতো ? এই ব্যাপারটি পরিষ্কারভাবে বোঝে না বলেই অনেক হিন্দু রবিশঙ্করের ব্যাপারটি নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগে এবং তাদের মনে হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে সন্দেহের সৃষ্টি হয়, হিন্দুদের মনে যে সন্দেহটি সৃষ্টি করা শুধু জাকির নায়েক কেনো, সব মুসলমানদের মরণপণ জিহাদী উদ্দেশ্য।
তাছাড়া, কে এই রবিশঙ্কর ? সে কি হিন্দুদের মনোনীত কোনো ব্যক্তি, যাকে হিন্দুরা জাকিরের সাথে ডিবেট করতে পাঠিয়েছে ? দেখে নিন উইকিপিডিয়াতে তার সম্পর্কে কী বলা হয়েছে ?

“রবি শঙ্কর, যিনি সাধারণত শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর নামে পরিচিত, হলেন ভারতের একজন আধ্যাত্মিক নেতা যিনি ১৩ মে ১৯৫৬ সালে তামিলনাড়ুতে জন্মগ্রহণ করেন। তাকে শ্রী শ্রী উপাধিতে বা গুরুদেব বা গুরুজি নামেও ডাকা হয়। ১৯৮১ সালে তিনি আর্ট অব লিভিং ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন, যার মূল লক্ষ্য হল মানুষের ব্যক্তিগত মনোদৈহিক চাপ, সামাজিক সমস্যা এবং সহিংসতা দূর করা।“

এছাড়াও Art of living পৃথিবীর বৃহত্তম একটি "হিউমেনিটারিয়ান & এডুকেশনাল এনজিও" এর প্রতিষ্ঠাতা রবিশঙ্কর একজন যোগ বিশেষজ্ঞ এবং পতঞ্জলি যোগসূত্র দ্বারা উদ্বুদ্ধ একজন দার্শনিক নেতা। বজ্রাসন ও সুখাসন এর মাধ্যমে কৃত সূদর্শন ক্রিয়া এর একজন অনন্য পরিচালক তিনি যার মাধ্যমে তিনি পৃথিবীতে বিদ্যমান হানাহানি ও মূল্যবোধের অবক্ষয় এর অবসান ঘটাতে চান। তিনি কখনোই একজন হিন্দুধর্ম বিশারদ নন এবং একজন বেদজ্ঞানী তো নন বটেই!

যার উদ্দেশ্যই হলো পৃথিবীর হানাহানি বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা, সে যাবে জাকিরের সাথে তর্ক বিতর্ক করতে! যেখানে তর্ক বিতর্কই হলো সকল অশান্তির মূল ? এছাড়াও এই তথ্যগুলো থেকে কি এটা প্রমান হচ্ছে যে, তিনি হিন্দুদের কোনো ধর্মগুরু ? তাহলে তার জয় বা পরাজয় নিয়ে হিন্দুদের এত মনোব্যথার কী আছে ?

এবার দেখুন, কোন প্রেক্ষাপটে জাকিরের পিস টিভি সেই ভিডিওটি তৈরি করেছিলো ?
রবিশঙ্কর যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলো, সেটা ছিলো "Concept of GOD in Hinduism & Islam" শীর্ষক একটি আলোচনা সভা, এটা মোটেই পূর্ব ঘোষিত কোনো বিতর্ক সভা নয়। রবিশঙ্কর সেখানে গিয়েছিলেন নিজে থেকেই কোনো হিন্দু ধর্মীয় সংগঠন বা হিন্দুদের পক্ষ থেকে নয়। কিন্তু ধূর্ত জাকির পুর্ব প্রস্তুতি অনুযায়ী সেখানে কাদিয়ানী লেখক মাওলানা আব্দুল্লা হক বিদ্যার্থীর বই থেকে হুবহু তোতা পাখির মতো কিছু মুখস্ত উদ্ধৃতি দেয় যে পবিত্র বেদ এ মোহাম্মদ এর কথা বলা আছে এবং ভবিষ্য পুরানেও মোহাম্মদ এর কথা বলা আছে। একজন ব্যক্তি যিনি কোনো বিতর্কের জন্য প্রস্তুত হয়ে যান নি বা তার সেই বিষয় নিয়ে বিতর্ক করার ইচ্ছা আছে কিনা সেটাও সন্দেহ, তাকে হঠাৎ করে বেদের খুঁটি নাটি বিষয়ে প্রশ্ন করলে সে বিব্রত হবে না তো কী হবে ?

ধান্ধাবাজ জাকিরের এই ভিডিও নিয়ে মুসলমানরা জোর গলায় বলে,

“জাকির নায়েক তো হিন্দুদের গুরু শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর এর সাথে বিতর্ক করেছে এবং জয়লাভ করেছে। রবিশঙ্কর তো আপনাদের চেয়ে বেশী জানেন। উনি যখন জাকির নায়েকের ভূল দেখাতে পারেনি তো আপনারা কে ?”

জাকির নায়েক, রবিশঙ্করের সাথে কী ধরণের তর্ক বিতর্ক করেছে এবং কোন সিচুয়েশনে করেছে, আশা করছি, উপরের বর্ণণায় তা বুঝতে পেরেছেন, তাই এটা নিয়ে আর বলার কিছু নেই।

এরপর মুসলমানদের তথ্য হলো-

“রবিশঙ্কর তো আপনাদের চেয়ে বেশি জানেন।”

রবিশঙ্কর কতটা জানে, সেটা আপনারা সার্টিফিকেট দিচ্ছেন কেনো ? আপনাদের কী মনে হয়, আমি ইসলাম ও হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে কম জানি ? আপনারা আমার কথার জবাব গালিগালাজ ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় দেন না কেনো ? ক্ষমতা থাকলে আমার বিরুদ্ধে কলম ধরেন।

মুসলমানদের আরো প্রশ্ন হলো, রবিশঙ্কর যখন জাকির নায়েকের ভূল দেখাতে পারেনি তো আপনারা কে ?”

রবিশঙ্কর কি জাকির নায়েকের ভুল ধরে তার সা্থে ঝাগড়া করতে গিয়েছিলো যে রবিশঙ্কর জাকির নায়েকের ভুল ধরবে ?

এছাড়াও মুসলমানদের প্রশ্ন হলো- “জাকির যদি ভুলই হয় তবে হিন্দুধর্মীয় নেতারা তাকে ধরিয়ে দিচ্ছে না কেন ?”

পিস টিভি যখন রবিশঙ্করের এই ভিডিও প্রচার করে, তখন সবাই বুঝতে পারে যে, শান্তিবাদী রবিশঙ্করকে জাকির ফাঁসিয়েছে। এরপর বেদ নিয়ে প্রকৃত বিতর্কের জন্য বিখ্যাত বৈদিক সংগঠন আর্যসমাজ এর পক্ষ থেকে পর পর তিন বার অফিসিয়ালি ইমেইল এর মাধ্যমে IRF এর জাকির নায়েককে বিতর্কের জন্য আহবান জানানো হয়। কিন্তু ভীত ও ধূর্ত নায়েক জানেন যে বিখ্যাত বেদ গবেষনা সংগঠন আর্যসমাজের পন্ডিতগন, যাদের বেদ এর প্রতিটি অক্ষর পর্যন্ত মুখস্থ, তাঁদের সামনে বেদ নিয়ে অপপ্রচার চালানো সম্ভব হবে না, তাই সে কোনো সারা দেয় নি। শেষ পর্যন্ত চতুর্থবার বিতর্কের চ্যলেঞ্জ জানানোর পর IRF এর পক্ষ থেকে মাওলানা আব্দুল্লাহ তারিক কে পাঠানো হয় বিতর্কে অংশগ্রহনের জন্য। তখন আর্য সমাজের পন্ডিত মাহেন্দ্র পাল আর্য, যিনি নিজেও ৩০ বছর আগে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দুধর্মে ধর্মান্তরিত হন, আব্দুল্লাহ তারিককে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন। কিন্তু এই বিতর্কটি কি জাকির তার পিস টিভিতে দেখিয়েছ ?
এছাড়াও কথা হল IRF এর অনুষ্ঠানসমূহে জাকির যখন হিন্দুধর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন দাবী করেন তখন সেখানে কোন হিন্দুশাস্ত্রবিশারদদের আমন্ত্রন জানানো হয়না কেন ? ইসলামের আবির্ভাবের পর থেকে মুসলমানরা তো সব সময় ফাঁকা মাঠেই গোল দিতে অভ্যস্থ, জাকির সেখান থেকে বের হবে কিভাবে ? জাকিরের যদি সেই সৎসাহস থাকতো বা তার ইসলাম নিয়ে এত আত্মবিশ্বাস থাকতো, তাহলে তার, সকলের চ্যালেঞ্জ গ্রহন করার মতো সৎ সাহস থাকতো।

