এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

বেদে শঙ্কা

যজুর্বেদের 23/20 তম মন্ত্রটি নিয়ে শঙ্কা এই যেঃ সেই মন্ত্রে রাজমহিষীকে অশ্বের সাথে সঙ্গম করতে বলেছে। আচার্য মহীধর এই মন্ত্রে অশ্বমেধ যজ্ঞার্থ করেছেন বিধায় উক্ত অশ্লীলতার উদ্ভব।

সবার আগে আমরা প্রকৃত মন্ত্রের পদার্থ দেখে নিই।


তা উভাে চতুরঃ পদঃ সম্পসারয়াব স্বর্গ লােকে প্রোর্ণুবাথাং বৃষা বাজী রেতােধা রেতাে দধাতু।
(যজুর্বেদ ২৩২০)।
পদার্থঃ (তৌ উভৌ) রাজা এবং প্রজা উভয়ে মিলে (চতুর পদ) ধর্ম অর্থ। কাম মােক্ষ এই চার পুরুষার্থ কে (সম্প্রসারয়াব) উত্তম প্রকারে বিস্তৃত করবে (স্বর্গ লােকে) সুখময় লােকে (প্র ণুবাথাম) একে অপর কে রক্ষা করবে (বৃষা) দুষ্টকে বাধার সামর্থযুক্ত (বাজী) ঐশ্বর্যযুক্ত রাজা (ইন্দ্রো বৈ বাজী; ঐ০ ৩১৮] (রেতােধা) বীর্য- পরাক্রম ধারন করে (রেত) রাষ্ট্রকে পরাক্রম (দধাতু) দান করেন।
সরলার্থঃ রাজা এবং প্রজা উভয়ে মিলে ধর্ম অর্থ কাম মােক্ষ এই চার পুরুষার্থ কে উত্তম প্রকারে বিস্তৃত করবে সুখময় লােকে একে অপর কে রক্ষা করবে। দুষ্টকে বাধার সামর্থযুক্ত ঐশ্বর্যযুক্ত রাজা বীর্য- পরাক্রম ধারন করে রাষ্ট্রকে পরাক্রম দান করেন।
মহর্ষি দয়ানন্দ জী কৃত ভাষ্য অনুযায়ী উক্ত মন্ত্রে অশ্বের উল্লেখ নেই। অশ্বের উল্লেখ না থাকায় যজ্ঞার্থ করার প্রশ্ন ই আসে না।
কিন্তু আচার্য মহীধরের মতে বাজী শব্দটির অর্থ অশ্ব। এখানে রাজ মহিষী কে মৃত অশ্ব চতুর্পদ সম্প্রসারণ করে রেতঃদান করে স্বর্গে পাঠায়। ভাষ্য নিয়ে মতবিরোধ হবার দরুণ আমরা দেখি ব্রাহ্মণ ও নিরুক্ত কাকে সমর্থন করে। 

  
ঋগ্বেদীয় ঐতরেয় ব্রাহ্মণ 3/18 মতে, 
“বাজিনং” এই পদে ইন্দ্রই বাজী (বাজযুক্ত অর্থাৎ অন্নযুক্ত)। এইরূপে এই মন্ত্রে চারিটি পদ [ যথাক্রমে ] বৃষ্টিপ্রদ, মরুৎসম্বন্ধী, বিষ্ণুসম্বন্ধী ও. ইন্দ্রসম্বন্ধী।

এছাড়া যজুর্বেদের মাধ্যান্দিন শাখার অন্তর্গত শতপথ ব্রাহ্মণে ও বাজিন শব্দের অর্থ নিম্নরূপঃ
এছাড়া যজুর্বেদের মাধ্যান্দিন শাখার অন্তর্গত শতপথ ব্রাহ্মণে ও বাজিন শব্দের অর্থ নিম্নরূপঃ 




শতপথ-ব্রাহ্মণ
[৪ প্র.১ ব্রা]

, বাজিন ভক্ষণের জন্য হন্তে গ্রহণ করিয়া পরস্পর সকলকেই হোতুপ্রভৃতি পদে সম্বোধনপূর্বক (এই বাজিম ক্ষণের জন্য) অনুজ্ঞা প্রদান করুন (উপহয়)।' এইরূপে অনুজ্ঞা প্রার্থনা করিয়া ও অনুজ্ঞাত (উপঃ ") হইয়া ঐ বাজিন ভক্ষণ করেন। তাহা ভক্ষণ করিবার কয়েকটি বৈকল্পিক মন্ত্র সূত্রগ্রন্থে দৃষ্ট হয়, যথা—“তুমি বাজী (অন্নবান) ঋতুগণের বাজিন,“আমি তােমাকে ভক্ষণ করি! অথবা ‘আমি বাজী (বলবিশেষশালী, বা অন্নবান), আমি অনুজ্ঞাত হইয়া অনুজ্ঞাত বাজিনকে ভক্ষণ করি।' অথবা 'আমি অন্নের দ্বারা অন্নবান হইব (কিংবা বলবিষয়ে বলবান্ হইব )!' মন্ত্ৰকয়টির মূল এইঝতুনাৎ ত্বা বাজিনা বাজিন "ভক্ষয়ামি।'ৰাজহং বাজিনস্যোপহুতস্যোগহুতো ভক্ষয়ানি ! ‘বাজে বাজী ভূয়াসম!" সােমবাগে হুতাবিশিষ্ট সোমভক্ষণ এইরূপেই করিতে হয় ( কা, শ্রো. ৩,৫,২১)। এই জন্য উক্ত হইয়াছে যে, তাদৃশ বাজিনপান সােমসদৃশ। কা. শ্রৌ ১০. ১৯-২৭।
 
এখানে ও স্পষ্ট যে বাজ শব্দের অর্থ অন্নযুক্ত।

 বৈদিক শব্দার্থকোষে বাজিনের অর্থপ্রকরণ এরূপ


বাজিন্ = বিজ্ (ভয় এবং চলার অর্থে) + ণিনি ( তাচ্ছীল্য অর্থে) = বাজিন।

অন্নবান।
গতিমান।
বহু অন্ন ভক্ষণকারী অশ্ব।(আধুনিককালে অশ্ব অর্থে প্রযুক্ত।যেহেতু বেদ আধুনিক না, তাই বাজিন শব্দ অশ্ব অর্থে প্রযুক্ত হওয়া একপ্রকার অসম্ভব)
বাজ্ + ইন্ = বাজন্। বলবানিরুক্তে

 ও ইন্দ্র শব্দটির উৎপত্তি বোঝাতে গিয়ে বলা হয়েছেঃ

Indra is (so called because) he divides food (irā+ dr), or he gives food (ira+da), or he bestows food (irā+alā), or he sends food (ira + däraya), or he holds food (iva + dhāruya)



ইন্দ্র বলার কারণ তিনি খাদ্য কে ভাগ করেন(ইর+দ্র) অথবা তিনি খাদ্য দেন (ইর+দ্) অথবা তিনি খাদ্য ধারণ করেন (ইর+ধ্) অথবা তিনি খাদ্য পাঠান (ইর+দারয়) অথবা তিনি খাদ্য ধরে রাখেন (ইর+ ধারয়)


সুতরাং নিরুক্ত থেকে ও এটা পাওয়া যাচ্ছে ইন্দ্র ই পরোক্ষে বাজিন। তাই যজুর্বেদের উক্ত মন্ত্রে অশ্বের কোনও উল্লেখ ই নেই। সুতরাং  অশ্বের রেতধারণের প্রশ্ন ই আসে না।







বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

❏ সনাতনধর্মে নারীর স্থান

সনাতনধর্ম হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র ধর্ম যার প্রধাণ ধর্মগ্রন্থ পবিত্র বেদের মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষিদের মধ্যে রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ঋষি। 
যেমন, 
১) ঘোষা(ঋগ্বেদ দশম মন্ডলের ৩৯-৪১ নং সুক্তের দ্রষ্টা,ঋষি কক্ষিবান এর কন্যা)
২) লোপামুদ্রা
৩) মৈত্রেয়ী
৪) গার্গী
৫) পৌলমি
৬) রোমশা
৬) অপালা
৭) বাক (ঋগ্বেদের বিখ্যাত দেবীসূক্তের দ্রষ্টা),
৮) অপত
৯) কত্রু
১০) বিশ্ববর
১১) জুহু
১২) ভগম্ভ্রীনি (মহর্ষি অম্ভ্রন এর কন্যা, ঋগ্বেদের অষ্টম মন্ডলের ১২৫ নং সুক্তের দ্রষ্টা)
১৩) যরিতা
১৪) শ্রদ্ধা
১৫) উর্বশী
১৬) স্বর্ণগা
১৭) ইন্দ্রানী
১৮) সাবিত্রী
১৯) দেবায়নী
২০) নোধা
২১) আকৃষ্ভাষা
২২) শীকাতনবাবরি
২৩) গণ্পায়নী
২৪) মন্ধত্রী
২৫) গোধ
২৬) কক্ষিবতী
২৭) দক্ষিণা
২৮) অদিতি
২৯) রাত্রি(মহর্ষি ভরদ্বাজের কন্যা)
৩০) শ্রীলক্ষ্য
♦ পৃথিবীর অার কোন ধর্ম বা ধর্মগ্রন্থে নারীদের এমন ভূমিকা দেখা যায় না। একমাত্র পবিত্র বেদেই পাওয়া যায় নারীদের এমন অসাধারণ অবদান। অার পৃথিবীর অন্যান্য সব ধর্মগ্রন্থে পুরুষদের ভূমিকাই পাওয়া যায় কেবল।

সনাতন ধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ পবিত্র বেদ।
এবারে দেখুন পবিত্র বেদের নারী স্তুতি,
যেগুলোতে পুত্রের পাশাপাশি কন্যাকেও প্রার্থনা করা হয়েছে-
.
• আমার পূত্র শত্রুর নাশকারী এবং নিশ্চয়রূপে আমার কন্যা বিশিষ্টরূপে তেজস্বিনী।
- ঋগবেদ (১০।১৫৯।৩)
.
• যেমন যশ এই কন্যার মধ্যে এবং যেমন যশ সম্যকভৃত রথের মধ্যে, ঐরূপ যশ আমার প্রাপ্ত হোক।
- ঋগবেদ (৯।৬৭।১০)
.
• একসঙ্গে মিলিয়া যজ্ঞ করিলে পতি পত্নী, পুত্র এবং কন্যা কুমারী লাভ করেন। তাহারা পূর্ণ আয়ু ভোগ করেন। এবং উভয়ে নিষ্কলঙ্ক চরিত্রের স্বর্ণভূষণে দীপ্যমান হন।
- ঋগবেদ (৮।৩১।৮)
.
অথর্ববেদের ১ম কান্ডের ১৪তম সুক্তে একজন পিতার কন্যা দানের উল্লেখ পাওয়া যায়-
• হে নিয়মকারী বর রাজন! এই কামনাযোগ্য কন্যা তোমার বধু। সে তোমার মাতা পিতা এবং ভ্রাতার সাথে ঘরে নিয়মপূর্বক অবস্থান করবে।
- অথর্ববেদ (১।১৪।২)