জাকিরের আরেকটি ভন্ডামীর কথা জেনে রাখেন, তার অনুষ্ঠানে, যে সব লোক ধর্মান্তরিত হতো, সেগুলো সবই ছিলো সাজানো নাটক। জাকিরের পিস টিভি বন্ধ হওয়ার পর তার ব্যক্তিগত ড্রাইভারের কাছ থেকে জানা গেছে এই তথ্য।

শেষের দিকে এসে আরেকটি তথ্য আলোচনা না করেই পারছি না- জাকির, রবিশঙ্করকে যে অনুষ্ঠানে হাজির করেছিলো, তার নাম দিয়েছিলো, "Concept of GOD in Hinduism & Islam"। এখানে খেয়াল করবেন, হিন্দুধর্ম বোঝাতে Hinduism শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। যে সব হিন্দুর “ism” শব্দের মানে জানা নেই, তারা হয়তো বলবেন যে, কেনো এখানে সমস্যাটা কী ? কিন্তু এর মানে বোঝার পর জানতে পারবেন যে, আসলে এর পেছনের গভীর ষড়যন্ত্রটা কী এবং কোথায় ?

‘ইজম’ মানে হলো ব্যক্তিগত মতবাদ, যখন কোনো ব্যক্তি কোনো মতবাদ দেয়, সেই মতবাদ বোঝাতে তার নামের শেষে ইজম ব্যবহার করা হয়, যেমন কার্ল মার্ক্স এর মতবাদের নাম মার্ক্সিজম= মার্ক্স+ইজম। কিন্তু হিন্দু ধর্ম কি কোনো একজনের ব্যক্তিগত মতবাদ, যে জাকির হিন্দু শব্দের সাথে ইজম লাগিয়েছে ? আর হিন্দু কি কোনো একজন ব্যক্তির নাম যে, এর সাথে ইজম যুক্ত হবে ? এই হিন্দুইজম শব্দটি শুধু প্রয়োগের দিক থেকেই ভুল নয়, গঠনের দিক থেকেও ভুল। কিন্তু এখানে জাকিরের উদ্দেশ্য ছিলো হিন্দু ধর্মের বিশালত্বকে ইজম শব্দের মাধ্যমে একটি ক্ষুদ্র গণ্ডীর মধ্যে নিয়ে আসা, ষড়যন্ত্রটা এখানেই। হিন্দুধর্ম বোঝাতে হিন্দু শব্দের সাথে কখনো ইজম শব্দ যুক্ত হবে না; কারণ, হিন্দুধর্ম কোনো একজন ব্যক্তির ইচ্ছা অনিচ্ছার ফল নয়, যেমন একজন ব্যক্তির ইচ্ছা অনিচ্ছার ফল হলো- ইসলাম, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধসহ সকল ব্যক্তিগত ধর্ম, যদিও এগুলোকে এখন ধর্ম বলে চালানো হচ্ছে, আসলে এগুলো ধর্ম নয়, এগুলো এক একটি ব্যক্তিগত মতবাদ।

প্রকৃতির সৃষ্টি যে কোনো কিছুর ধর্ম থাকে, যেমন- ধর্ম আছে আগুন, জল বা লোহার। মানুষ এগুলোর ধর্ম বানাতেও পারে না আবার তার পরিবর্তনও করতে পারে না। ধর্ম বানানো তাই প্রকৃতি নামক ঈশ্বরের কাজ, কোনো মানুষের কাজ নয়। এই সূত্রে প্রকৃতির বিধিবদ্ধ নিয়মের নির্যাস হিসেবে পৃথিবীর মানুষের জন্য একমাত্র ধর্ম হলো সনাতন মানবধর্ম, আর বাকিগুলো কোনো ধর্ম নয়, ওগুলো ব্যক্তিগত মতবাদ।

যা হোক, জাকির ও রবিশঙ্কর প্রসঙ্গে শেষ কথা হলো- জাকিরের সাথে রবিশঙ্করের বিতর্ক বলে যা প্রচার করা হয়, সেটা যে আসলে বিতর্ক নয়, ধান্ধাবাজ জাকির কোম্পানির কৌশলে তোলা আলোচনা চক্রের একটি ভিডিও মাত্র, যাতে অপ্রস্তুত অবস্থায় রবিশঙ্করকে বেদ থেকে কিছু প্রশ্ন করে বিব্রত করা হয়েছে এবং রবিশঙ্কর হিন্দুদের যে কোনো ধর্মগুরুও নয়, বাবা রামদেব এর মতো একজন যোগসাধক মাত্র, তাই জাকিরের সাথে রবিশঙ্করের তথাকথিত পরাজিত হওয়া, আসলে যা পরাজিত হওয়া নয়- আশা করছি সেই সম্পর্কে আমার বন্ধুদের কাছে প্রকৃত সত্যটা উদঘাটন করতে পেরেছি।

জয় হিন্দ।
জয় হোক সনাতনের।।
 from Jorder Boney

মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০

বেদে মন্ত্র

ঋচো অক্ষরে পরমে ব্যোমন্ যস্মিন্দেবা অধিবিশ্বে নিষেদুঃ।
যস্তন্ন বেদ কিমৃচা করিষ্যতি য ইত্তদ্বিদুস্ত ইমে সমাসতে।।
ঋগ্বেদ-- ( ১/১৬৪/৩৯)
বঙ্গানুবাদঃ-- যে বেদ প্রতিপাদিত, নাশ রহিত, সর্বোৎকৃষ্ট, সর্ব ব্যাপক ব্রহ্মে পৃথিবী সূর্যাদি লোক লোকান্তর আধেয় রূপে স্থিত রহিয়াছে সেই পরব্রহ্মকে যিনি জানেন না তিনি চারিবেদ দ্বারা কি করিবেন?
যিনি সেই পরব্রহ্মকে জানেন তিনি ব্রহ্মে স্থিতি লাভ করেন।

বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২০

মুসলিমের চুলকানির জবাব

❌জাকের নায়েকের মিথ্যা যুক্তি,,,
বেদে কি মূর্তি পূজা নিষিদ্ধ?
জাকের নায়েক রেফারেন্স দিল,,👇👇
হিন্দু ধর্মে মূর্তি পূজা নিষিদ্ধ। রেফারেন্স সহ প্রমান দিলামঃ
====================================
❌১. না তাস্তে প্রাতীমা আস্থি ( রীগ বেদ ৩২ অধ্যায় ৩ নং অনুচ্ছেদ )
অর্থাৎ ঈশ্বরের কোন প্রতি মূর্তি নেই,ছবি নেই,গ্রাফিকস নেই,ভাস্কর্য নেই,বিগ্রহ নেই
✅জবাব: প্রতিমা এটি সঙ্কাকৃত ভাষা
সংস্কৃতে প্রতিমা শব্দের" প্ৰতিম" 
আ প্রত্যই যোগে নিষ্পন্ন,। প্রতিম শব্দের অর্থ অতুলনীয়,,
প্রতিম শব্দ থেকেই প্রতিমা শব্দটি এসেছে,,
ন তস্য প্রতিমা অস্তি
অর্থ: তার কোনো তুলনা নেই
আরো ভেঙে বললে হয় তার তুল্য কেউ নেই,,,
জাকের নায়েক ওখানে ভুল অর্থ দেখিয়েছে,,
বাংলা বা হিন্দি গ্রামার দেখেন সেখানে পাবেন প্রতিমা সংস্কৃত ভাষা ,,যার বাংলা আভিধানিক অর্থ বুঝায় মূর্তি বা বিগ্রহ,
এখানে বাংলা গ্রামার কি দেখালো সেটা না দেখে সংস্কৃত ভাষায় প্রতিমা কি অর্থে ব্যবহূত হয়েছে সেটাই আমাদের নিতে হবে,,,
যেমন কোটি এটা সংস্কৃত ভাষা ,,এর অর্থ প্রকার
কিন্তু বাংলায় কোটি একটা সংখ্যা জাতীয়
বাংলা আর সংস্কৃত এক নই এখানে,,
✅দেব দেবীদের মূর্তি বলে সম্বোধন করা মূর্খের পরিচয়,,
যুক্তি: 1_ বেদ বলে জিব দেহ আগুন,জল,বাতাস, মাটি দ্বারা তৈরী,
কুরআন ও তাই বলে,,,
বিজ্ঞান দ্বারা ও এখন এটা প্রমাণিত,,
তাহলে মানব দেহ জল,মাটি,বাতাস অগ্নি দ্বারা তৈরি,
তাহলে দেব দেবীর বিগ্রহ কে যদি মূর্তি বলে ডাকা হয়,,
তাহলে মানুষকেও মূর্তি বলে ডাকবেন,,বিজ্ঞান বলছে জিব মাটি দ্বারা তৈরী
মানুষকে জল বলে ডাকবেন,,বিজ্ঞান বলছে জিব জল দ্বারা তৈরি
মানুষকে বাতাস বলে ডাকুন,,,বিজ্ঞান বলছে জিব বাতাস দ্বারা তৈরী,,
✅এখন এখানে যেমন মানুষকে মাটি,জল ,বাতাস নামে সম্বোধন করা বোকামি
ঠিক তেমনি দেব দেবীর মূর্তি কে শুধু মূর্তি বলে সম্বোধন বলে ঢাকা বোকামি,,
শুধু মূর্তি বলতে অনেক কিছুই বুঝায়,,
কিন্তু এখানে যদি দেব দেবীর মূর্তি বলে ঢাকেন ,
তাহলে এখানে আমরা স্পষ্ট যে দেব দেবিকেই সম্বোধন করা হয়েছে,,,,
যুক্তি :2_ How are you?
এখানে how এর 3টা অর্থ,,
কেমন ,কত ,কিভাবে
কিন্তু এখন যদি কোন মূর্খ অর্থাৎ ইংরেজি গ্রামার ই জানে না
তার পক্ষে বলা টা স্বাভাবিক,
How are you= তুমি কত আছ?😦 
ইতিহাস টা এখন বুঝে নিন,,😎
❌২. যারা নিজের বিবেক বুদ্ধি হারিয়েছে তাঁরাই মূর্তি পূজা করে ( ভগবৎ গীতা অধ্যায় ৭, অনুচ্ছেদ ২০ নম্বর ) ।
রেফারেন্স সহ দিলাম ।
জবাব : মূর্তি কি আর দেব দেবীর মূর্তি কি সেটা তো বললাম ই,,,👈
✅রেফারেন্স দেখি কি বলে
কামৈস্তৈস্তৈর্হৃতজ্ঞানাঃ প্রপদ্যন্তেন্যদেবতাঃ৷
তং তং নিয়মমাস্থায় প্রকৃত্যা নিয়তাঃ স্বয়া৷৷২০
অর্থ: যাদের মন জড়-কামনা বাসনা দ্বারা বিকৃত তারা দেব-দেবীর শরণাগত হয়ে এবং তাদের স্বীয় স্বভাব অনুসারে নিয়ম পালন করে দেবতাদের উপাসনা করে।
গীতা:7/20
মুসলিমদের রেফারেন্স টা দেখেন এখন,,কিভাবে মিথ্যা বলে সাধারণ মানুষদের ব্রেন ওয়াশ করাচ্ছে,,
জোড়,বাসনা,কামনা দ্বারা কি বুঝি আমরা?
আমার মন চায় ব্যবসায় অনেক লাভবান হওয়া,,
তাই আমি গণেশ দেবতার পূজা করবো,,এটাই আমার কামনা ,বাসনা
জ্ঞান ,বিদ্যায় আমি আরো এগিয়ে যেতে চাই,,তাই আমি স্বরস্বতি দেবীর পূজা করবো এটাই আমার জোর,বাসনা কামনা,,✅
তো মুসলিমদের রেফারেন্স টা দেখেন,,আর আমার টা দেখেন কোথায় বলা আছে বিবেক বুদ্ধি হারিয়েছে কথাটা🤔
✅ আমি জড় এবং চেতন জগতের সবকিছুর উৎস। সবকিছু আমার থেকে প্রবর্তিত হয়। সেই তত্ত্ব অবগত হয়ে যারা শুদ্ধ ভক্তি সহকারে আমার ভজনা করেন তারাই যথার্থ তত্ত্ব জ্ঞানী।
গীতা:::10/8
❌৩. হিন্দুরা অনেক দেব দেবির পুজা করলেও হিন্দু ধর্ম গ্রন্থ গুলোতে হিন্দুদের কেবল মাত্র এক জন ইশ্বরের উপাসনা করতে বলা হয়েছে॥
বেদের ‘ব্রহ্ম সুত্র’ তে আছে “একম ব্রহ্মা দ্বৈত্য নাস্তি নহিনা নাস্তি কিঞ্চন” অর্থাৎ ইশ্বর এক তার মত কেউ নেই কেউ নেই সামান্যও নেই । আরও আছে “সে একজন তারই উপাসনা কর” (ঋকবেদ ২;৪৫;১৬)।
“একম এবম অদ্বৈত্তম” অর্থাৎ সে একজন তাঁর মত আর দ্বিতীয় কেউ নেই (ঋকবেদ ১;২;৩) ।
“এক জনেই বিশ্বের প্রভু” (ঋকবেদ ১০;১২১;৩) ।
জবাব: যথার্থ বলেছেন,,আমরা এক ঈশ্বর কেই উপাসনা করি,,
আমরা একেশ্বরবাদী,,,বহু ঈশ্বরবাদী না🙂
নিরাকার রূপে তিনি ঈশ্বর 
সাকার রূপে তিনি দেব দেবী✌️
❌৪. হিন্দু ধর্মে মুর্তি পুজা করতে নিষেধ করা হয়েছে॥
ভগবত গীতা – অধ্যায় ৭ – স্তব ২০ - [ যাদের বোধশক্তি পার্থিব আকাঙক্ষার মাধ্যমে বিলুপ্ত হয়ে গেছে শুধু তারাই উপদেবতার নিকটে উপাসনা করে। ]
জবাব:: এক রেফারেন্স আর কতবার ,ভিন্ন বাংলা অর্থ দিয়ে বুঝাবেন,,
উপরে যেয়ে দেখুন,,🤟7/20
❌৫. ভগবত গীতা – অধ্যায় ১০ – স্তব ৩ -
[ তারা হচ্ছে বস্তুবাদি লোক ,তারা উপদেবতার উপাসনা করে ,তাই তারা সত্যিকার স্রস্টার উপাসনা করে না।]
জবাব:: উক্ত রেফারেন্স এ গেছি,,কিন্তু যাইয়া দেখি অন্য কিছু,,,,,
যো মামজমনাদিং চবেত্তি লোকমহেশ্বরম্৷ 
অসম্মূঢ়ঃ স মর্ত্যেষু সর্বপাপৈঃ প্রমুচ্যতে৷৷৩
অর্থ: যিনি আমাকে আদিহীন জন্মরহিত ও সর্বলোকের মহেশ্বর বলে জানেন, মানুষের মধ্যে তিনিই মোহশুন্য হন এবং সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হন।
গীতা:10/3
৬. যজুর্বেদ – অধ্যায় ৪০- অনুচ্ছেদ ৯ –
[ অন্ধতম প্রভিশান্তি ইয়ে অশম্ভুতি মুপাস্তে – যারা অশম্ভুতির পুজা করে তারা অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। তারা অধিকতর অন্ধকারে পতিত হয় শাম মুর্তির পুজা করে । অশম্ভুতি হল – প্রাকৃতিক বস্তু যেমন- বাতাস,পানি,আগুন । শাম মুর্তি হল – মানুষের তৈরী বস্তু যেমন - চেয়ার ,টেবিল ,মূর্তি ইত্যাদি।
জবাব:: হিন্দুরা বাতাস ,,আগুন,পানি কে পূজা করে না,
তবে এখানে আগুন আর পানি পূজার উপকরণ হিসেবে ব্যবহূত হয়,,
আগুন,আর পানি কে পূজা করা হয় না,,✌️
আর মানুষের তৈরী চেয়ার ,টেবিল খাট,মূর্তি ,
কিছু বলার আছে🤟??
তো প্রমাণিত: বেদ বলে নাই যে দেব দেবীর পূজা নিষিদ্ধ,,
জাকের নায়েক এর বেশির ভাগ লেকচারের উপরের রেফারেন্স গুলি থাকতো,,তার উদ্দেশ্য অমুসলিমদের 
কোরআনের দিকে ধাবিত করা,,
from:Arya Msd

বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০২০

কৃষ্ণ পুজা কি তামসিক?