.হে বর রাজন! এই কন্যা তোমার কুলের রক্ষাকারী, তাহাকে তোমার জন্য আমি আদরের সহিত দান করিতেছি। সে বহু কাল পর্যন্ত তোমার মাতা পিতা আদির মধ্যে নিবাস করবে।
- অথর্ববেদ (১।১৪।৩)
.
বিবাহিতা নারীকে ‘কল্যাণময়ী, মঙ্গলময়ী’ আখ্যায়িত করে বেশ কিছু স্তুতির উল্লেখ পাওয়া যায় বেদে-
.
• হে বধূ! শ্বশুরের প্রতি, পতির প্রতি, গৃহের প্রতি এবং এই সব প্রজাদের প্রতি সুখদায়িনী হও, ইহাদের পুষ্টির জন্য মঙ্গল দায়িনী হও।
- অথর্ববেদ (১৪।২।২৬)
.
হে বধু! কল্যাণময়ী, গৃহের শোভাবর্দ্ধনকারী, পতি সেবা পরায়ণা, শ্বশুরের শক্তিদায়িনী, শাশুড়ি আনন্দ দায়িনী, গৃহকার্যে নিপুণা হও।
- অথর্ববেদ (১৪।২।২৭)
.
• হে বধূ! যেমন বলবান সমুদ্র নদী সমূহের উপর সাম্রাজ্য স্থাপন করিয়াছে, তুমিও তেমন পতিগৃহে গিয়া সম্রাজ্ঞী হইয়া থাকো।
- অথর্ববেদ (১৪।১।৪০)
.
• শ্বশুরদের মধ্যে এবং দেবরদের মধ্যে, ননদ ও শাশুড়ির সঙ্গে মিলিয়া সম্রাজ্ঞী হইয়া থাকো।
- অথর্ববেদ (১৪।১।৪৪).
.
• এই বধূ মঙ্গলময়ী, সকলে মিলিয়া ইহাকে দেখো, ইহাকে সৌভাগ্য দান করিয়া দুর্ভাগ্য বিদূরিত করো।
- অথর্ববেদ (১৪।২।২৮)
.
• হে স্ত্রী! শ্বশুরের নিকট সম্রাজ্ঞী হও, শাশুড়ির নিকট সম্রাজ্ঞী হও, ননদের নিকট সম্রাজ্ঞী হও এবং দেবরদের নিকট সম্রাজ্ঞীর অধিকার প্রাপ্ত হও।
- অথর্ববেদ (১০।৮৫।৪৬)
.
হে স্ত্রী! অমৃতরসে পরিপূর্ণ এই কুম্ভকে আরো পূর্ণ করিয়া আনো, অমৃতপূর্ণ ঘৃতধারাকে আনো, পিপাসুকে অমৃতরসে তৃপ্ত করো। ইষ্ট কামনার পূর্তি গৃহকে রক্ষা করিবে।
- অথর্ববেদ (৩।১২।৮)
.
যজুর্বেদ ২২।২২ মন্ত্রে পরমেশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে যে, আমাদের রাজ্যে যেন বিদ্বান ব্রাহ্মণ, নির্ভয় ক্ষত্রিয়, দুগ্ধপূর্ণ গাভী, ভারবাহী ষাড়, ঔষধি, সুন্দর ব্যবহারকারী স্ত্রী এবং শত্রু বিজয়কারী পুরুষ উৎপন্ন হয়। মন্ত্রটিতে স্পষ্টভাবে পুরুষের সাথে সাথে নারীকেও উৎপন্ন হবার জন্য প্রার্থনা করা হচ্ছে।
.
• ন জাময়ে তান্বো রিক্থমারৈক্চকার গর্ভং সনিতুর্নিধানম্।
যদী মাতরো জনযন্ত বহ্ণিমত্যঃ কর্তা সূকৃতোরন্য ঋন্ধন্।।
- ঋগ্বেদ (৩.৩১.২)
অনুবাদ- পুত্র কন্যাকে (ভাই তার বোনকে) পিতৃসম্পত্তি থেকে আলাদা করে দেয়না, তা সমানই থাকে বরং সে তার বোনকে শিক্ষিত, সংস্কৃতিবান করে গড়ে তোলে এবং স্বামীর হাতে তুলে দেয়। পিতামাতা ছেলেমেয়ের জন্ম দেন, প্রথমজনকে পারিবারিক দায়িত্ব অর্পণের জন্য আর দ্বিতীয়জন আসে তাদের জন্য পবিত্রতা ও গুণের প্রতীক হিসেবে।

.ব্যাখ্যা- এই মন্ত্রে ছেলে ও মেয়ে সন্তানের সম্পত্তির উত্তরাধিকারের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। একটি পিতামাতার যদি শুধু মেয়ে সন্তান থাকে তবে পিতৃসম্পত্তির সম্পূর্ণ ভাগটাই সে পাবে, আর যদি তার ভাই থাকে তাহলে দুজনের মধ্যে তা সমানভাবে ভাগ হবে, কোনভাবেই তা এককভাবে শুধু পুত্রসন্তান পাবেনা। আর পিতা-ভ্রাতাদের কর্তব্য হল কন্যাকে বিয়ের আগেই শিক্ষা-কৃষ্টিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হিসেবে গড়ে তোলা। একজন পুত্রের কাজ সংসারের দায়িত্বভার নেয়া আর একজন কন্যাসন্তানকে পিতামাতার জন্য পবিত্রতা ও গুণের প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
‘মহাবীর তন্ত্র’ এর দশম অধ্যায়ে বলা হয়েছে-
“নারীরা সকল ধরনের শ্রাদ্ধ করতে পারবে কেবলমাত্র বৃদ্ধি শ্রাদ্ধ ব্যতীত।”
বৃদ্ধি শ্রাদ্ধ নারীরা করতে পারবেন না কেননা একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীর স্বামী অনাগত সন্তানের মঙ্গল কামনায় যে শ্রাদ্ধ করেন তাই হল বৃদ্ধি শ্রাদ্ধ। সুতরাং নারীর এই শ্রাদ্ধ করতে পারার কোন কারণ নেই!
বিখ্যাত তামিল ঐতিহাসিক গ্রন্থ পুরুনানুরুতে আমরা দেখতে পাই লেখক ভেল্লেরুক্কিলাইয়ার বর্ণনা দিচ্ছেন রাজা ভেলেব্বির মৃত্যুতে রানীর পিণ্ডদানের কথা।
শাস্ত্রমতে একজন ব্যক্তির যেসকল আত্মীয়রা শ্রাদ্ধ করতে পারেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ছেলে, মেয়ে, ছেলের ছেলে, মেয়ের ছেলে, স্ত্রী, বাবা, মা, ভাই, ভাইয়ের ছেলে, গুরু, শিষ্য।
অর্থাৎ যেহেতু ওই ব্যক্তির মেয়ের পিণ্ডদানের অধিকার আছে তাই দায়ভাগ শাখায় মেয়েদের পৈতৃক সম্পত্তি লাভের সুযোগ রয়েছে।
Partha Paul

বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

✅সনাতন বেদ বনাম ইসলাম কোরআন কোনটি ঈশ্বর প্রদত্ত - পর্বঃ---১ ⤵

আল্লাহর নামের সহিত আরম্ভ; তিনি ক্ষমাকারী এবং দয়ালু। "মঞ্জিল ১। সিপারা ১। সুরত ১।↕
সমীক্ষক --- মুসলমানেরা বলেন যে, কোরআন খুদার বানী। কিন্তু এই বচন হইতে জানা যাইতেছে যে ইহার উপর রচিয়তা আছে। কারন ইহা পরমেশ্বর রচিত হইলে "আল্লাহের নামের সহিত আরম্ভ " বলা হইত না। "মনুষ্যদের প্রতি উপদেশের জন্য আরম্ভ" বলা হইত। যদি মনে করা হয় আল্লাহ মনুষ্যদিগকে উপদেশ দিতেছেন, তুমি এইরূপ বল " তাহা হইলেও সঙ্গত হয় না: কারন তাহাতে পাপের আরম্ভও খুদার নামে হইবে এবং তাঁহার নাম কলঙ্কিত হইবে।
যদি তিনি ক্ষমাকারী এবং দয়ালু হন,
তাহা হইলে তিনি তাঁহার সৃষ্টিতে মনুষ্যদের সূখের জন্য অন্য প্রাণীদিগকে দারুন কষ্ট দিয়া হত্যা করিয়া মাংসভোজনের আদেশ দিলেন কেন? ঐ সকল প্রাণী কি নিরাপদ নহে? তাহারা কি ঈশ্বর সৃষ্ট নহে?
পরমেশ্বরের নামে উত্তম কর্মের আরম্ভ" কুকর্মের নহে, এইরূপ বলাই উচিত ছিলস। পূর্বোক্ত বাক্যে অসঙ্গতি কেননা চৌর্য্য, লাম্পট্য এবং মিথ্যাভাষণ প্রভৃতি পাপকর্মের আরম্ভও কি পরমেশ্বরের নামের সহিত করিতে হইবে?
বোধ হয় এই কারনেই মুসলমাস কসাইরা কন্ঠচ্ছেদ করিবার সময়ও 'বিস্মিল্লাহ" ইত্যাদি পাঠ করিয়া থাকে। উক্ত বচনের ইহাই অর্থ মনে করিয়া মুসলমানেরা কুকর্মের আরম্ভও আল্লাহর নাম লইয়া থাকে। মুসলমানদের খুদা দয়ালুও হইবেন না। কারন পূর্বোক্ত প্রাণীদের প্রতি তাঁহার দয়া রইলো কোথায়? উক্ত বাক্যের অর্থ যদি মুসলমানরা না জানেন, তাহা হইলে এ বাক্যের প্রকাকাশ ও বৃথা ; যদি অন্য কোন অর্থ করেন, তবে সেই প্রকিত অর্থ কি?..।
আরো অনেক যুক্তিগত ভাবেই কোরআন ঈশ্বর প্রদত্ত হইতে পারেনা তাহা বলিবার অপেক্ষা রাখেনা।
যাই হোক এতোক্ষণ সাধারন যুক্তি দিয়েই কোরআন এর বাণী কোন ঈশ্বর প্রদত্ত না তা প্রমান হলো এবং সেই সাতে সনাতন বেদ ঈশ্বর প্রদত্ত তাহাঁর প্রমান আমি তুলে ধরবো, খুব অল্পতেই লিখে।
লিখলে লিখে শেষ করা যায়না তেমনি তর্কেও জয় পাওয়া যায়না যদি না তুমি বুঝতে সক্ষম হও।
এবার আসি সনাতন বেদ?
===================
ইহা বিচারণীয় যে, মানব জ্ঞানের আদিস্রোত কি ঈশ্বর? যদি হয় তবে ঈশ্বরীয় জ্ঞান কেবল বেদ ই, অন্য গ্রন্থ নয়? এই প্রশ্ন সমাধানের জন্য আমাদের ঈশ্বর, জ্ঞান এবং বেদ এই তিন শব্দের অর্থ অনুধাবন করা প্রয়োজন । ঈশ্বর সৃষ্টিকর্তা, সর্বাধার, সর্বব্যাপক, সচ্চিদানন্দ, অজর, অমর, নিত্য পবিত্র আদি গুণ দ্বারা পূঁর্ণ সত্তা। জ্ঞান সত্য, শাশ্বত নিয়ম, সৃষ্টি নিয়মাকুল , সর্বহিতকারী মানবমাত্রের জন্য এক সমান ব্যবহার্য্য, প্রমাণ এবং তর্ক দ্বারা সিদ্ধ পক্ষপাত রহিত বিদ্যা। বেদ যা সমস্ত বিদ্যার ভান্ডার এবং আদিমূল। বৈদিক ধর্মের সমস্ত মত এবং সম্প্রদায়ের আদিস্রোত বেদই।
মানবের সৃষ্টিকাল থেকে আজ পর্যন্তের ইতিহাস স্পস্ট করেছে যে, মনুষ্য মূলভূত জ্ঞান অর্জন করতে পারতো না। কারন জ্ঞান দুই প্রকার - এক নৈমিত্তিক বা মূলভূত জ্ঞান এবং দ্বিতীয় নৈসর্গিক বা স্বাভাবিক জ্ঞান। নৈমিত্তিক জ্ঞান একদম মূল যাহা বিনা জ্ঞান বিকশিত হতে পারে না। যেমন গণিতের সংখ্যা এক দুই আদি বিনা গণিত বা ভৌতিক বিজ্ঞানের কোন ক্ষেত্র বা বিকাশ সম্ভব নয়। সমস্ত ভৌতিক বিজ্ঞানের আত্মা গণিত এবং ইহা বিশ্ববিখ্যাত এবং সর্বমান্য যে গণিত বিজ্ঞানের মূল আধারভূত সংখ্যা বেদ এবং বৈদিক গণিত বিজ্ঞান থেকে উদ্ভুত হয়েছে। স্বাবাবিক জ্ঞান মনুষ্যের মধ্যে জন্ম থেকেই হয়। ইহা জ্ঞানেন্দ্রিয় এবং কর্মেন্দ্রিয়ের ব্যবহারের সাথে সমন্ধিত। মানুষ প্রশিক্ষন দ্বারা নৈমেত্তিক জ্ঞান প্রাপ্ত হবার পর স্বাধ্যায়, চিন্তন, মনন, অভ্যাস দ্বারা বিদ্যার উন্নতি করতে পারে।
আস্তিক জগতে কিছু লোক যারা জ্ঞানের আদিস্রোত ঈশ্বর কে মানে না। এরূপ লোককে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। ১। সত্ অসত্ বিবেকবাদী ২। প্রকৃতিবাদী ৩। সামাজিক বিকাসবাদী।
প্রথম বর্গের লোকের মত এই যে পরমেশ্বর আমাদের সত্য - অসত্য, ধর্ম - অধর্মের নির্ণয় করার জন্য চেতনা বা চেতনাত্মা দিয়েছে যা দ্বারা আমরা নিজ কর্তব্য অকর্তব্যের স্বয়ং নির্ধারন করতে পারি । এই তর্ক নৈমিত্তিক জ্ঞানের ক্ষেত্রে সঠিক নয়। ইহা উচিৎ যে, ব্যক্তি বাহ্য বাতাবরণ কে দেখে স্বাভাবিক জ্ঞান ও নিজ মান্যতার উপর কিছু নির্ণয় নিতে পারে। এবং এই নির্ণয় সেই ব্যক্তির সামাজিক বাতাবরণ ও মানত্যতা দ্বারা প্রভাবিত। তাহার আধারে এক সমান, মানবতাবাদী, সর্বমান্য, আচারসংহিতা হতে পার না। এইজন্য জার্মান দার্শনিক কাণ্ট নিজ "মেটাফিজিক্স অফ মোরল্স" পুস্তকে লিখেছিলেন -
" Feeling which naturally differ in degree can not furnish uniform standard of good and evil, nor has any one a right to form judgements for others by his own feelings"
" ব্যক্তির ভাবনা বিভিন্ন হতে পারে যা ভালো - খারাপ এর মধ্যে এক সমান মাপদন্ড তৈরী করতে পারে না। আর না অন্যের সমন্ধ্যে নিজ বিচারানুকুল নির্ণয় নেবার অধিকার হয় "
ইহার বিপরীত ঈশ্বর, জীব, প্রকৃতি আদির স্বরূপ তাহার পারস্পারিক সমন্ধ্য, সৃষ্টি রচনা,ভৌতিক জ্ঞান বিজ্ঞান, মোক্ষ সাধানাদির মূল জ্ঞান তো শুধু মাত্র চেতনা দ্বারা হতে পারে না। তো এই ধারণা অমান্য।
প্রকৃতিবাদির মত যে প্রকৃতিকে দেখো সব জ্ঞান প্রাপ্ত করা যায়। ইহা সর্বদা মান্য নয়। যদি তাহাই হতো তো প্রকৃতির ক্রোড়ে পালনরত বনবাসি জনজাতিও সুসভ্য, সুশিক্ষিত এবং সুসংস্কৃত হতো। কোনও বনবাসি জাতি অসভ্য এবং অবিকসিত থাকতো না। কারন তাহার সামনে তো প্রকৃতির বিশাল পুস্তক রয়েছে। কোন শিক্ষা দেবার জন্য বিদ্যালয় খোল অধ্যয়ন অধ্যাপন করার আবশ্যকই নেই।
তৃতীয় বিকাসবাদীর অনূসারে ধার্মিক নৈতিকতা এবং সমাজিক জ্ঞান আদির ক্রমিক বিকাশ হয়ে থাকে। অতঃ সব প্রকারের জ্ঞান বিকাসবাদের পরিণাম। ইহা মানা একদম উচিৎ নয় কারণ বিকাশ তাহারই হয়ে থাকে যা পূর্ব থেকে সুক্ষরূপে বিদ্যমান। আর ইহা সর্বসম্মত তথ্য যে বেদে বিশ্বের প্রাচীনতম পুস্তক। অতঃ বিশ্বের মূল জ্ঞান বেদেই এবং জ্ঞান বিজ্ঞানের যে প্রগতি আমরা দেখতে পাই তা সেই বেদ জ্ঞানেরই বিকশিত রুপ।
বেদকে শুধু ভারতীয়রা অপৌরষেয় মানে না বরং বিভিন্ন দার্শনিকরাও ইহা মান্য করে যে সত্য সনাতনের আদি স্রোত ঈশ্বরই।
অন্য কেহ নয়।
(i) দার্শনিক কাণ্ট লিখেছে - we maw well conede that if the Gospel had no previously taught the universal moral law in their fully purity, reason would not yet have attained so perfect an insight of them
আমি উত্তমপ্রকারে মানি যে, যদি ঈশ্বরীয় জ্ঞান আমাদের প্রারম্ভে সত্য শাশ্বত নিয়ম কে না বলতো তো কেবল বুদ্ধি এমন নির্ভ্রান্ত এবং পূর্ণরূপে প্রাপ্ত করতে পারতো না।
(ii) বিদ্বান আর ফিলংট লিখেছে যে, The light of nature and the works of creation and providence are not sufficient to give that knowledge of God and of his will which is necessary unto salvation. The deepest discoveries and highest achivements of the unaided intellect need to be supplemented by truths which can only come to us through special revelation (theism, p 300)
অর্থাৎ প্রকৃতির প্রকাশ এবং সৃস্টির কার্য ঈশ্বর কে বোঝা এবং মোক্ষ প্রাপ্তির জন্য যথেষ্ট নয়। গহনতম শোধ এবং উচ্চতম উপলব্ধির জন্যও সহায়তাহীন বুদ্ধির জ্ঞানের দ্বারা পুর্তির আবশ্যকতা যা আমরা ঈশ্বরীয় জ্ঞান দ্বারাই প্রাপ্ত হয়ে থাকে।
(iii) এই বিষয়ে গ্রীক দার্শনিক প্লেটো লিখেছে - we will waite for one, be He a God or an inspire man to instrut us in religious duties and to take away the darkness from our eyes, we must sieze upon the best human views in navigating the dangerous sea of life, if there is no safer or less perious way, no stouter vesel, no Divine Reavelation, for making this voyage (phaedo)
অর্থাৎ ধার্মিক কর্তব্যের শিক্ষা দেবার জন্য আমরা পরমেশ্বর বা তার দ্বারা প্রেরিত কোন পুরুষের প্রতীক্ষা করা পড়ে যে আমাদের চোখের সামনের অন্ধকার দূর দেয়। এই মানব জীবনরূপী ভয়ংকর সমুদ্র কে উত্তমরূপে পার করার জন্য যদি আমাদের ঈশ্বরীয় জ্ঞান দ্বারা কোন প্রবল সাধন মিলা সর্বদা অসম্ভব হয় তো উত্তম থেকে উত্তম মানবীয় বিচারের উপর আমাদের নির্ভর প্রয়োজন পড়ে।
(iv) দার্শনিক সুকরাত ঈশ্বরীয় জ্ঞানের ব্যাপারে বলেছেন - You may resign yourself or sleep and give yourself upto despire, unless God in this goodness, shall reach safe to send you instruction.
অর্থাৎ তুমি যদি নিদ্রার প্রতি নিজেকে সমর্পন করে থাকো যা নিরাশের প্রবাহে বহমান থাকে যতক্ষণ পরমেশ্বর নিজ কৃপা দ্বারা তোমাকে শিক্ষা না দেয়।
উপরোক্ত পাশ্চাত্য প্রমান দ্বারা সিদ্ধ হয় যে জ্ঞানের আদি স্রোত ঈশ্বর। ভারতীয় দর্শন এবং বৈদিক বাঙ্ময় তো প্রারম্ভ থেকেই মান্য করে যে, মনুষ্য মাত্রের নৈমিত্তিক জ্ঞানের জন্য ঈশ্বরীয় জ্ঞানের আবশ্যকতা।
কপিল ঋষি বলেছেন -
ন পৌরষেয়ত্বং তত কর্তুঃ পুরুষস্যাভাবাত্।
নিজ শক্ত্যভিব্যক্তেঃ স্বতঃ প্রামাণ্যাত্।।
(সাংখ্যদর্শন ৫।৫১)
অর্থাৎ বেদের কর্তা কোন পুরুষ নয়। এইজন্য বেদ অপৌরষেয়। বেদ নিজ শক্তি দ্বারা স্বতঃ প্রমাণ।
মহর্ষি ব্যাসদেব বলেছেন -
অতএব চ নিত্যত্বম্
(বেদান্তদর্শন ১।২৯)
বেদের নিত্যতা সিদ্ধ। অতএব বেদ ঈশ্বরীয় জ্ঞান।
ইহার অতিরিক্ত বেদে অনেক মন্ত্র রয়েছে যাহা দ্বারা সিদ্ধ হয় যে সৃষ্টির আরম্ভে ঈশ্বরীয় জ্ঞানের আবশ্যকতা হয়েছে এবং এজন্য পরম ব্রহ্ম পরমেশ্বর সৃষ্টির আদিতে বেদজ্ঞান দিয়েছে যাতে সমস্ত মানব নিজ উন্নতি এবং মরণান্তে মোক্ষ কে প্রাপ্ত হতে পারে।
যেমনঃ
অপূর্বেণেষিতা বাচস্তা বদন্তি যথাযথম্।
বদন্তীর্যত্র গচ্ছন্তি তদাহুর্ব্রাহ্মণং মহত্।।
(অথর্ববেদ ১০।৮।৩৩)
অর্থাৎ সেই কারণ রহিত পরমাত্মা অপার কৃপা করে সৃষ্টির আদিতে মনুষের জ্ঞানের জন্য ব্রহ্মম - জ্ঞানেন উপদেশ দিয়েছেন যাহা দ্বারা আমরা যথার্থ জ্ঞান প্রাপ্ত হতে পারি।
উপরোক্ত প্রমাণ এবং শাস্ত্রীয় বচন দ্বারা সিদ্ধ হয় যে, মনুষ্যের সৃস্টির আদিতে নৈমিত্তিক জ্ঞানের আবশ্যকতা হয়। সেই ঈশ্বর ব্যতিত অন্য কেউ নেই যে এই জ্ঞান দান করতে পারে। যেমন পিতা নিজ পূত্রের কল্যাণার্থে সব প্রকার শিক্ষা দীক্ষা দিয়ে তাহার কল্যাণ চান। এই প্রকার ঈশ্বর নিজ সৃষ্টির কল্যাণার্থে সৃষ্টির সাথে ঋষির মাধ্যমে সত্য সনাতন পবিত্র বেদ জ্ঞান দান করেছেন যাতে মানুষ তাদের নিজ কর্তব্য অকর্তব্যের নির্ধারণ করতে পারে। ওঁ শান্তি।
Rudro Dev Arya

মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

গীতার বিভ্রান্তকর শ্লোক

নমস্কার সনাতনীগণ  আজ আমি শ্রীমদ্ভগবদগীতার একটি বিভ্রান্তকর শ্লোক নিয়ে কথা বলব। আমরা জানি গীতা হচ্ছে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুখ নিসৃত বানী।আর আমরা যে অধ্যায় কথা বলব সেটি জ্ঞান বিজ্ঞান যোগের ২০ নং শ্লোক যেখানে বলা হয়েছে 
কামৈস্তৈস্তৈর্হৃতজ্ঞানাঃ প্রপদ্যন্তেহন্যদেবতাঃ ।
তং তং নিয়মমাস্থায় প্রকৃত্যা নিয়তাঃ স্বয়া ॥৭/২০॥

কামৈঃ= কামের , তৈঃ=যাদের  তৈঃ= যাদের, হৃতজ্ঞানাঃ=  জ্ঞান অপহৃত
প্রপদ্যযন্তে,=প্রপত্তি করে। অন্য-দেবতাঃ,=
অন্য দেবদেবী
তম্ =সেই
তম্,=সেই নিয়মম্,=নিয়ম আস্থায়, প্রকৃত্যা,=প্রকৃতির নিয়তাঃ=শরনাগত
স্বয়াঃ=স্বীয়
॥২০॥
যার বাংলা অনুবাদ করলে হয়
কামনা-বাসনার দ্বারা যাদের জ্ঞান অপহৃত হয়েছে, তারা অন্য দেব-দেবীর শরণাগত হয় এবং তাদের স্বীয় স্বভাব অনুসারে বিশেষ নিয়ম পালন করে দেবতাদের উপাসনা করে।
এটা বিভ্রান্তিকর। বিধর্মীরা এটিি নিয়ে সনাতনীদের অপপ্রচার করে থাকে।
কিন্তু খুটিয়ে দেখলে বোঝা যায় এটি খুবই সোজা শ্লোক।শব্দ গুলো মিলিয়ে দেয়া হয়েছে।
কিন্তু ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এমন কোনো শ্লোক দেন নি কারন  
গীতা ৭/২১ এ তিনি বলেছেন যো যো যাং যাং তনুং ভক্তঃ শ্রদ্ধয়ার্চিতুমিচ্ছতি ।
তস্য তস্যাচলাং শ্রদ্ধাং তামেব বিদধাম্যহম্ ॥
অর্থাতপরমাত্মারূপে আমি সকলের হৃদয়ে বিরাজ করি। যখনই কেউ দেবতাদের পূজা করতে ইচ্ছা করে, তখনই আমি সেই সেই ভক্তের তাতেই অচলা শ্রদ্ধা বিধান করি ।
দুটো শ্লোকই পরষ্পর বিরেধিতা করে।তাছাড়া ৭/২২ এ দেখতে 
পাই,
স তয়া শ্রদ্ধয়া যুক্তস্তস্যারাধনমীহতে ।
লভতে চ ততঃ কামান্ময়ৈব বিহিতান্ হি তান্ ॥(৭/২২)
অর্থাতসেই ব্যক্তি শ্রদ্ধাযুক্ত হয়ে সেই দেবতার আরাধনা করেন এবং সেই দেবতার কাছ থেকে আমারই দ্বারা বিহিত কাম্য বস্তু অবশ্যই লাভ করেন।
এদুটো শ্লোক প্রমান করে ৭/২০ অনুুুুবাদে ভুল আছে যদিও সকল প্রকাশনীর গীতায় এই অর্থ অনুদিত।
এই ৭/২০ এ যে ভুল তা স্পষ্ট্র প্রমানিত হয় গীতার ৩/১২
ইষ্টান্ ভোগান্ হি বো দেবা দাস্যন্তে যজ্ঞভাবিতাঃ ।
তৈর্দত্তানপ্রদায়ৈভ্যো যো ভুঙক্তে স্তেন এব সঃ ॥
অর্থাত যে দেবতাদিগের পুজা
করে না সে চোর বলিয়া কথিত হন।
তাহলে বোঝা গেল যে গীতা ৭/২০ শ্লোক অনুুবাদ  ভুল।
তাছাড়া গীতায় এমন অনেক সংস্কৃত শব্দ যা বাংলা অনুবাদ কালে প্রথমে বসে।আবার তেমনি অনেক সংস্কৃত বাংলায় অনুবাদে পরে বসে।
তাই গীতার ৭/২০ শ্লোক এর অনুবাদ হবে
কামৈস্তৈস্তৈর্হৃতজ্ঞানাঃ প্রপদ্যন্তেহন্যদেবতাঃ ।
তং তং নিয়মমাস্থায় প্রকৃত্যা নিয়তাঃ স্বয়া ॥২০॥
অনুবাদঃ যাদের জ্ঞান অপহত হয়েছে। তারা দেবতার শরনাগত হয়ে বিবিধ নিয়ম পালন করে পুজার মাধ্যমে ইষ্ট কামনা করে।।

রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

বেদ ও গোমাতা

ওঁ তৎসৎ
#অনেক সনাতনীর মনে প্রায়শঃই প্রশ্ন জাগে যে সনাতনীরা গোমাংস ভক্ষণ করে না কেন? অনেক বিধর্মী তাদের গোমাংস ভক্ষণে প্ররোচিত করে। তারা প্রচার করে বেদে গোমাংস ভক্ষণের কোন নিষেধ নেই বরং গোমাংসভক্ষণের অনুমতি আছে। এ অপপ্রচারটা জাকির নায়েক নামক তথাকথিত পণ্ডিত(যে আদৌ সনাতনের কিছু বুঝে না) তার দ্বারা আরম্ভ হয় এবং তার লেকচার শুনে অনেকে সঠিকটা যাচাই না করে তার বাক্যকে সত্যবচন ভেবে ভুল পথে পা বাড়ায়, গোমাংসভক্ষণ এমনকি সনাতন ধর্মত্যাগ করতেও দ্বিধাবোধ করে না। তাদের জন্য অাকুল আবেদন সনাতন ধর্মের নামে প্রচারিত কুৎসাতে বিশ্বাস না করে নিজেই যাচাই করুন। যারা প্রশ্ন করেন সনাতনীরা গোমাংস ভক্ষণ করে না কেন- তার উত্তর স্বয়ং বেদে পরমেশ্বর প্রদান করেছেন-
ঋগ্বেদে গোহত্যা নিষেধ-
মাতা রুদ্রাণাং দুহিতা বসূনাং স্বসাদিত্যানামমৃতস্য নাভিঃ।
প্রনুবোচং চিকিতুষে জনায়, মা গামনাগামদিতিং বধিষ্ট।।
(ঋগ্বেদ ৮/১০১/১৫)
অনুবাদঃ গাভী রুদ্র ব্রহ্মচারী বিদ্বানগণের মাতা, নির্মাতা। দুষ্টের রোদনকর্তা বিদ্বান্, সৈনিক, সেনাপতি ইত্যাদিগণ গাভীকে মাতৃতুল্য পূজনীয়া বলে মনে করেন। গাভী বিদ্বান্ বসুগণের পুত্রী। সমাজের সংস্থাপক ব্যবস্থাপক প্রবন্ধক আদির জন্য গাভী পুত্রী-সমা পালনীয়া, রক্ষণীয়া রূপে স্বীকৃত। গাভী অমৃতের কেন্দ্র। গোরক্ষার দ্বারা চিরজীবন সমাজচেতনা লাভ হয়। গো নির্দোষ, নিষ্পাপ, অদিতি, অখণ্ডনীয়, অবধ্য সুতরাং তাকে হত্যা করো না।
যজুর্বেদে গোহত্যা নিষেধ-
ইমং সাহস্রং শতধারমুৎসং বাচ্যমানং সরিরস্যমধ্যে।
ঘৃতং দুহানামদিতিং জনাযাগ্রে মা হিংসীঃ পরমে ব্যোমন্।।(যজুঃ ১৩/৪৯)
অনুবাদঃ- এই গাভী মানুষের অসংখ্য সুখের সাধন, দুগ্ধের জন্য বিভিন্নভাবে পালনীয়া। গো, ঘৃত দুগ্ধ দাতৃ, অদিতি অখণ্ডনীয়া। হে মানব, একে হত্যা করো না।
অজস্রমিন্দুমরুষং ভুরণ্যুমগ্নিমীডে পূর্বচিত্তিং নমোভিঃ। স পর্বাভির্ঋতুশঃ কল্পমানো গাং মা হিংসীরদিতিং বিরাজম্।।
(যজুর্বেদ ১৩/৪৩)
অনুবাদঃ অক্ষয়, ঐশ্বর্য্যযুক্ত, অক্রোধ, পূর্বতন ঋষিদের দ্বারা গৃহীত অন্ন দ্বারা অগ্নিকে স্তুতি করি। হে অগ্নি, প্রতিপর্বে প্রতিঋতুতে কর্মের সম্পাদক, তুমি অদিতি, নিরীহ গোসমূহকে হত্যা করো না।
অথর্ববেদে গোসমূহের নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে।
সংজগ্মানা অবিভ্যুষিরস্মিন্ গোষ্ঠে করীষিণীঃ।
বিভ্রতীঃ সোম্যং মধ্বনমীবা উপেতন।।
(অথর্ববেদ ৩/১৪/৩)
অনুবাদঃ- এই গোশালায় ধেনু সকল নির্ভয়ে থাকুক, একসঙ্গে মিলিয়া বিচরণ করুক, গোময় উৎপন্ন করুক, অমৃতময় দুগ্ধ ধারণ করুক এবং নীরোগ হইয়া আমার নিকট আসুক।
যূয়ং গাবো মেদয়থা কৃশং চিদশ্রীরং চিৎ কৃণুথা সুপ্রতীকম্।
ভদ্রং গৃহং কৃণুথ ভদ্রবাচো বৃহদ্বো বয় উচ্যতে সভাসু।।
(অথর্ববেদ ৪/২১/৬)
অনুবাদঃ হে ধেনু সকল, তোমরা কৃশ মনুষ্যকে হৃষ্ট পুষ্ট কর। বিশ্রী মানুষকে সুশ্রী কর, গৃহকে মঙ্গলময় কর। তোমাদের রব মঙ্গলময়। সভাসমূহে তোমাদের বহু গুণ বর্ণনা করা হয়।
শুধু তাই নয়, গোহত্যাকারীদের সীসার গুলি দ্বারা হত্যা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে -
যদি নো গাং হংসি যদ্যশ্বং যদি পূরুষম্।
তন্ত্বা সীসেন বিধ্যামো যথা নোহসি অবীরহা।।
(অথর্ববেদ ১/১৬/৪)
অনুবাদঃ যদি তুমি আমাদের গাভী সকল হত্যা কর, যদি আমাদের ঘোড়া ও পুরুষদের হত্যা কর, তাহলে তোমাকে সীসের গুলি করে ধ্বংস করা হবে যাতে, তুমি আমাদের কোন প্রকার ক্ষতি সাধন করতে না পারো।
গোঘাতকদের রাজ্য থেকে বহিষ্কার করার আদেশ এবং তাদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়ার আদেশ পর্য্যন্ত দেয়া হয়েছে।
বিষং গাং বা যাতুধানা ভবন্তামা বৃশ্চন্তামদিতয়ে দুরেবাঃ।
পরেনৈনান্ দেবঃ সবিতা দদাতু পরা ভাগমোষ ধীনাং জয়ন্তাম্।।
(অথর্ববেদ ৮/৩/১৬)
অনুবাদঃ যদি প্রজার উপর অত্যাচারকারীরা গবাদিপশুকে বিষ দেয় ও গাভীকে কর্তন করে, তবে রাজা এদের রাজ্য থেকে বহিষ্কৃত করুন অথবা তাদের সর্বস্ব কেড়ে নিন এবং তারা যেন অন্ন ও ঔষধের অংশ প্রাপ্ত না হয়।
তাছাড়া যজুর্বেদ ৩০/১৮ তে গোহত্যাকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিধান দেয়া হয়েছে-
অন্তকায় গোঘাতকম্।।
অর্থাৎ যে গোঘাতক তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক।
এর চেয়ে বেশী গোহত্যাকে মহাপাপ ও মহাপরাধ প্রতিপন্ন করার অন্য আদেশ আর কী হতে পারে?
এছাড়া মহাভারতের শান্তিপর্বে ২৬২ অধ্যায়ের ৪৭ শ্লোকে বলা হয়েছে-
অঘ্ন্যা ইতি গাবাং নাম, ক্ব এতা হন্তুমর্হতি।
মহচ্চকারাকুশলং বৃষং গাং বা লভেত্তু যঃ।।
অনুবাদঃ গাভীর অপর নাম অঘ্ন্যা, এরা অবধ্যা। এই সকল গাভী ও বৃষকে হত্যা করে সে মহাপাপ করে।
 ব্যাস সংহিতার প্রথম অধ্যায়ের দ্বাদশ শ্লোকে গোমাংসভোজীদের নীচু, হীন, অন্ত্যজ জাতি বলা হয়েছে।
এরকম অসংখ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা যায় যেখানে গোহত্যা মহাপাপ বলে পরিগণিত এবং গোহত্যাকারীদের শাস্তি দিতে বলা হয়েছে। বৈদিক আর্য্য সভ্যতায় বর্তমানে শাকাহারী ও মাংসাহারী দু'ধরনের লোক রয়েছে। যারা শাকাহারী তারা তো মাংস খায়ই না, যারা আর্য সভ্যতায় ঘোরতর মাংসাহারী তারাও গোমাংস ভক্ষণকে মহাপাপ ও অধর্ম বিবেচনা করে। গোহত্যাকারী তথা ওঁ তৎসৎ
#অনেক সনাতনীর মনে প্রায়শঃই প্রশ্ন জাগে যে সনাতনীরা গোমাংস ভক্ষণ করে না কেন? অনেক বিধর্মী তাদের গোমাংস ভক্ষণে প্ররোচিত করে। তারা প্রচার করে বেদে গোমাংস ভক্ষণের কোন নিষেধ নেই বরং গোমাংসভক্ষণের অনুমতি আছে। এ অপপ্রচারটা জাকির নায়েক নামক তথাকথিত পণ্ডিত(যে আদৌ সনাতনের কিছু বুঝে না) তার দ্বারা আরম্ভ হয় এবং তার লেকচার শুনে অনেকে সঠিকটা যাচাই না করে তার বাক্যকে সত্যবচন ভেবে ভুল পথে পা বাড়ায়, গোমাংসভক্ষণ এমনকি সনাতন ধর্মত্যাগ করতেও দ্বিধাবোধ করে না। তাদের জন্য অাকুল আবেদন সনাতন ধর্মের নামে প্রচারিত কুৎসাতে বিশ্বাস না করে নিজেই যাচাই করুন। যারা প্রশ্ন করেন সনাতনীরা গোমাংস ভক্ষণ করে না কেন- তার উত্তর স্বয়ং বেদে পরমেশ্বর প্রদান করেছেন-
ঋগ্বেদে গোহত্যা নিষেধ-
মাতা রুদ্রাণাং দুহিতা বসূনাং স্বসাদিত্যানামমৃতস্য নাভিঃ।
প্রনুবোচং চিকিতুষে জনায়, মা গামনাগামদিতিং বধিষ্ট।।
(ঋগ্বেদ ৮/১০১/১৫)
অনুবাদঃ গাভী রুদ্র ব্রহ্মচারী বিদ্বানগণের মাতা, নির্মাতা। দুষ্টের রোদনকর্তা বিদ্বান্, সৈনিক, সেনাপতি ইত্যাদিগণ গাভীকে মাতৃতুল্য পূজনীয়া বলে মনে করেন। গাভী বিদ্বান্ বসুগণের পুত্রী। সমাজের সংস্থাপক ব্যবস্থাপক প্রবন্ধক আদির জন্য গাভী পুত্রী-সমা পালনীয়া, রক্ষণীয়া রূপে স্বীকৃত। গাভী অমৃতের কেন্দ্র। গোরক্ষার দ্বারা চিরজীবন সমাজচেতনা লাভ হয়। গো নির্দোষ, নিষ্পাপ, অদিতি, অখণ্ডনীয়, অবধ্য সুতরাং তাকে হত্যা করো না।
যজুর্বেদে গোহত্যা নিষেধ-
ইমং সাহস্রং শতধারমুৎসং বাচ্যমানং সরিরস্যমধ্যে।
ঘৃতং দুহানামদিতিং জনাযাগ্রে মা হিংসীঃ পরমে ব্যোমন্।।(যজুঃ ১৩/৪৯)
অনুবাদঃ- এই গাভী মানুষের অসংখ্য সুখের সাধন, দুগ্ধের জন্য বিভিন্নভাবে পালনীয়া। গো, ঘৃত দুগ্ধ দাতৃ, অদিতি অখণ্ডনীয়া। হে মানব, একে হত্যা করো না।
অজস্রমিন্দুমরুষং ভুরণ্যুমগ্নিমীডে পূর্বচিত্তিং নমোভিঃ। স পর্বাভির্ঋতুশঃ কল্পমানো গাং মা হিংসীরদিতিং বিরাজম্।।
(যজুর্বেদ ১৩/৪৩)
অনুবাদঃ অক্ষয়, ঐশ্বর্য্যযুক্ত, অক্রোধ, পূর্বতন ঋষিদের দ্বারা গৃহীত অন্ন দ্বারা অগ্নিকে স্তুতি করি। হে অগ্নি, প্রতিপর্বে প্রতিঋতুতে কর্মের সম্পাদক, তুমি অদিতি, নিরীহ গোসমূহকে হত্যা করো না।
অথর্ববেদে গোসমূহের নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে।
সংজগ্মানা অবিভ্যুষিরস্মিন্ গোষ্ঠে করীষিণীঃ।
বিভ্রতীঃ সোম্যং মধ্বনমীবা উপেতন।।
(অথর্ববেদ ৩/১৪/৩)
অনুবাদঃ- এই গোশালায় ধেনু সকল নির্ভয়ে থাকুক, একসঙ্গে মিলিয়া বিচরণ করুক, গোময় উৎপন্ন করুক, অমৃতময় দুগ্ধ ধারণ করুক এবং নীরোগ হইয়া আমার নিকট আসুক।
যূয়ং গাবো মেদয়থা কৃশং চিদশ্রীরং চিৎ কৃণুথা সুপ্রতীকম্।
ভদ্রং গৃহং কৃণুথ ভদ্রবাচো বৃহদ্বো বয় উচ্যতে সভাসু।।
(অথর্ববেদ ৪/২১/৬)
অনুবাদঃ হে ধেনু সকল, তোমরা কৃশ মনুষ্যকে হৃষ্ট পুষ্ট কর। বিশ্রী মানুষকে সুশ্রী কর, গৃহকে মঙ্গলময় কর। তোমাদের রব মঙ্গলময়। সভাসমূহে তোমাদের বহু গুণ বর্ণনা করা হয়।