কাউন্টার
কিছু অার্য নামক অনার্যরা পৌরনিক দের পিছনে লাগতে গিয়ে গীতাকে অমান্য করে আসুন
দেখি তাদের ধারনা কতটুকু

গীতা ৪র্থ অধ্যায়ে আমরা দেখতে
পাই
শ্লোক:1:
শ্রীভগবানুবাচ
ইমং বিবস্বতে যোগং প্রোক্তবানহমব্যয়ম্ ।
বিবস্বান্মনবে প্রাহ মনুরিক্ষ্বাকবেহব্রবীৎ ।।১।।
অনুবাদ : পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন- আমি পূর্বে সূর্যদেব বিবশ্বানকে এই অব্যয় নিষ্কাম কর্মসাধ্য জ্ঞানযোগ বলেছিলাম। সূর্য তা মানবজাতির জনক মনুকে বলেছিলেন এবং মনু তা ইক্ষ্বাকুকে বলেছিলেন।

এই শ্লোকের দ্বারা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যে জ্ঞানের কথা অর্জুন কে বলেছেন তা তিনি বহু আগে সূর্যদেব কে বলেছেন

এখন প্রশ্ন হতে পারে যে কৃষ্ণ কি করে সূর্যদেবকে বহু গোপনীয় জ্ঞান দিলেন। কারন সূর্যদেবের জন্ম  বহু আগে।
এই প্রশ্নই  অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে করেছিলেন
এখন দেখি তার উত্তর
শ্লোক:5:
ভগবান উবাচ
বহূনি মে ব্যতীতানি জন্মানি তব চার্জুন ।
তান্যহং বেদ সর্বাণি ন ত্বং বেত্থ পরন্তপ ।।৫।।
অনুবাদঃ পরমেশ্বর ভগবান বললেন- হে পরন্তপ অর্জুন ! আমার ও তোমার বহু জন্ম অতীত হয়েছে ৷ আমি সেই সমস্ত জন্মের কথা স্মরণ করতে পারি, কিন্তু তুমি পার না।

এখানে শ্রীকৃষ্ণ স্বীকার করেছেন যে তার জন্ম হয়েছে।কিন্তু সাধারন ভাবে না কারন সাধারন মনুষ্যরা কখনো তাদের জন্মের কথা মনে করতে পারেন না।
এখন দেখি কৃষ্ণ কিভাবে দেহ ধারন করেন।
শ্লোক:6:
অজোহপি সন্নব্যয়াত্মা ভূতানামীশ্বরোহপি সন্ ।
প্রকৃতিং স্বামধিষ্ঠায় সম্ভবাম্যাত্মমায়য়া

অনুবাদ : যদিও আমি জন্মরহিত এবং আমার চিন্ময় দেহ অব্যয় এবং যদিও আমি সর্বভূতের ঈশ্বর, তবুও আমার অন্তরঙ্গা শক্তিকে আশ্রয় করে আমি আমার আদি চিন্ময় রূপে যুগে যুগে অবতীর্ণ হই।

অর্থাত শ্রীকৃষ্ণ তার মায়া শক্তি দ্বারা জন্ম ধারন করে অবতীর্ণ হন।
এখন কোনো  সাধারন মনুষ্য কি 
এরুপ মায়া শক্তি ব্যবহার করতে পারে সেই সব আর্য নাম অনার্য কাছে আমার প্রশ্ন রয়ে গেল।
আসুন তার (কৃষ্ণ) অবতরনের 
কারন জেনে নিই

শ্লোকঃ 7-8
যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত ।
অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্ ।।৭।।
পরিত্রাণায় সাধূনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্।
ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।।৮//

অনুবাদ : হে ভারত ! যখনই ধর্মের অধঃপতন হয় এবং অধর্মের অভ্যূত্থান হয়, তখন 
সাধুদের পরিত্রাণ করার জন্য এবং দুষ্কৃতকারীদের বিনাশ করার জন্য এবং ধর্ম সংস্থাপনের জন্য আমি যুগে যুগে অবতীর্ণ হই।
 
এখন বোঝাগেল কৃষ্ণ কোন প্রেত৷ বা পিশাচ নই বা কোনো সাধারন মনুষ্য নই।
আর তাকে পুজা করবার জন্য শ্রীকৃষ্ণ  কি বলেছেন?  আসুন দেখে নিই

শ্লোকঃ 65
মন্মনা ভব মদ্ভক্তো মদযাজী মাং নমস্কুরু।
মামেবৈষ্যসি সত্যং তে প্রতিজানে প্রিয়োহসি মে।।৬৫।।.
 
অনুবাদঃ তুমি আমাতে চিত্ত অর্পণ কর আমাকে পুজা কর আমাকে নমষ্কার কর। তাহা হলে
তুমি আমাকে প্রাপ্ত হবে। যেহেতু 
তুমি আমার অতন্ত্য প্রিয়।

অতএব কৃষ্ণ পুজা কখনো তামসিক না। 

তাছারা গীতা ৪/১৫ তে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেনপ্রাচীনকালে সমস্ত মুক্ত পুরুষেরা আমার অপ্রাকৃত তত্ত্ব অবগত হয়ে কর্ম করেছেন। অতএব তুমিও সেই প্রাচীন মহাজনদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তোমার কর্তব্য সম্পাদন কর।

অতএব এটা সম্পুর্ণ মিথ্যা যে কৃষ্ণ পুজা তামসিক।

বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ, ২০২০

বেদ বাণী

#পবিত্র_বেদ_বাণী :
ওঁ ভূর্ভুব স্বঃ ,
তৎ সবিতুর্বরেণ্যমং ,
ভর্গো দেবস্য ধীমহি ।
ধিয়ো যো নঃ প্রচোদয়াৎ ।। ওঁ ।।
অর্থঃ যিনি ত্রিলোক স্রষ্টা সমগ বিশ্ব জগতের প্রসবিতা, সেই সচ্চিদানন্দ পরব্রহ্মের বরণীয় জ্যোতিকে আমরা ধ্যান করি তিনি আমাদের মন ও বুদ্ধিকে শুভ কার্য, প্রেরণা দান করুন ।
ওঁ সংগচ্ছধ্বং সং বদধ্বং সং বো মনাংসি জানতাম্ ।
দেবা ভাগং যথা পূর্বে সঞ্জানানা উপাসতে ।। [ ঋগ্বেদ-১০/১৯১/২ ]
হে মনুষ্য , তোমরা সকলে একসঙ্গে চল , এক সঙ্গে মিলিয়া আলোচনা কর, তোমদের মন –উত্তম সংস্কারযুক্ত হউক । পূর্বকালীন জ্ঞানী পুরুষেরা যেরুপ সম্মিলিত হয়ে কর্তব্য কর্ম সম্পাদন করিয়াছেন তোমরাও সেরুপ কর ।
ওঁ সমানো মন্ত্রঃ সমিতিঃ সমানী সমানং মনঃ সহ চিত্তমেষাম ।
সমানং মন্ত্রমভিমন্ত্রয়ে বঃ সমানেন বো হবিষা জুহোমি ।। [ ঋগ্বেদ-১০/১৯১/৩ ]
তোমাদের সকলের মত এক হউক, মিলনভূমি এক হউক , মন এক হউক, সকলের চিত্ত সম্মিলিত হউক,তোমাদের সকলকে একই মন্ত্রে সংযুক্ত করিতেছি , তোমাদের সকলেল জন্য অন্ন ও উপভোগ একই প্রকারের প্রদান করিতেছি ।
ওঁ সমানী ব আকৃতিঃ সমানা হৃদয়ানি বঃ ।
সমানমস্তু বো মনো যথা বঃ সুসহাসতি ।। [ ঋগ্বেদ-১০/১৯১/৪ ]
তোমাদের সকলের লক্ষ্য সমান হউক । তোমাদের সকলের হৃদয় সমান হউক । তোমাদের সকলের মন এক হউক , তোমাদের সকলের সুন্দর ঐক্য যাহাতে হয় সেইরূপ হউক । এইভাবে তোমাদের সকলের শক্তি বৃদ্ধি প্রাপ্ত হউক ।
copy: Niranjun Kumer Niranjun Kumer

শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

বেদের বৈজ্ঞানিক সতত্বতা




বেদ এর তথাকথিত বৈজ্ঞানিক ভুলের কাপড় খোলা জবাব :
ফটো হিসেবে এক হুর লোভী বান্দা, মানে মুমিনের যে স্ট্যাটাসটি পোস্ট করেছি, তার জবাব দেওয়াই আমার এই প্রবন্ধের উদ্দেশ্য, তাই কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক-
শুরুতেই সে লিখেছে, "আচ্ছা ঈশ্বর নিশ্চই স্বর্ব জ্ঞানী। তাহলে তো ঈশ্বর কখনো ভুল করতে পারেনা তাইনা ? কিন্তু চারটা বেদ গ্রন্থের বঙ্গানুবাদ পড়তে গিয়েই বিধিবাম!!বেদে তো দেখছি ভুলের ছড়াছড়ি। বিশ্বাস হচ্ছেনা আমার কথা? তবে দেখুন”
- এর কথা শুনে মনে হচ্ছে, এ বেদ বিষয়ে এক মহাপণ্ডিত, যে চারটা বেদ পড়ে ফেলেছে এবং তাতে ভুলের ছড়াছড়ি দেখতে পেয়েছে ! কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, যে এই স্ট্যাটাসটা পোস্ট করেছে, সে কোনোদিন বেদ চোখে দেখেছে কিনা আমার সন্দেহ; কারণ, এই একই স্ট্যাটাস আমি আরো অনেক জায়গায় অনেকের নামে দেখেছি, তাই যারা বা যে এই স্ট্যাটাসটা পোস্ট করে, তারা জাস্ট কপি পেস্ট করে মাত্র।
এরপর মুমিন লিখেছে, “ সাভাবিক চোখে আকাশকে একটি শক্ত ঢাকনা বা আবরনের মত দেখায় যা আমাদের মাথার উপরে বিরাজ করে। বেদের লেখক এই ভ্রম দিয়েই লিখল অথর্ব্বেদ ১১/৩/১১ এ, “প্রথিবী হচ্ছে চাল সিদ্ধ করার কড়াই আর আকাশ তার ঢাকনা“ এখানে রুপক কিছু বলা হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।”
- এখানে রূপক কিছু বলা হয়েছে কি না, তা না জেনেই তুই করতে গেলি বেদ এর সমালোচনা এবং তাতে ভুলের ছড়াছড়ি দেখতে পেলি ? আর নিজের এই অজ্ঞানতা নিয়ে বুঝতে পারলি বেদ এর লেখকদের ভ্রম! আমি তো মাঝে মাঝে অবাক হই এটা ভেবে যে, যারা এক প্যারা বাংলা শুদ্ধভাবে লিখতে পারে না, তারা কোন সাহসে যায় বেদ এর মতো মহান জ্ঞানের সমালোচনা করতে এবং তার মধ্যে ভুলও দেখতে পায়! এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, এই মুমিনের স্ট্যাটাস যেভাবে পেয়েছি, সেভাবেই আমি কপি পেস্ট করে তার সমালোচনা করছি, যার একটি ফটোরূপও আপনারা ফটোপোস্ট হিসেবে দেখতে পাচ্ছেন, সুতরাং মুমিনের স্ট্যাটাসের ভুল বানান বা ভুল বাক্যের জন্য সম্পূর্ণভাবে মুমিনের মূর্খতা ই দায়ী।
যা হোক, মুমিন এখানে অথর্ববেদের যে মন্ত্রটির কথা উল্লেখ করেছে, সেখানে যা বলা হয়েছে, সেটা তো মুমিনই উল্লেখ করেছে, আমি তা শুধু উপরে কপি পেস্ট করেছি মাত্র, এখন আমি শুধু এটা দেখাচ্ছি যে, আসলেই সেটা রূপক অর্থে বলা হয়েছে কি না ।
মুসলমানরা অথর্ববেদের ১১/৩/১১ নং মন্ত্রে যে ভুল দেখতে পেয়েছে, এই ধরণের ভুল তারা পুরো মন্ত্রেই দেখতে পেতো, যদি তারা বেদ খুলে মন্ত্রটি পড়তো। কিন্তু তারা বেদ পড়তে যাবে কেনো, যারা বাংলায় কোরান হাদিস ই পড়ে না, তারা আবার পড়বে বেদ ! যা হোক, এই মন্ত্রটি যে একটি সিম্বলিক মন্ত্র, সে কথা মন্ত্রের শুরুতেই বলা আছে ড. তুলসীরাম অনুবাদিত বেদে, কিন্তু যে কথা বলা হয় নি হরফ প্রকাশনী অনুদিত বেদে, হরফের বেদে অথর্ববেদের মন্ত্রগুলো সাজানোতেও সমস্যা আছে, ১১/৩/১১ রেফারেন্স ধরে হরফের অথর্ববেদ থেকে কেউ এই মন্ত্রটি বেরই করতে পারবে না, কিন্তু আমি বলে দিচ্ছি হরফের বেদে এই মন্ত্রটি আছে ২৪০/২৪১ পৃষ্ঠায়। এই মন্ত্রটি যে পুরোটাই প্রতীকী এবং সাধারণ দৃষ্টিতে যে এই সূক্তের মন্ত্রগুলো একেবারেই ভুল বলে মনে হবে, সেটা এই সূক্তের মন্ত্রগুলো পড়লেই মনে হয়, দেখুন, আমি তুলে দিচ্ছি কয়েকটি মন্ত্র-
“ঘোড়া হলো শস্য, গাভী হলো ধান বা চাল এবং মশা মাছি হলো তুষ।”-(অথর্ববেদ, ১১/৩/৫)
“কালো লোহা হলো এর মাংস এবং লাল বর্ণের ধাতু বা তামা হলো এর রক্ত।” -(অথর্ববেদ, ১১/৩/৭)
“সীসা হলো এর ছাই, সোনা হলো এর রং এবং পদ্মফুল হলো এর সুগন্ধি” - (অথর্ববেদ, ১১/৩/৮)
এখানে আমি মাত্র তিনটি মন্ত্রের উল্লেখ করলাম, কিন্তু এই সূক্তে মন্ত্র আছে ৩১ টি, যার সবগুলোই প্রতীকী, অর্থাৎ এক কথার আড়ালে প্রকাশ করা হয়েছে অন্য কিছু। এভাবেই ১১/৩/১১ নং মন্ত্রে যে বলা হয়েছে, “This eart is the pan for boiling of rice, and the heaven its cover” বা ‘এই পৃথিবী হচ্ছে চাল সিদ্ধ করার কড়াই এবং আকাশ হচ্ছে তার ঢাকনা, এটাও আসলে প্রতীকী; এর মাধ্যমে বেদে, বিজ্ঞানীদের জন্য ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত ‘ওজোন স্তর’ সম্পর্কে একটি ধারণার। বিষয়টি এমন- কোনো পাত্রে চাল সিদ্ধ বা ভাত রান্না করলে তা উদগিরিত বাষ্প যেমন তার পাত্রের ঢাকনাকে ভেদ করতে পারে না বা পাত্রকে তার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখলেও যেমন উপর থেকে কিছু সেই পাত্রের ভেতর ঢুকতে পারে না, তেমনি পৃথিবীতে জীব ও জড়ের ক্রিয়াকর্মের ফলে ধোয়া রূপ যে ক্লোরোফোরোকার্বন বা CFC উৎপন্ন হয়, সেটাও পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উপরের দিকে অবস্থিত ওজোনস্তর ভেদ করতে পারে না বা পাত্রের উপর ঢাকনা স্বরূপ সেই ওজোনস্তর ভেদ করে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি, যা পৃথিবীর প্রাণীকূলের জন্য ক্ষতিকর, তা পৃথিবীতে প্রবেশ করতে পারে না।
এভাবে এই মন্ত্রের মাধ্যমে বিজ্ঞানের একটি সূত্রকে প্রকাশ করা হয়েছে, কিন্তু বলদ মুসলমানরা তা না বুঝে বলছে, এটা বেদের ভুল! আরে মূর্খরা, এটা মনে রাখিস, সারা পৃথিবী যখন পড়াশোনা দূরে থাক অক্ষরই চিনতো না বা অক্ষরই আবিষ্কার করতে পারে নি, তখন হিন্দুরা বেদ লিখেছে, তাই হিন্দুধর্ম নিয়ে চুলকানোর আগে বা হিন্দুদের সাথে জ্ঞান নিয়ে লাগার আগে নিজের পাছার কাপড়টা শক্ত করে বেঁধে, তারপর আসিস; কারণ, হিন্দুধর্ম নিয়ে চুলকালে কোনো মুসলমানের পাছার কাপড় রাখবো না বলে আমি প্রতিজ্ঞা করেছি।
যারা ওজোন স্তরের ব্যাপারটা বোঝেন নি, তাদের জন্য বলছি- বায়ুমন্ডলের দ্বিতীয় স্তর স্ট্রাটোমন্ডলে এই ওজোন স্তর অবস্থিত, এটা ভূপৃষ্ঠ থেকে ২০ থেকে ৩০ কি.মি উপরে। অক্সিজেনের দুইটা রুপভেদ আছে, যার একটা সাধারণ অক্সিজেন, আরেকটা হল ওজোন। সাধারণ অক্সিজেন দুইটা পরমানু মিলে হলেও ওজোন গঠিত অক্সিজেনের তিনটা পরমাণু মিলে । আমাদের এই পৃথিবীর স্বাভাবিক অস্তিত্বের জন্য এই ওজোন স্তর অপরিহার্য। কারণ, সূর্য থেকে কিছু ক্ষতিকর রশ্মি আসে, যেগুলো এই ওজোন স্তর বিকিরণ করে মহাশুন্যে ফিরিয়ে দেয় এবং প্রয়োজনীয় ও উপকারী আলো ফিল্টারিংয়ের মাধ্যমে পৃথিবীতে পাঠায়। যদি ঐসব ক্ষতিকর অতিবেগুণী রশ্মি, আমাদের পৃথিবীতে আসতো তাহলে আমরা বিভিন্ন রকমের মারাত্মক রোগে ভুগতাম, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- চোখে ছানি পড়া, ত্বকের ক্যান্সার প্রভৃতি।
এখন কেউ কেউ বলতে পারে, বিজ্ঞানীরা কোনো কিছু আবিষ্কার করার পর মুসলমানরা যেমন দেখতে পায় যে সেটা কোরানে ১৪০০ বছর আগেই লেখা হয়েছিলো, তেমনি আমিও বেদের একটি মন্ত্রের মধ্যে বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার করা একটি থিয়োরির মিল খোঁজার চেষ্টা করছি। যারা এমন ভাবছে, তাদের জন্য বলছি- হিন্দু শাস্ত্রের জ্ঞান পৃথিবীকে যে পথ দেখিয়েছে, মানুষ শুধু সেই পথে এগিয়ে চলেছে; হিন্দু শাস্ত্র তার আয়ুর্বেদ জ্ঞানের মাধ্যমে পৃথিবীকে এটা বলেছিলো যে মানুষের রোগ ব্যাধি হলে চিকিৎসা করে তাকে সুস্থ করা সম্ভব, চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা কাজ করেছে এবং করছে শুধু সেই পথে; কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ ২৩০ কি.মি দূরে থেকে হস্তিনাপুরের প্রাসাদে সরাসরি দেখিয়ে হিন্দু শাস্ত্র এটা বলেছিলো যে, দূর দূরান্ত থেকেও মানুষ এক সময় সরাসরি সব কিছু দেখতে পারবে, বর্তমানের লাইভ টিভি সম্প্রচার, সেটারই বাস্তবায়ন; রামায়নের পুষ্পক রথ, বর্তমানের বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থারই ইঙ্গিত; এই ১০০ বছর আগের মানুষও সম্ভবত এটা ভাবতে পারে নি যে, এক অস্ত্রে একই সাথে শত শত বা হাজার হাজার বা লাখ লাখ মানুষ মারা সম্ভব, কিন্তু সেই ইঙ্গিত আমরা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অহরহ দেখতে পাই। এসব ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা মোটামুটি হিন্দুশাস্ত্রীয় জ্ঞানের কাছাকাছি পৌছতে পারলেও, এক জনের মাথা কেটে আরেকজনের মাথায় প্রতিস্থাপন করতে এখনও সফল হয় নি, যেটা গনেশের মাথা কাটার ঘটনার মাধ্যমে ইঙ্গিত দেওয়া আছে। এছাড়াও একটি মাত্র অস্ত্র, যেটা হিন্দু শাস্ত্রে বলে ব্রহ্মাস্ত্র, সেটা দিয়ে পৃথিবীকে ধ্বংস করা সম্ভব, যা বলা হয়েছে মহাভারতে তা বিজ্ঞানীরা এখনও আবিষ্কার করতে পারে নি। তাছাড়াও বিজ্ঞানীরা এখনও মাতৃগর্ভের বাইরে কোনো শিশুর বেড়ে উঠা ও জন্ম ঘটাতে পারে নি, যেটা বেদব্যাস করে গেছেন প্রায় ৫২০০ বছর আগে মহাভারতে, তবে বিজ্ঞানীরা বলছে, এটা তারা ২০২৫ সালের আগেই করতে পারবে, এ নিয়ে ২০১৬ থেকে জোর গবেষনা তারা চালাচ্ছে। তাই আমার কথার সমালোচকদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই, হিন্দুরা বিজ্ঞানের সাথে নিজেদের ধর্মের মিল খুজে না, বরং বিজ্ঞান হিন্দুধর্মের দেখানো পথে চলে।
উপরে যা বললাম, অনেকেই বলবে, এগুলো না হয় বুঝলাম, কিন্তু অথর্ববেদের এই মন্ত্রে কিভাবে ওজোন স্তর বিষয়ে ইঙ্গিত দেওয়া আছে ?
খেয়াল করুন মন্ত্রটা -“This eart is the pan for boiling of rice, and the heaven its cover” বা ‘এই পৃথিবী হচ্ছে চাল সিদ্ধ করার কড়াই এবং আকাশ হচ্ছে তার ঢাকনা।
এরপর ভাবুন, বেদ রচয়িতা মুনি ঋষিদের কি এমন দায় পড়েছিলো যে- পুরো পৃথিবীকে রান্নার একটি কড়াই এবং তার ঢাকনাকে আকাশের সাথে তুলনা করার ? সাধারণ কোনো লোক কি কখনো এটা ভাবতে পারবে ? সাধারণ কোনো লোক কি কখনো পুরো পৃথিবীকে দেখতে পেরেছে, না দেখতে পারবে ? তাহলে এটা এমনি ই ধরে নেওয়া যায় যে মুনি ঋষিরা কড়াইয়ে ভাত রান্নাকে বর্ণনা করার জন্য বেদে এই কথা বলেন নি, এই বলার পেছনে নিশ্চয় তাদের অন্য কোনো ইঙ্গিত বা উদ্দেশ্য আছে। মুনি ঋষিরা এখানে কথা বলেছে পুরো পৃথিবী এবং দৃশ্যমান আকাশ নিয়ে, তাহলে আমাদেরকে সেই রকম বিষয়ই ভাবতে হবে যা পুরো পৃথিবী এবং আকাশ সম্পর্কিত; পুরো পৃথিবী, আকাশ, পৃথিবী থেকে উৎপন্ন ক্ষতিকর গ্যাস, সেই গ্যাসগুলো বায়ুমণ্ডলের স্তর ভেদ করে মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে না পেরে পৃথিবীরই সর্বনাশ সাধন, ফুটন্ত বাষ্পের চাপ বেশি হলে ঢাকনাকে সরিয়ে বা শক্ত করে আটকানো ঢাকনাকে ছিদ্র করে গ্যাস বেরিয়ে যাওয়া ( ওজোন স্তরের ছিদ্র) - এই বিষয়গুলোর সাথে পৃথিবী এবং ওজোন স্তরের বিষয়টি কল্পনা করুন, তাহলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন বেদের এই মন্ত্রে কিভাবে ওজোন স্তরের বিষয়ে ইঙ্গিত দেওয়া আছে।