শুধু তাই নয়, গোহত্যাকারীদের সীসার গুলি দ্বারা হত্যা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে -
যদি নো গাং হংসি যদ্যশ্বং যদি পূরুষম্।
তন্ত্বা সীসেন বিধ্যামো যথা নোহসি অবীরহা।।
(অথর্ববেদ ১/১৬/৪)
অনুবাদঃ যদি তুমি আমাদের গাভী সকল হত্যা কর, যদি আমাদের ঘোড়া ও পুরুষদের হত্যা কর, তাহলে তোমাকে সীসের গুলি করে ধ্বংস করা হবে যাতে, তুমি আমাদের কোন প্রকার ক্ষতি সাধন করতে না পারো।
গোঘাতকদের রাজ্য থেকে বহিষ্কার করার আদেশ এবং তাদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়ার আদেশ পর্য্যন্ত দেয়া হয়েছে।
বিষং গাং বা যাতুধানা ভবন্তামা বৃশ্চন্তামদিতয়ে দুরেবাঃ।
পরেনৈনান্ দেবঃ সবিতা দদাতু পরা ভাগমোষ ধীনাং জয়ন্তাম্।।
(অথর্ববেদ ৮/৩/১৬)
অনুবাদঃ যদি প্রজার উপর অত্যাচারকারীরা গবাদিপশুকে বিষ দেয় ও গাভীকে কর্তন করে, তবে রাজা এদের রাজ্য থেকে বহিষ্কৃত করুন অথবা তাদের সর্বস্ব কেড়ে নিন এবং তারা যেন অন্ন ও ঔষধের অংশ প্রাপ্ত না হয়।
তাছাড়া যজুর্বেদ ৩০/১৮ তে গোহত্যাকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিধান দেয়া হয়েছে-
অন্তকায় গোঘাতকম্।।
অর্থাৎ যে গোঘাতক তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক।
এর চেয়ে বেশী গোহত্যাকে মহাপাপ ও মহাপরাধ প্রতিপন্ন করার অন্য আদেশ আর কী হতে পারে?
এছাড়া মহাভারতের শান্তিপর্বে ২৬২ অধ্যায়ের ৪৭ শ্লোকে বলা হয়েছে-
অঘ্ন্যা ইতি গাবাং নাম, ক্ব এতা হন্তুমর্হতি।
মহচ্চকারাকুশলং বৃষং গাং বা লভেত্তু যঃ।।
অনুবাদঃ গাভীর অপর নাম অঘ্ন্যা, এরা অবধ্যা। এই সকল গাভী ও বৃষকে হত্যা করে সে মহাপাপ করে।
 ব্যাস সংহিতার প্রথম অধ্যায়ের দ্বাদশ শ্লোকে গোমাংসভোজীদের নীচু, হীন, অন্ত্যজ জাতি বলা হয়েছে।
এরকম অসংখ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা যায় যেখানে গোহত্যা মহাপাপ বলে পরিগণিত এবং গোহত্যাকারীদের শাস্তি দিতে বলা হয়েছে। বৈদিক আর্য্য সভ্যতায় বর্তমানে শাকাহারী ও মাংসাহারী দু'ধরনের লোক রয়েছে। যারা শাকাহারী তারা তো মাংস খায়ই না, যারা আর্য সভ্যতায় ঘোরতর মাংসাহারী তারাও গোমাংস ভক্ষণকে মহাপাপ ও অধর্ম বিবেচনা করে। গোহত্যাকারী তথা
 ওঁ তৎসৎ
#অনেক সনাতনীর মনে প্রায়শঃই প্রশ্ন জাগে যে সনাতনীরা গোমাংস ভক্ষণ করে না কেন? অনেক বিধর্মী তাদের গোমাংস ভক্ষণে প্ররোচিত করে। তারা প্রচার করে বেদে গোমাংস ভক্ষণের কোন নিষেধ নেই বরং গোমাংসভক্ষণের অনুমতি আছে। এ অপপ্রচারটা জাকির নায়েক নামক তথাকথিত পণ্ডিত(যে আদৌ সনাতনের কিছু বুঝে না) তার দ্বারা আরম্ভ হয় এবং তার লেকচার শুনে অনেকে সঠিকটা যাচাই না করে তার বাক্যকে সত্যবচন ভেবে ভুল পথে পা বাড়ায়, গোমাংসভক্ষণ এমনকি সনাতন ধর্মত্যাগ করতেও দ্বিধাবোধ করে না। তাদের জন্য অাকুল আবেদন সনাতন ধর্মের নামে প্রচারিত কুৎসাতে বিশ্বাস না করে নিজেই যাচাই করুন। যারা প্রশ্ন করেন সনাতনীরা গোমাংস ভক্ষণ করে না কেন- তার উত্তর স্বয়ং বেদে পরমেশ্বর প্রদান করেছেন-
ঋগ্বেদে গোহত্যা নিষেধ-
মাতা রুদ্রাণাং দুহিতা বসূনাং স্বসাদিত্যানামমৃতস্য নাভিঃ।
প্রনুবোচং চিকিতুষে জনায়, মা গামনাগামদিতিং বধিষ্ট।।
(ঋগ্বেদ ৮/১০১/১৫)
অনুবাদঃ গাভী রুদ্র ব্রহ্মচারী বিদ্বানগণের মাতা, নির্মাতা। দুষ্টের রোদনকর্তা বিদ্বান্, সৈনিক, সেনাপতি ইত্যাদিগণ গাভীকে মাতৃতুল্য পূজনীয়া বলে মনে করেন। গাভী বিদ্বান্ বসুগণের পুত্রী। সমাজের সংস্থাপক ব্যবস্থাপক প্রবন্ধক আদির জন্য গাভী পুত্রী-সমা পালনীয়া, রক্ষণীয়া রূপে স্বীকৃত। গাভী অমৃতের কেন্দ্র। গোরক্ষার দ্বারা চিরজীবন সমাজচেতনা লাভ হয়। গো নির্দোষ, নিষ্পাপ, অদিতি, অখণ্ডনীয়, অবধ্য সুতরাং তাকে হত্যা করো না।
যজুর্বেদে গোহত্যা নিষেধ-
ইমং সাহস্রং শতধারমুৎসং বাচ্যমানং সরিরস্যমধ্যে।
ঘৃতং দুহানামদিতিং জনাযাগ্রে মা হিংসীঃ পরমে ব্যোমন্।।(যজুঃ ১৩/৪৯)
অনুবাদঃ- এই গাভী মানুষের অসংখ্য সুখের সাধন, দুগ্ধের জন্য বিভিন্নভাবে পালনীয়া। গো, ঘৃত দুগ্ধ দাতৃ, অদিতি অখণ্ডনীয়া। হে মানব, একে হত্যা করো না।
অজস্রমিন্দুমরুষং ভুরণ্যুমগ্নিমীডে পূর্বচিত্তিং নমোভিঃ। স পর্বাভির্ঋতুশঃ কল্পমানো গাং মা হিংসীরদিতিং বিরাজম্।।
(যজুর্বেদ ১৩/৪৩)
অনুবাদঃ অক্ষয়, ঐশ্বর্য্যযুক্ত, অক্রোধ, পূর্বতন ঋষিদের দ্বারা গৃহীত অন্ন দ্বারা অগ্নিকে স্তুতি করি। হে অগ্নি, প্রতিপর্বে প্রতিঋতুতে কর্মের সম্পাদক, তুমি অদিতি, নিরীহ গোসমূহকে হত্যা করো না।
অথর্ববেদে গোসমূহের নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে।
সংজগ্মানা অবিভ্যুষিরস্মিন্ গোষ্ঠে করীষিণীঃ।
বিভ্রতীঃ সোম্যং মধ্বনমীবা উপেতন।।
(অথর্ববেদ ৩/১৪/৩)
অনুবাদঃ- এই গোশালায় ধেনু সকল নির্ভয়ে থাকুক, একসঙ্গে মিলিয়া বিচরণ করুক, গোময় উৎপন্ন করুক, অমৃতময় দুগ্ধ ধারণ করুক এবং নীরোগ হইয়া আমার নিকট আসুক।
যূয়ং গাবো মেদয়থা কৃশং চিদশ্রীরং চিৎ কৃণুথা সুপ্রতীকম্।
ভদ্রং গৃহং কৃণুথ ভদ্রবাচো বৃহদ্বো বয় উচ্যতে সভাসু।।
(অথর্ববেদ ৪/২১/৬)
অনুবাদঃ হে ধেনু সকল, তোমরা কৃশ মনুষ্যকে হৃষ্ট পুষ্ট কর। বিশ্রী মানুষকে সুশ্রী কর, গৃহকে মঙ্গলময় কর। তোমাদের রব মঙ্গলময়। সভাসমূহে তোমাদের বহু গুণ বর্ণনা করা হয়।
শুধু তাই নয়, গোহত্যাকারীদের সীসার গুলি দ্বারা হত্যা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে -
যদি নো গাং হংসি যদ্যশ্বং যদি পূরুষম্।
তন্ত্বা সীসেন বিধ্যামো যথা নোহসি অবীরহা।।
(অথর্ববেদ ১/১৬/৪)
অনুবাদঃ যদি তুমি আমাদের গাভী সকল হত্যা কর, যদি আমাদের ঘোড়া ও পুরুষদের হত্যা কর, তাহলে তোমাকে সীসের গুলি করে ধ্বংস করা হবে যাতে, তুমি আমাদের কোন প্রকার ক্ষতি সাধন করতে না পারো।
গোঘাতকদের রাজ্য থেকে বহিষ্কার করার আদেশ এবং তাদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়ার আদেশ পর্য্যন্ত দেয়া হয়েছে।
বিষং গাং বা যাতুধানা ভবন্তামা বৃশ্চন্তামদিতয়ে দুরেবাঃ।
পরেনৈনান্ দেবঃ সবিতা দদাতু পরা ভাগমোষ ধীনাং জয়ন্তাম্।।
(অথর্ববেদ ৮/৩/১৬)
অনুবাদঃ যদি প্রজার উপর অত্যাচারকারীরা গবাদিপশুকে বিষ দেয় ও গাভীকে কর্তন করে, তবে রাজা এদের রাজ্য থেকে বহিষ্কৃত করুন অথবা তাদের সর্বস্ব কেড়ে নিন এবং তারা যেন অন্ন ও ঔষধের অংশ প্রাপ্ত না হয়।
তাছাড়া যজুর্বেদ ৩০/১৮ তে গোহত্যাকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিধান দেয়া হয়েছে-
অন্তকায় গোঘাতকম্।।
অর্থাৎ যে গোঘাতক তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক।
এর চেয়ে বেশী গোহত্যাকে মহাপাপ ও মহাপরাধ প্রতিপন্ন করার অন্য আদেশ আর কী হতে পারে?
এছাড়া মহাভারতের শান্তিপর্বে ২৬২ অধ্যায়ের ৪৭ শ্লোকে বলা হয়েছে-
অঘ্ন্যা ইতি গাবাং নাম, ক্ব এতা হন্তুমর্হতি।
মহচ্চকারাকুশলং বৃষং গাং বা লভেত্তু যঃ।।
অনুবাদঃ গাভীর অপর নাম অঘ্ন্যা, এরা অবধ্যা। এই সকল গাভী ও বৃষকে হত্যা করে সে মহাপাপ করে।
 ব্যাস সংহিতার প্রথম অধ্যায়ের দ্বাদশ শ্লোকে গোমাংসভোজীদের নীচু, হীন, অন্ত্যজ জাতি বলা হয়েছে।
এরকম অসংখ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা যায় যেখানে গোহত্যা মহাপাপ বলে পরিগণিত এবং গোহত্যাকারীদের শাস্তি দিতে বলা হয়েছে। বৈদিক আর্য্য সভ্যতায় বর্তমানে শাকাহারী ও মাংসাহারী দু'ধরনের লোক রয়েছে। যারা শাকাহারী তারা তো মাংস খায়ই না, যারা আর্য সভ্যতায় ঘোরতর মাংসাহারী তারাও গোমাংস ভক্ষণকে মহাপাপ ও অধর্ম বিবেচনা করে। গোহত্যাকারী তথা যবন ও বিদেশীরা বৈদিক আর্য সংস্কৃতি নষ্ট করার হাজারো চেষ্টা চালাচ্ছে, বেদের ব্যাখ্যা দূষিত করার চেষ্টা করছে যেমন মেক্সমুলার, গ্রিফিথ, হরফ প্রকাশনী ইত্যাদি বেদের অনুবাদ করার নামে বেদে গোমাংস ঢুকানোর মাধ্যমে সনাতনীদের মুসলিম, খ্রিস্টানে পরিণত করার অপচেষ্টা করেছিল যার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক সনাতনী বিভ্রান্ত হয়ে সত্যতা যাচাই না করে গোমাংস ভক্ষণ ও খ্রিস্টান ও মুসলিম হয়ে যায়। তাই সকলের প্রতি অনুরোধ রইল কারো কথায় বিভ্রান্ত হওয়ার আগে পোস্টটি পড়ে নিন এবং পোস্টটা সংরক্ষণ করে রাখুন এবং সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিন।
লেখকঃ শ্রী নিলয় ঘোষ
জয় শ্রীরাম। জয় শ্রীকৃষ্ণ।