যা হোক, এরপর মুমিন তার কমেন্ট বলেছে,
“কোরানেও আকাশকে ছাদ বলা হয়েছে তবে কার্যকারিতার দিক থেকে তা ছাদের সাথেই মিলে যায় যেমন আমাদের বায়ুমন্ডলের স্তর ক্ষতিকারক আল্ট্রাভায়োলেট রশ্নি সহ আরো অনেক ক্ষতিকর পদার্থ হতে প্রথিবীকে রক্ষা করে ঠিক ছাদের মত, কিন্তু কোরানে কোথাও বলা হয় নি আকাশ শক্ত তবে রিগবেদ মন্ডল ৪ সুক্ত ৪২ মন্ত্র ৩ এ বলা হয়েছে, “ভরুনা আকাশকে বানিয়েছেন শক্ত” অর্থাৎ বেদে ঢাকনা রুপক অর্থে বুঝালেও তা যে শক্ত তা স্পস্ট।একি কথা আছে অথর্ববেদ ৬/৪৪/১ এ”
মুমিন বলেছে, “কোরানে আকাশকে ছাদ হিসেবে বলা হলেও কোথাও বলা হয় নি যে আকাশ শক্ত” ।
-কোরান পড়ে এই কথা বলছিস, না কোরান সম্পর্কে জাকির নায়েকের মিথ্যাচার শুনে এসব শিখেছিস ? আকাশকে ছাদের সাথে তুলনাই বা করা হবে কেনো ? একটা ছাদকে ধরে রাখতে মিনিমাম চারটা খুঁটি লাগে, আকাশের খুঁটি কোথায় ? একটা বাড়ির ছাদের সাথে আকাশকে তুলনা করেছে তোর আল্লা, তোদের প্রাণের কোরানে; আল্লা কত বড় বলদ, সেটা তুই একবার নিজেই বিচার কর, তার কত ক্ষমতা সেটা পড়ে ভাবিস। এখন দেখ কোরানে আকাশ সম্পর্কে কী কী বলা হয়েছে এবং তাতে কোরানের আকাশ শক্ত কি না, সেটাও দেখ-
“আর আকাশ মণ্ডল উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে, ফলে তা কেবল দুয়ার আর দুয়ার হয়ে দাড়াবে।– (কোরান, ৭৮/১৯)
কোনো কিছু শক্ত না হলে কিভাবে তা উন্মুক্ত করে দেওয়া সম্ভব, আর শক্ত না হলে কিভাবে কারো সাথে দরজা লাগানো সম্ভব ?
“যখন নভোমণ্ডল দীর্ণ বিদীর্ণ হয়ে যাবে এবং লাল চামড়ার মতো রক্তবর্ণ ধারণ করবে।” -(কোরান, ৫৫/৩৭)
কোরানের আকাশ যদি শক্ত না হয় কিভাবে তা দীর্ণ বিদীর্ণ করা সম্ভব ? জলকে কেটে তুই দীর্ণ বিদীর্ণ করে দেখাস দেখি।
“তোমাদের উপর সাতটি সুদৃঢ় আকাশ মণ্ডল স্থাপন করেছি।”- (কোরান, ৭৮/১২)
-এখানের সুদৃঢ় শব্দ দ্বারা কী বোঝায়; শক্ত, না অন্য কিছু ? আর আকাশ কি সাতটি ? সাতটি আকাশ প্রমান করে দেখা বা গুনে দেখা। এই সাত আকাশ আছে আবার একটির উপরে একটি, যেন সাত তলা বিল্ডিং, দেখ নিচের
আয়াত-
“তোমরা কি লক্ষ্য করো না যে আল্লাহ কিভাবে সাত আসমান স্তরে স্তরে নির্মান করেছেন ?”- (কোরান, ৭১/১৫)
এই আয়াতটা কে বলেছে, আল্লা, না মুহম্মদ ? যদি আল্লা এই কথা বলে থাকে, তাহলে বাক্যটি এমন কেনো যা তা মুহম্মদের বলা মনে হচ্ছে ? আল্লা বললে, কথাটি তো হতো এমন- “তোমরা কি লক্ষ্য করো না যে আমি কিভাবে সাত আসমান স্তরে স্তরে নির্মান করেছি ?”
এই কোরানকে তোরা আবার আল্লার বানী হিসেবে মানিস, তোদের মতো মূর্খ এবং বলদা কি পৃথিবীতে আর কেউ আছে ? দেখ, নিচের এই কথাটিও তোদের আল্লা নয়, মুহম্মদই বলেছে-
“আল্লাই সৃষ্টি করেছেন সপ্ত আকাশ এবং এদের অনুরূপ পৃথিবীও।”– (কোরান, ৬৫/১২)
- আকাশের অনুরূপ নাকি পৃথিবী!
এই কোরানকে মুসলমানরা আবার ধর্মগ্রন্থ হিসেবে মানে, এরা কি আর এমনি এমনি মূর্খ হিসেব সারা পৃথিবীতে পরিচিত ?
কোরানের আকাশ যে শক্ত এবং তা বিল্ডিং এর ছাদের মতো একটির উপর আরেকটি অবস্থিত, তা আমার কথাতে নয়, কোরানের উপরের ঐ কয়েকটি আয়াত দ্বারাই প্রমানিত।
কিন্তু এই মুমিন যে বলেছে, ঋগ্বেদের একটি মন্ত্র ৪/৪২/৩ এ বলা হয়েছে আকাশ শক্ত, এবার সেই বিষয়টি দেখা যাক-
ঋগ্বেদের এই মন্ত্রে বলা আছে,
অহমিন্দ্রো বরুণন্তে মহিত্বোর্বী গভীরে রজসী সুমেকে।
ত্বষ্টেব বিশ্বা ভুবনানি বিদ্বান্তসমৈরয়ং রোদসী ধারয়ং চ।।
এর অর্থ - আমি শক্তিমান ও মহান ইন্দ্র, আমি সর্বজ্ঞ এবং সর্বত্র পরিব্যপ্ত বরুন; এই চিরন্তন বিশাল পৃথিবী ও আকাশ সৃষ্টি করে সুখী এবং গৌরবান্বিত, সূর্য ও পৃথিবীর মধ্যে সংগতি সাধন করি এবং এই মহাবিশ্বকে ধারণ ও পরিচালনা করি।
এর মধ্যে কি কোথাও বলা আছে যে আকাশ শক্ত ? বেদ কি মুহম্মদের মতো কোনো মহামূর্খের রচনা যে তাতে বলা থাকবে আকাশ শক্ত, স্তরে স্তরে সজ্জিত, আকাশের দরজা খুলে দেওয়া হবে, আকাশ দীর্ণ বিদীর্ণ হবে ?
এই শক্ত আকাশের কথা নাকি আবার বলা আছে অথর্ববেদের ৬/৪৪/১ নং মন্ত্রে, এই মন্ত্রটি পাওয়া যাবে হরফ প্রকাশনীর বেদের ১৫১ পৃষ্ঠায়, এখানে বলা আছে-
"অস্থাদ দৌরস্থাৎ পৃথিব্যস্থাদ বিশ্বমিদং জগৎ। আস্থানে পর্বতা অস্থ স্থাম্ন্যশ্বাঁ অতিষ্ঠিপম"অস্থাদ দৌরস্থাৎ পৃথিব্যস্থাদ বিশ্বমিদং জগৎ। আস্থানে পর্বতা অস্থ স্থাম্ন্যশ্বাঁ অতিষ্ঠিপম।।"
এর অর্থ- পর্বত যেমন তার স্থানে সুপ্রতিষ্ঠিত, অশ্ব যেমন তার রজ্জুর দ্বারা সুনিয়ন্ত্রিত, তেমনি এই মহাবিশ্বও তার অবস্থানে সুনিয়ন্ত্রিত।
এর মধ্যে আকাশ শক্ত, এমন কি কিছু বলা আছে ?
না, নেই।
এরপর সে লিখেছে,
"তবে সেই সাথে এই মন্ত্রে আরো একটি ভুল আছে, তা হচ্ছে আমরা জানি প্রথিবী গতিশীল,ও তা সুর্যের চারদিকে ঘোরে। কিন্তু এই মন্ত্রে বলা হয়েছে, “প্রথিবী স্থির ও নিশ্চল দাঁড়িয়ে আছে।"
কিন্তু এই মন্ত্রে যে এমন কিছু বলা নেই, এই মন্ত্রে একটি সুনিয়ন্ত্রিত পৃথিবীর কথা বলা আছে, সেটা তো একটু আগেই প্রমান করে দিলাম।
তারপর মুমিন বলেছে,
"এই একবিংশ শতাব্দিতে এসে কেউ যদি বলে প্রথিবী স্থির, তাহলে আর কি বলা?"