কৃষ্ণ ও তার সম্পর্কে তথ্য

Who is krishna? is he god ?
কেউ শ্রীকৃষ্ণকে অবতার কেউ ভগবান কেউ
 বা পুরুষোত্তম বলে জাহির করেন।
এমন অনেক ব্যাক্তি আছে যারা কনফিউজড হয়ে যান আসলে কৃৃৃৃষ্ণ কে?
কিছু ভন্ড অপপ্রচারকারীদের প্রশ্ন
১/ কৃষ্ণ কি ঈশ্বর?  ঈশ্বর কি মায়ের গর্ভে জন্ম নেন?
তাদের বলব তোমরা ত কৃষ্ণকে নিয়ে কনফিউজড। তোমাদের বেসিক জ্ঞানই নেই?
এখন আসি কৃষ্ণ  নিজের সম্পর্কে গীতায় কি বলেছেন
অজোহপি সন্নব্যয়াত্মা ভূতানামীশ্বরোহপি সন্।
প্রকৃতিং স্বামধিষ্ঠায় সম্ভবাম্যাত্মমায়য়া।। (গীতা ৪/৬)
আমার জন্ম নাই মৃত্যু নাই। আমি সর্বভূূূূতের ঈশ্বর। আমি নিজের মায়াবলে শরীর ধারন
করিয়া থাকি।
এখানে একটু কনফিউজ হতে পারে যে শ্রীকৃষ্ণ একবার বলল তার জন্ম নাই আবার বললেন তিনি মায়াবলে শরীর ধারন করেন
এইটা জন্য তিনি পরবর্তী শ্লোকে (গীতা৪/৭) এ বলেছেন যে ধর্মের অধঃপতন হলে অধর্মের আবির্ভাব ঘটলে শিষ্টদের রক্ষা   দৃষ্কিতি নাশে পৃথিবীতে আবির্ভুত হন।
এই দুটো শ্লোকে বোঝাযায় যে ঈশ্বরের জন্ম মৃত্যু নেই। তিনি নিরাকার কিন্তু তিনি চাইলে  শরীর ধারন করে সাকার হতে পারেন।
একটা উদাহারন দেই আমাদের শরীর এর কেন্দ্র আত্মা। আত্মা শরীর ছেড়ে চলে গেলে তাকে সহজ ভাষায় মৃত্যু বলে। এই আত্মা ঈশ্বরের ক্ষুুদ্র অংশ।
২/পৃথিবীতে বিশ্বযুদ্ধে কৃষ্ণ এল না?
এই প্রশ্ন যারা করে তাদের বলল আমাকে
গীতা ৪/৭ এর কোনো একটা কারন দেখান কৃৃৃৃষ্ণর আসার
আর তাদের কাছে প্রশ্ন বিশেষ করে  নবীর অনুসারী মেন্টাল দের যে আল্লাহ কি শক্তি হীন নাকি বাংংলাদেশ এর ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধে
মানুষকে ভারতে আশ্রয় নিতে হল। রোহিঙ্গা
দের মায়ানমার থেকে তাড়িয়ে দিল।আল্লাহে
আরশে বসে কিছু করতে পারল না।নাকি আল্লাহ কাবায় বন্দী?

কৃত্তিবাসী রামায়নের মিথ্যাচার

সনাতনীরা সাবধান ####
বাল্মীকি রামায়ণ ও কৃত্তিবাস রামায়ণের যে পার্থক্য গুলো সহজেই পাওয়া যায়...
১। বাল্মীকি রামায়ণের মা সীতা আর কৃত্তিবাস রামায়ণের মা সীতার মাঝে অনেক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। বাল্মীকির রামায়ণে মা সীতা বীরাঙ্গনা। অপহরণকালে তিনি ক্রুদ্ধা সিংহিনীর মত গর্জন করে বলছেন,
‘ধিক্ তে শৌর্য্যঞ্চ সত্ত্বঞ্চ ষৎ ত্বয়া কথিতং তদা’।
আর অন্যদিকে কৃত্তিবাসের বর্ণনা হলো,
‘জানকী কাঁপেন যেন কলার বাগুড়ি’।
বুঝলেন কিছু ? বাল্মীকির রামায়ণে মা সীতা রাবণের সাথে রেগে তর্ক করছেন, গর্জন করছেন। অপরদিকে কৃত্তিবাস লিখলেন মা সীতা অপহরণকালে ভয়ে কাঁপছে! একজন অবলা স্বরূপ।
২। বাল্মীকি রামায়ণে বাল্মীকি একজন তপস্বী ছিলেন। উনি রাময়ণের প্রথম শ্লোকেই একজন তপস্বী। কিন্তু কৃত্তিবাস রামায়ণে বাল্মীকি ছিলেন রত্নাকর দস্যু! মরা মরা জপ করে বাল্মীকি হয়েছেন! এমন কথা বাল্মীকি রামায়ণে নেই।
৩। কৃত্তিবাস রামায়ণে রামের দূর্গাপূজার উল্লেখ রয়েছে বা অকাল বোধনের কথা আছে। এই দূর্গাপূজার কথাও বাল্মীকি রামায়ণে নেই!
৪। কৃত্তিবাস রামায়ণে পাওয়া যায় শ্রী রামের জন্মের ৬০ হাজার বছর পূর্বে রামায়ণ রচনা হয়। এটাও মিথ্যা। কারণ বাল্মীকি রামায়ণে পাওয়া যায় নারদকে বাল্মীকি প্রশ্ন করছেন,
‘কোন্বস্মিন্ সাম্প্রতং লোকে গুনবান্ কশ্চ বীর্য্যবাণ্’ এই প্রশ্ন থেকেই বুঝা যায় রামায়ণ রচনাকালে শ্রী রাম তখন রাজত্ব করছেন।
মূল রামায়ণে স্পষ্ট বলা আছে,
‘প্রাপ্ত রাজস্য রামস্য বাল্মীকির্ভগবান ঋষীঃ।’
(আদিকাণ্ড, ৪/১)।।
৫। কৃত্তিবাস রামায়ণে পাওয়া যায়, যজ্ঞ রক্ষার জন্য বিশ্বামিত্রের সাথে রাম লক্ষণকে পাঠাতে হবে জেনে রাজা দশরথ বিশ্বামিত্রের সাথে ছলনা করেন। অথচ বাল্মীকি রামায়নে দশরথ প্রসন্নচিত্তে, নির্ভয়ে, নিশ্চিন্তে বিশ্বামিত্রের সাথে রাম লক্ষণকে পাঠিয়েছিলেন।
৬। কৃত্তবাস রামায়ণে, গৌতমপত্নী অহল্যা পাথর হয়েছিলেন। রামের চরণ স্পর্শে তিনি মনুষ্য শরির প্রাপ্ত হন। অথচ বাল্মীকি রাময়ায়নে পাই, অহল্যা দেবী লোকচুক্ষুর অন্তরালে থেকে কঠোর ব্রহ্মচারিণী জীবন যাপন করেছিলেন।
‘বাতভক্ষ্যা নিরাহারা তপ্যন্তী ভস্মশায়িনী’।।
৭। কৃত্তিবাস রামায়নে, রাবণ বিভিষণকে পদাঘাত করায় সে রামের কাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু বাল্মীকি রামায়ণে রাবন কেবল ক্রোধী হয়ে তিরস্কার করেছিলেন। বরং বিভীষণ রাবনের সেই তিরস্কার সহ্য করতে না পেরে বারণকে গালি দিয়ে প্রস্থান করেন।
৮। কৃত্তিবাস রামায়ণে, হনুমান সূর্যকে বগলদাবা করে গন্ধমাদন পর্ব্বত মাথায় করে নিয়ে আসা। কালনেমি সংবাদ। নন্দী গ্রামে ভরতের সাথে হনুমানের সাক্ষাৎ। সমুদ্রলঙ্ঘনের সময় হনুমানের সাথে রাক্ষসী সিংহিকার সাক্ষাৎ - এই সমস্ত কিছুই বাল্মীকি রামায়ণে নেই।
৯। কৃত্তিবাস রামায়ণের মহীরাবণ বধ, অহীরাবণ বধ, অতিকায়, বীরবাহু তরণীসেন প্রভৃতির কাটামুণ্ডের রাম নাম উচ্চারণ করার কাহিনীও বাল্মীকি রামায়ণে নেই।
১০। কৃত্তিবাস রামায়নে লক্ষণের চৌদ্দ বছর ধরে ফল আনয়নের কাহনী, লবকুশের যুদ্ধাদি সহ সমগ্র উত্তর কাণ্ডই বাল্মীকি রামায়ণে পাওয়া যায় না!
এখন এই কৃত্তিবাসী রামায়ণের প্রকারভেদ যদি বলি তাহলে চমকে উঠবেন। কারণ, কৃত্তিবাসের নামকরণে প্রায় দেড়শত রামায়ণ পাওয়া যায়! যা একটির সাথে আরেকটির অনেক অমিল খোঁজে পাওয়া যায়। বটতলা প্রকাশিত কৃত্তিবাসী রামায়ণ ইদানীংকালের প্রচার বেশি। কিন্তু সত্যি হলো এই রামায়ণের লেখক কৃত্তিবাস নয়! ইহা পণ্ডিত জয়গোপাল তর্কালঙ্কার কর্ত্তৃক পরবর্তিতে লিপিবদ্ধ হয়।
আবার ত্রিপুরা শ্রীহট্টতে যে সব কৃত্তিবাসী রামায়ণ পাওয়া যায় সেগুলোতে মহীরাবণ বধ, অহীরাবণ বধ, অতিকায়, বীরবাহু তরণীসেন প্রভৃতির কাটামুণ্ডের রাম নাম উচ্চারণ করার কাহিনী গুলো মিসিং। তো, বুঝতেই পারছেন কবির ভাষায় রামায়ণ কাহিনীতে পর্যায়ক্রমে শুধু ঘঠনাক্রম বেড়েই এসেছে। মূল রামায়ণে পাওয়া যায় বাল্মীকি নারদের কাছে জানতে চাইলেন, ভূমণ্ডলের শ্রেষ্ঠ রাজা কে ? জ্ঞানেগুনে সত্যনিষ্ঠা এবং প্রজানুরঞ্জনে আদর্শ চরিত্র কার ? উত্তরে, নারদ শ্রীরাম বর্ণনা শুরু করলেন। নারদের সেই সব কাহীনি শুনে যখন উনার কবিত্ব জেগে উঠলো।।(সংগৃহীত)

শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

মেন্টাল ধর্মপ্রচারকের প্রশ্নের জবাব

ইসলাম প্রচারক এবং সনাতনে অপপ্রচার কারী রাসেদুলের ১৬টি প্রশ্নের উত্তর এবং পাল্টা প্রশ্ন।।👇👇

★১) হিন্দু ধর্মগ্রন্থে দূর্গা, কালি,লক্ষী,সরস্বতীপূজা সহ কোন পূজা করার নির্দেশ নাই। এগুলো নাম চাইনি এসকল পূজার অনুমতি দেখান? কোন কোন পূজার অনুমতি রেফারেনস দিন?
★২) কোন পূজা কিভাবে পালন করবে রেফারেনস দিন?
★৩) কোন দেব দেবদবী, কোন ঈশ্বরের মূর্তি কেমন দলিল দেখান?
★৪) প্রমান করুন কৃষন ঈশ্বর? তাহলে আমি প্রমান করব কৃষন ঈশ্বর নন। যদি বলেন কৃষন ঈশ্বর নন, তবে আমি হিন্দু ধর্মগ্রন্থ হতে দলিল দিব কৃষন ঈশ্বর। অর্থাৎ, পরস্পর বিরোধ।
★ ৫) কোন ধর্মগ্রন্থ কে কখন কার উপর অবতীর্ণ হল?
★৬) ঈশ্বর এর স্ত্রী সন্তান কেন লাগবে?
★৭) হিন্দু ধর্মগ্রন্থে ধর্মিয় কিছুই নাই, পূজা, ভক্ষন বা হালাল হারাম, বিবাহ কাকে নিষিদ্ধ বলা নাই( মনুসংহিতা হতে ৭-১৪ পুরুষ মানতে ৭০০-৮০০ বছর লাগবে।
★৮) হিন্দু ধর্মগ্রন্থে কোথাও বলেনাই, ঈশ্বর কর্তৃক প্রেরিত।
★৯) হিন্দু ধর্মগ্রন্থ হতে একটা মাত্র অলৌকিক বুঝায় শ্লোক দেখান, আমি কুরআন হতে শত দেখাব।
★১০) এক ঈশ্বরের বউ এর সাথে আরেক ঈশ্বরের বউ ও ঈশ্বরের সম্পর্কে কি?
★১১) গিতা ধর্মগ্রন্থ নয়- কারন কাব্য মহাভরতেরর একাংশ নিয়ে গিতা বানাল।। যেহেতু মহাভারত ধরমগ্রন্থ নয়। গিতা ধরমগ্রন্থ হলে মহাভারত ও কেন ধরমগ্রন্থ নয়?
★১২) সকল ঈশ্বর কেন বারবার ভারতেই জন্মেন? সব ঈশ্বর কেন ভারতেই বিয়া করেন?
★১৩) ভারতিয় উপমহাদেশের বাইরে জন্মসূত্রে হিন্দু নাই কেন?
★১৪) কল্কিও কেন হিন্দু মতে ঈশ্বর হয়ে আবার ভারতেই জন্মিবেন? বিয়া ও করিবেন?
★১৫) ঈশ্বর কেন পৃথিবি নিকৃষ্ট, ঘৃন্য তম প্রানি শুকর ( বরাহ) অবতার হয়ে জন্মেন? এছাড়া মাছ( মৎস্য) সহ বহু আজগুবি ঈশ্বর।
★১৬) হিন্দুদের সৃষ্টিকর্তার প্রতীক ( ওম বলে),সেই প্রতীক (যা দেখতে আল্লাহু আরবি লেখা)। হিন্দুরা কেন এমন লিখেন? দলিল দেখান। এটা দেখতে আল্লাহু লিখলে আরবীতে যেমন দেখায়। আরবি অক্ষরে আলিফ, লাম,হা - সাথে,যবর,পেশ,খাড়া যবর, তাশদীদ মিলে হয় এমন।।তাহলে মুসলিমরা লিখতেই পারে। কিন্ত কেন এমন লিখেন?
]]--------------------------------------------------------------------->>#১হিন্দু ধর্মগ্রন্থে দূর্গা, কালি,লক্ষী,সরস্বতীপূজা সহ কোন পূজা করার নির্দেশ :-

ঋগবেদ ১০/১২৫- দেবী সূক্ত
http://back2thevedas.blogspot.com/2016/10/blog-post_5.html?m=1

সরস্বতী , লক্ষ্মী ও পার্বতী। শাক্তধর্ম অনুযায়ী, এই ত্রিমূর্তি মহাশক্তির এক প্রকাশ।
https://bn.m.wikipedia.org/wiki/ত্রিদেবী

👉 মানুষ মাত্রই জড়
কামনা-বাসনা দ্বারা জড়িত তাই তারা
মূর্তি নির্মিত দেবতাদের উপাসনা করছে
ও করবেও অর্থাৎ সাকারবাদি। কিন্তু
যাদের মস্তিস্ক এই জড় কামনা-বাসনা
দ্বারা জড়িত নয় তারা কিন্তু মূর্তি
নির্মিত দেবতাদের উপাসনা করবে না
অর্থাৎ নিরাকারবাদি।তারা “সর্বভূতে
ঈশ্বরের অনুভুতি লাভ করে”।
বলেছি নিরাকারবাদি হতে গেলে তাকে
যথেস্ট আধ্যাত্মিক জ্ঞান সম্পন্না হতে
হবে, যেটা একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে
এক লাফে, কোনো দিনও সম্ভব নয়। তাই
সাকারবাদি থেকে নিরাকারবাদির দিকে
যেতে হবে।
এরপর
শ্রীমদভগবদগীতা ৭.২১ তে বলা হয়েছে-
“যো যো যাং যাং তনুং ভক্তঃ
শ্রদ্ধয়ার্চিতুমিচ্ছতি ।
তস্য তস্যাচলাং শ্রদ্ধাং তামেব
বিদধাম্যহম ।।”
“পরমাত্মারূপে আমি সকলের হৃদইয়ে বিরাজ
করি। যখনই কেউ দেবতাদের পূজা করেতে
ইচ্ছা করে, তখনই আমি সেই সেই ভক্তের
তাতেই অচলা শ্রদ্ধা বিধান করি”

অর্থ্যাৎ-ভগবান প্রত্যেককেই স্বাধীনতা
দিয়েছেন, তাই কেউ যদি জড় সুখভোগ করার
জন্য কোন দেবতার পূজা করতে চাই, তখন
সকলের অন্তরে পরমাত্মারূপে বিরাজমান
পরমেশ্বর ভগবান তাদের সেই সমস্ত
দেবতাদের পূজা করার সব রকম সুযোগ-
সুবিধা দান করেন। সমস্ত জীবের পরম
পিতা ভগবান কখনও তাদের স্বাধীনতায়
হস্তক্ষেপ করেন না, পক্ষান্তরে তিনি
তাদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করার সব রকম
সুযোগ-সুবিধা দান করেন।
এরপর
শ্রীমদভগবদগীতা ৭.২২ তে বলা হয়েছে-
স তয়া স্রদ্ধয়া যুক্তস্তস্যারাধনমীহতে ।
লভতে চ ততঃ কামান্ময়ৈব বিহিতান হি
তান ।।
সেই ব্যাক্তি শ্রদ্ধাযুক্ত হয়ে সেই দেবতার
আরাধনা করে এবং সেই দেবতার কাছে
থেকে আমারই(ভগবান) দ্বারা বিহিত
কাম্য বস্তু অবশ্যই লাভ করে।

তাই হিন্দুদের মূর্তিপূজা করার
স্বাধীনতার আছে। তাই কেউ যদি মূর্তি
পূজা করে সেটাও হিন্দু ধর্ম সম্বত আর কেউ
যদি মূর্তি না করে সেটাও হিন্দু ধর্ম সম্বত,
কারন হিন্দু ধর্মে ভগবান সাকার ও
নিরাকার উভয় মাধ্যমে পূজিত হয়। হ্যাঁ
তবে দেবদেবতার আরাধনা না করে এক
ভগবানের আরাধনা করাই উৎকৃ্স্ট। কিন্তু এই
উৎকৃ্স্ট পথে, এক লাফে যাওয়া কোনো
দিনও সম্ভব নয়। এর জন্য প্রথমে
সাকারবাদি হতে হবে তারপর
নিরাকারবাদি।

#২কোন পূজা কিভাবে পালন করবে রেফারেনস দিন?

পত্রম্ পুস্পম্ ফলম্ তোয়ম্ যঃ মে ভক্তাঃ প্রযচ্ছতি ।
তত্ অহম্ ভক্ত্যুপহৃতম্ অশ্নামি প্রযতাত্মনঃ ।। (গীতা
৯/২৬)
.
অর্থ--- যে বিশুদ্ধ চিত্ত নিস্কাম ভক্ত আমাকে ভক্তি
পুর্বক পত্র, পুস্প, ফল ও জল অর্পন করেন,আমি তার
সেই ভক্তি প্লুত উপহার প্রীতি সহকারে গ্রহন করি।
.
https://sanatandharmatattva.wordpress.com/category/পূজার্চ্চনার-নিয়ম-এবং-পদ/

#৩) কোন দেব দেবদবী, কোন ঈশ্বরের মূর্তি কেমন দলিল দেখান?

👉দেব-দেবী তত্ব
https://www.google.com/search?client=ms-opera-mini-android&q=দেব-দেবী+তত্ব&oq&aqs

#৪) প্রমান করুন কৃষন ঈশ্বর? তাহলে আমি প্রমান করব কৃষন ঈশ্বর নন। যদি বলেন কৃষন ঈশ্বর নন, তবে আমি হিন্দু ধর্মগ্রন্থ হতে দলিল দিব কৃষন ঈশ্বর। অর্থাৎ, পরস্পর বিরোধ।

👉শ্রীকৃষ্ণ পূর্ণ পরমেশ্বর না কি অংশ কলা !?

https://m.facebook.com/groups/1036238299838934?view=permalink&id=1553392794790146

যোগযুক্ত হয়ে শ্রী কৃষ্ণ গীতার বাণী প্রদান করেন

sanatanatirtha.blogspot.com/2018/03/blog-post.html?m=1

#৫) কোন ধর্মগ্রন্থ কে কখন কার উপর অবতীর্ণ হল?

👉সপ্তঋষি যাদের মাধ্যমে ধ্যানযোগে মানবজাতি বেদ
প্রাপ্ত হয় তাঁরা হলেন –
“অঙ্গিরা,অত্রি,বশিষ্ঠ ভরদ্বাজ,কশ্যপ,বিশ্বামিত্র জমদগ্নি”
(মনুসংহিতা- ১/৩৫)
(বৃহদারণ্যক উপনিষদ-- ২/২/৬)
.
দশমানসপুত্রের অন্যরা হলেন আদিত্য,বায়ু,ভৃগু।
এদের মধ্যে চারজন(অন্গিরা,আদিত্য অথর্বান,অত্রি) প্রথম
বেদ মন্ত্র দর্শন করেন
(শতপথ ব্রাহ্মন ১১/৫/২/৩)
.
শ্রীগীতা সর্বপ্রথম কে লাভ করে---
.
ভগবান উবাচ
ইমম বিবস্বতে যোগম্ প্রোক্তবান অহম্ অব্যয়ম্ ।
বিবস্বান মনবে প্রাহ মনুঃ ইক্ষাকবে অব্রবীত্ ।। (৪/১)
.
অর্থ-ভগবান বললেন-অমি পুর্বে সুর্য্যদেব
বিবশ্বানকে এই অব্যয় নিস্কাম কর্মসাধ্য জ্ঞান যোগ বলে
ছিলাম। সুর্য তা মানবজাতির জনক মনুকে বলেন এবং মনু তা
ইক্ষাকুকে বলেছিলেন।
.
গীতা সর্বপ্রথম প্রাপ্ত হন সূর্যদেব বিবস্বান।

#৬) ঈশ্বর এর স্ত্রী সন্তান কেন লাগবে?

👉ঈশ্বরের স্ত্রী আছে এমন তথ্য কোথাও নেই, চ্যালেঞ্জ রইলো তার কাছে।
বেদে আমাদেরকেই ঈস্বরের সন্তান বলা হয়েছে।

""ত্বং হি নঃ পিতা বসো ত্ব মাতা শতক্রতো
বভূবিথ | অধা তে সুম্নমীমহে ||
(ঋগ্বেদ ৮/৯৮/১১)
হে সকলের আশ্রয়স্থল , অগণিত
শুভকার্যের সম্পাদক পরমাত্মন্ ! তুমিই
আমাদের সকলের পিতা , তুমিই মাতা , এজন্য
তোমাকে আমরা উত্তম রূপে মনন করি |
#৭) হিন্দু ধর্মগ্রন্থে ধর্মিয় কিছুই নাই, পূজা, ভক্ষন বা হালাল হারাম, বিবাহ কাকে নিষিদ্ধ বলা নাই( মনুসংহিতা হতে ৭-১৪ পুরুষ মানতে ৭০০-৮০০ বছর লাগবে।

👉পূজার রেফারেন্স উপরে দেওয়া আছে।।

(১)ভক্ষন:-

'আহারস্ত্বপি সর্বস্য ত্রিবিধো ভবতি প্রিয়ঃ৷
যজ্ঞস্তপস্তথা দানং তেষাং ভেদমিমং শৃণু৷৷

প্রকৃতিভেদে সকলেরই প্রিয় আহারও ত্রিবিধ
হইয়া থাকে; সেইরূপ যজ্ঞ, তপস্যা এবং দানও
ত্রিবিধ; উহাদের মধ্যে যেরূপ প্রভেদ তাহা
শ্রবণ কর । (গীতা ১৭/৭)

'আয়ুঃসত্ত্ববলারোগ্যসুখপ্রীতিবিবর্ধনাঃ৷
রস্যাঃ স্নিগ্ধাঃ স্থিরা হৃদ্যা আহারাঃ সাত্ত্বিকপ্রিয়াঃ৷৷

যাহা আয়ু, উৎসাহ, বল, আরোগ্য, চিত্ত-প্রসন্নতা
ও রুচি - এ সকলের বর্ধনকারী এবং সরস,
স্নেহযুক্ত, সারবান্ এবং প্রীতিকর - এইরূপ
(সাত্ত্বিক) আহার সাত্ত্বিক ব্যক্তিগণের প্রিয় ।
(গীতা ১৭/৮)