-এই মুমিন বোধহয় জানে না যে, এই বেদ, তার কোরানেরও, মিনিমাম সাড়ে ছয় হাজার বছর আগে লেখা, এত প্রাচীন গ্রন্থ হওয়া সত্ত্বেও বেদে কোনো বৈজ্ঞানিক ভুল নেই, বরং বেদে এমন সব কথা লিখা আছে, যা বিজ্ঞানকে পথ দেখিয়েছে, দেখাচ্ছে; কিন্তু মাত্র ১৪০০ বছর আগে লিখা কোরান কিভাবে বলে যে পৃথিবী সমতল ? আর সমতল পৃথিবীই ঘুর্ণায়মান নয়, স্থির পৃথিবীর ধারণা দেয়, অনুধাবন কর নিচের এই আয়াত-
"ভূপৃষ্ঠকে আমিই বিস্তিীর্ণ করে বিছিয়েছি। আর আমি উত্তম সমতল রচনাকারী।"- ( কোরান, ৫১/৪৮)
এরপর মুমিন বলেছে, "
"বৈদিক ঈশরের নিশ্চয়ই ধারনা ছিল না যে অদুর বা সুদুর ভবিস্যাতে বিজ্ঞান কতখানি এগোবে।"
"অদুর বা সুদুর ভবিস্যাতে" বিজ্ঞান কতখানি এগোবে, সেটা হিন্দুশাস্ত্রেই বলে দেওয়া আছে, যেখানে বিজ্ঞান এখনও পৌছতেই পারে নি, বিজ্ঞান কি এখনও পেরেছে মাতৃগর্ভের বাইরে ভ্রুণের বিকাশ ও জন্ম ঘটাতে (মহাভারতে গান্ধারীর শতপুত্র জন্ম রহস্য) ? বিজ্ঞান কি পেরেছে এক মানুষের মাথা কেটে অন্য মানুষের দেহে জুড়ে দিতে (গনেশের মাথা রহস্য)? বিজ্ঞান কি পেরেছে এমন একটি অস্ত্র তৈরি করতে যা মূহুর্তে সমগ্র বিশ্ব ধ্বংস করে দিতে সক্ষম (ব্রহ্মাস্ত্র)? হিন্দুশাস্ত্রে এতখানি এ্যাডভান্স বিজ্ঞানের কথা বলা আছে যে, যে জায়গায় পৌছতে বিজ্ঞানীদের আরও হয়তো কয়েকশত বা কয়েক হাজার বছর লেগে যেতে পারে। কিন্তু ইসলামী বিজ্ঞান তো বলে- কালোজিরা সকল রোগের মহৌষধ, মানুষের জ্বর হয় দোযখের আগুনের তাপ থেকে, মাছির এক ডানায় থাকে জীবানু, অন্য ডানায় প্রতিষেধক, এমন আরো সব হাস্যকর ব্যাপার স্যাপার।
যা হোক, এরপর মুমিন বলেছে,
"একি কথা আবার আছে অথর্ববেদ ১২/১/২৬ এ “প্রথিবী স্থির তার অবস্থান ও তার অক্ষে”
-যখনই বলা হচ্ছে যে, পৃথিবী তার অক্ষে অবস্থিত, তখনই এটা বলা হয়ে যাচ্ছে যে, পৃথিবী সেই অক্ষ ধরে আবর্তন করে, তার মানে পৃথিবী স্থির নয়; কিন্তু মুমিনা বলছে পৃথিবী স্থির এবং তার অবস্থান অক্ষে, ব্যাপারটা বোরকা হিজাব পড়ে বেশ্যাবৃত্তি, মানে একই অঙ্গে দুই রূপ হয়ে গেলো না?
এরপর মুমিন আবার বলেছে, "এখানে তুলসীরাম একটি বাড়তি ‘অক্ষ’ যুক্ত করেছেন, তবে মুল মন্ত্রে অক্ষ শব্দটা নেই,"
-মুমিন নিজেই বলছে, অথর্ববেদের ১২/১/২৬ নং মন্ত্রের অনুবাদ "“প্রথিবী স্থির তার অবস্থান ও তার অক্ষে”, আবার বলছে মূল মন্ত্রে অক্ষ শব্দটা নেই। তাহলে দেখা যাক, মূল মন্ত্রে অক্ষ শব্দটা আছে কি না-
মন্ত্রটা হলো-
"শিলা ভূমিরশ্মা পাংসুঃ সা ভূমিঃ সন্ধৃতা ধৃতা। তস্যৈ হিরন্যবক্ষসে পৃথিব্যা অকরং নমঃ।।"
এখানের "হিরন্যবক্ষসে" মধ্যেই অক্ষ শব্দটা রয়েছে, কারণ এই সংস্কৃত শব্দের উচ্চারণ হলো 'হিরণ্যব+অক্ষ+সে'।
এরপর মুমিন বলেছে, "আর্য সমাজেরই আরেক অনুবাদক দেবীচাঁদ এই মন্ত্রের অনুবাদে লিখেছেন “প্রথিবী দাঁড়িয়ে আছে স্থির তার গুনাবলির কারনে“, আর বেদে যে পৃথিবি স্থির এটা প্রমান হিসেবে বেদাংগেও রয়েছে। বেদাংগ (নিরুক্ত ১০/৩২) সবিতা পৃথিবিকে স্থির করে রেখেছেন খুটি দ্বারা।"
বেদে বর্ণিত পৃথিবী যে স্থির নয়, তার প্রমান অক্ষ শব্দের মধ্যেই রয়েছে; কারণ, যেখানে অক্ষ বা পথের কথা বলা হয়েছে, সেই পথ ধরে পৃথিবী চলে বলেই তা বলা হয়েছে। এখানে মুমিন আরো বলেছে, বেদাঙ্গে নাকি আছে যে, "সবিতা পৃথিবিকে স্থির করে রেখেছেন খুটি দ্বারা", খুটির কথা তখনই আসবে, যখন ছাদের কথা আসবে, আর আকাশ যে ছাদ, সেটা কে বলে, বেদ, না কোরান ?
কেউ যদি ভুল গিয়ে থাকেন, স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি আকাশ সম্পর্কে কোরানের সেই মহান জ্ঞান
"তোমাদের উপর সাতটি সুদৃঢ় আকাশ মণ্ডল স্থাপন করেছি।" (কোরান, ৭৮/১২)
এখানে আকাশই যে ছাদ এবং তা খুটি দ্বারা স্থাপন করে হয়েছে, সে সম্বন্ধে কোনো সন্দেহ নেই।
তারপর মুমিন বলেছে, "এবার দেখুন আকাশ ও প্রথিবী সম্পর্কে বেদের সম্পুর্ন কাল্পনিক ধারনা, খালি চোখে প্রথিবীতে বসে মনে হয় আকাশ উপরে আর প্রথিবী নীচে, তাই বেদ বলছে, অথর্ববেদ ৯/৭/২ ” আলোর জগত(সৌরজগত) হচ্ছে উপরের চোয়াল আর প্রথিবী হচ্ছে নীচের চোয়াল।”
-কিন্তু এই মুমিন জানে না বা জানলেও হিন্দুধর্মকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন মানসে এটা গোপন করে গেছে যে, অথর্ববেদের ১১/৩/১১ মন্ত্রের মতো এটাও একটি রূপক মন্ত্র, এখানে মহাবিশ্বের সব কিছুকে গরুর বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সাথে তুলনা করা হয়েছে, যেটা তুলসীরাম, তার অনুবাদে মন্ত্রের শুরুতেই বলে দিয়েছেন, কিন্তু যেটা বলা নেই হরফ প্রকাশনীর বেদে। রুপক হিসেবে না ভাবলে অথর্ববেদের ১১/৩/১১ মন্ত্রের যেমন সবকিছুই ভুল বলে মনে হয়, তেমনি রূপক হিসেবে না ভাবলে এই মন্ত্রকেও ভুল হিসেবে মনে হবে, দেখুন এই সূক্তের কয়েকটি মন্ত্র বা মন্ত্রের কিছু কিছু অংশ-
"ইন্দ্র হলো মাথা, মহাবিশ্বের তাপ অগ্নি হলো কপাল এবং যম বা আইন হলো দেহ ও মস্তিষ্ক্যের সন্ধিস্থল, ঘাড়"- (অথর্ববেদ, ৯/৭/১)
"সোমো রাজা হলো মস্তিষ্ক্য, আলোরজগত হলো উপরের চোয়াল, পৃথিবী হলো নিচের চোয়াল।"- (অথর্ববেদ, ৯/৭/২)
এভাবে এই সূক্তটি রূপক এবং রূপক হিসেবে না ভাবলে দেখুন এই সূক্তের সবগুলো মন্ত্রকে শুধু ভুল নয়, বোগাস হিসেবে মনে হবে। আর আপনি তখনই এই মন্ত্রগুলোকে রূপক হিসেবে না ভেবে বাস্তব হিসেবে ভাববেন, যখন আপনি বেদ রচয়িতা মুনিদের মেধা ও দিব্যদৃষ্টিকে উপলব্ধি করতে না পারবেন, অর্থাৎ আপনি যখন মুসলমানদের মতো নির্বোধ বা বলদা হবেন, যেমন এই কপিপেস্ট মুমিন ফ্রম জোকার নায়েক
সংগৃহীত