'কট্বম্ললবণাত্যুষ্ণতীক্ষ্ণরূক্ষবিদাহিনঃ৷
আহারা রাজসস্যেষ্টা দুঃখশোকাময়প্রদাঃ

অতি কটু, অতি অম্ল, অতি লবণাক্ত, অতি উষ্ণ,
তীক্ষ্ণ, বিদাহী এবং দুঃখ, শোক ও রোগ
উৎপাদক (রাজসিক) আহার রাজস ব্যক্তিগণের প্রিয় ।
(গীতা ১৭/৯)

'যাতযামং গতরসং পূতি পর্যুষিতং চ যত্৷
উচ্ছিষ্টমপি চামেধ্যং ভোজনং তামসপ্রিয়ম্৷৷

যে খাদ্য বহু পূর্বে পক্ক, যাহার রস শুষ্ক হইয়া
গিয়াছে, যাহা দুর্গন্ধ, পর্যুষিত (বাসি), উচ্ছিষ্ট ও
অপবিত্র, তাহা তামস ব্যক্তিগণের প্রিয় । (গীতা
১৭/১০)

ব্রীহি মত্তং যবমত্তমথো তিলম্।
এষ বাং ভাগো নিহিতো রত্ন ধেয়ায় দন্তৌ মা হিংসিষ্টং পিতরং মাতরং চ।।
(অথর্ববেদ ৬।১৪০। ২ )

চাউল, যব, মাষ এবং তিল ভক্ষণ কর।
রমণীয়তার জন্য ইহাই তোমাদের জন্য বিহিত
হইয়াছে! পালক ও রক্ষককে ভক্ষণ করিও না।

পুষ্টিং পশুনাং পরি জগ্রভাহং চতুষ্পদাং দ্বিপদাং য়চ্চ ধান্যম্ ।
পয়ঃ পশুনাংরসমোষ ধীনাং বৃহস্পতিঃ সবিতা মে নি য়চ্ছাৎ
(অথর্ব্ববেদ ১৯। ৩১। ৫ )

চতুস্পদ পশু, দ্বিপদ পশু এবং ধান্য হইতে
আমরা পুষ্টি গ্রহণ করি । এজন্য সৃষ্টি কর্ত্তা
পরমেশ্বর আমাদিগকে পশু দুগ্ধ ও ঔষধির রস প্রদান
করিয়াছেন ।

(২)বিবাহ-->

অসপিন্ডা চ যা মাতুরসগোত্রা চ যা পিতুঃ।
সা প্রশস্তা দ্বিজাতীনাং দারকর্ম্মাণি মৈথুনো।।
মনুসংহিতা ৩/৫

যে স্ত্রী মাতার সপিন্ডা না হয়, অর্থ্যাৎ সপ্তপুরুষ
পর্য্যন্ত মাতামহাদি বংশজাত না হয় ও মাতামহের চতুর্দ্দশ পুরুষ
পর্য্যন্ত সগোত্রা না হয় এবং পিতার সগোত্রা বা সপিন্ডা না হয়
অর্থ্যাৎ পিতৃয়স্রাদি সন্ততি সম্ভূতা না হয়, এমন স্ত্রীই
দ্বিজাতিদিগের বিবাহের যোগ্যা জানিবে”স্বপিন্ড মানে হলো নিজ বংশ।
আর এই শ্লোকে এটা স্পস্ট যে নিজ রক্তের সম্পর্কের
মধ্যে বিবাহ করা যাবেনা।

মহান্ত্যপি সমৃদ্ধানি গোহজাবিধনধান্যতঃ।
স্ত্রী সম্বন্ধে দশৈতানি কুলানি পরিবর্জয়েৎ।।
মনুসংহিতা ৩/৬

“গো, মেষ, ছাগ ও ধন-ধান্য দ্বারা অতিসমৃদ্ধ মহাবংশ
হইলেও বিবাহ বিষয়ে এই বক্ষ্যমাণ দশ কুল পরিত্যাগ করিতে
হইবে”
(বিঃদ্রঃ::-৭-১৪পুরুষ ৭০০-৮০০বছর বলতে উনি কী বুঝাতে চেয়েছে আমার জানা নেই কারন আমি মাদ্রাসায় পড়িনি।)

#৮) হিন্দু ধর্মগ্রন্থে কোথাও বলেনাই, ঈশ্বর কর্তৃক প্রেরিত।

👉👉যজুর্বেদ ৩৩/৩১ এবং অথর্ববেদ ১৩/২/১৬
--উদুত্যং জাতবেদসং দেবং বহন্তি কেতবঃ।
--দৃশে বিশ্বায় সূর্য্যম্।।
.
হে জগদীশ্বর! তুমিই বেদের উৎপাদক ও
প্রকাশ স্বরুপ। সকলকে তোমার মহিমা দেখাইবার জন্যই
সংসারের যাবতীয় পদার্থ পতাকার ন্যায় কার্য্য করিতেছে।
.
যজুূর্বেদ - ৩১/৭
সেই সর্ব্ব পূজ্য পরমাত্মা হইতে ঋগ্বেদ,
সামবেদ,অথর্ববেদ এবং যজুর্বেদ উৎপন্ন হইয়াছে।
.
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতাও স্বয়ং ঈশ্বরের বানী তা
নিম্নের শ্লোকে স্পষ্ট প্রমাণিত---
.
ভগবান উবাচ
ইমম বিবস্বতে যোগম্ প্রোক্তবান অহম্ অব্যয়ম্ ।
বিবস্বান মনবে প্রাহ মনুঃ ইক্ষাকুবে অব্রবীত্ ।। (গীতা
৪/১)
.
অর্থ-ভগবান বললেন-অমি পুর্বে সুর্য্যদেব
বিবশ্বানকে এই অব্যয় নিস্কাম কর্মসাধ্য জ্ঞান যোগ বলে
ছিলাম। সুর্য তা মানবজাতির জনক মনুকে বলেন এবং মনু তা
ইক্ষাকুকে বলেছিলেন।

#৯) হিন্দু ধর্মগ্রন্থ হতে একটা মাত্র অলৌকিক বুঝায় শ্লোক দেখান, আমি কুরআন হতে শত দেখাব।

👉এ কেমন প্রশ্ন আমি বুঝতেছিনা,উনি কমেন্টে বুঝিয়ে বললে আশাকরি এই প্রশ্নেরও সমাধান দিয়ে দেব।

#১০) এক ঈশ্বরের বউ এর সাথে আরেক ঈশ্বরের বউ ও ঈশ্বরের সম্পর্কে কি?

👉আগেই বলছি ঈশ্বরের কোন স্ত্রী নেই মাতা-পিতা নেই
শ্বেতাশ্বতরোপনিষৎ ৬.৯
“তার কোনো মাতা-পিতা নেই, কোনো প্রভুও নেই”,
ঈশ্বরের বউ আছে তার রেফারেন্স দিন।।

#১১) গিতা ধর্মগ্রন্থ নয়- কারন কাব্য মহাভরতেরর একাংশ নিয়ে গিতা বানাল।। যেহেতু মহাভারত ধরমগ্রন্থ নয়। গিতা ধরমগ্রন্থ হলে মহাভারত ও কেন ধরমগ্রন্থ নয়?

👉মহাভারত যদি সাহিত্য হয় তবে গীতা ধর্মগ্রন্থ হয় কি করে 👇

https://m.facebook.com/groups/1781221118636732?view=permalink&id=2026736384085203

#১২) সকল ঈশ্বর কেন বারবার ভারতেই জন্মেন? সব ঈশ্বর কেন ভারতেই বিয়া করেন?

👉গীতায় ঈশ্বর বলেছেন যে তার ভক্তই তার সবচেয়ে প্রিয় ও তার ভক্তের কখনো বিনাশ হয় না ।পরমেশ্বর কৃষ্ণ নিজে তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তার ভক্তের মহিমা প্রকাশ করেছেন । অপরদিকে কৃষ্ণ ভক্ত সবসময় ভগবানের মহিমা গুন কীর্তন করেন , এইভাবে ভগবান আর ভক্তের মাঝে প্রেমময়ি প্রতিযোগিতা সম্পাদন হয় । ঠিক আপনি যদি হৃদয় থেকে কাওকে ভালবাসেন তাহলে তার প্রতি আপনার মনোভাব কেমন হবে ?
অবশ্যই অত্যান্ত উদারপরায়ন আপনি সবসময় চাইবেন আপনার চাইতেও তাকে মহিমান্বিত করার জন্য, এবং এইভাবে আপনাদের মধ্যে ভালোবাসার বন্ধন আরও জোরালো হয় , ভগবান ও তার ভক্তের মাঝে এইরকম হয়ে থাকে ।
যেমন আমি উদাহারন দেয় – কৃষ্ণ সেই ৫ মাস বয়স থেকে কত বাঘা বাঘা অসুর নিধন করেছেন । কিন্তু শুধুমাত্র কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কেন তিনি অর্জুনের রথের সারথি হলেন ,তার কি উদ্দেশ্য ? কেন ভাগবান এইখানে অর্জুনের রথের সারথি হলেন ?
কারন ভগবান চান তার ভক্ত কে মহিমান্নিত করতে ।তাই অর্জুনকে দিয়ে যুদ্ধ করিয়ে নিজে রথের সারথি হলেন । তাই এখনও আমরা সেই পার্থ সারথি বলে ডাকি । এইভাবে ভগবান তার শুদ্ধ ভক্তদের মহিমান্বিত করেন যাতে , সেই ভক্তের কৃপায় সাধারন জীবেরা ভগবানের কাছে ফিরে যেতে পারে ,
আদিকালে সমগ্র পৃথিবী ভারতবর্ষ নামে পরিচিত ছিল । তবুও ভগবান কৃষ্ণ তথাকথিত এই ভারত বর্ষেই তার লীলা সম্পাদন করেছে ,যা বর্তমানে ভারত বর্ষ বলে পরিচিত । এমনকি শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু ও শুধুমাত্র এই ভারত বর্ষেই তার লীলা সম্পাদন করেছেন কিন্তু বলে গেছেন
“পৃথিবীতে যত আছে নগরাদি গ্রাম সর্বত্রই প্রচার হইবে মোর এই নাম “
এর মাধ্যমে আমরা কি বুঝতে পারি ? ভগবান চাইছেন তার কোন শুদ্ধ ভক্ত এসে এই জগতকে হরিনাম দ্বারা প্লাবিত করুক , এবং সেই শুদ্ধ ভক্তের চরণ আশ্রয় গ্রহনের মাধ্যমে সমগ্র জগতবাসী ভগবানের ধামে ফিরে আসুক। বর্তমান এই অবস্থায় দাড়িয়ে আমরা দেখছি যে মহাপ্রভুর সেই ভবিষ্যৎ বানী সফল হয়েছে ।সমগ্র নগর গ্রাম পল্লী ,এমনকি আমাজান জঙ্গলে ও কৃষ্ণ ভক্তরা হরিনাম প্রচার এবং কীর্তন করে মহাপ্রভুর বানীকে সার্থক করেছেন । অতএব ভগবান চাইছিলেন কোন শুদ্ধ ভক্তের কৃপা আশীর্বাদ লাভ করে এই পতিত জীব গণ উদ্ধার হোক । তাই বর্তমানে প্রভুপাদের কৃপাই অনেক শুদ্ধ ভক্ত সাড়া বিশ্ব ব্যপি হরিনাম প্রচার করছে ।আমরা জানি ভগবানের নাম,রুপ,গুন,লীলা সমস্থ কিছুই ভগবান হতে অভিন্ন তাই এখন সমগ্র বিশ্ব জুড়ে ভগবান কৃষ্ণের লীলা সম্পাদন হচ্ছে তার শুদ্ধ ভক্তদের মাধ্যমে ।

#১৩) ভারতিয় উপমহাদেশের বাইরে জন্মসূত্রে হিন্দু নাই কেন?

👉চেক করে নিন
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Hinduism_by_country

#১৪) কল্কিও কেন হিন্দু মতে ঈশ্বর হয়ে আবার ভারতেই জন্মিবেন? বিয়া ও করিবেন?

👉১২নং প্রশ্নের উত্তর পড়ুন।

#১৫) ঈশ্বর কেন পৃথিবি নিকৃষ্ট, ঘৃন্য তম প্রানি শুকর ( বরাহ) অবতার হয়ে জন্মেন? এছাড়া মাছ( মৎস্য) সহ বহু আজগুবি ঈশ্বর।

👉১/মৎস্য অবতারের রহস্যভেদ
back2thevedas.blogspot.com/2018/07/blog-post.html

২/বরাহ অবতারের রহস্যভেদ
back2thevedas.blogspot.com/2018/06/blog-post_50.html

#১৬) হিন্দুদের সৃষ্টিকর্তার প্রতীক ( ওম বলে),সেই প্রতীক (যা দেখতে আল্লাহু আরবি লেখা)। হিন্দুরা কেন এমন লিখেন? দলিল দেখান। এটা দেখতে আল্লাহু লিখলে আরবীতে যেমন দেখায়। আরবি অক্ষরে আলিফ, লাম,হা - সাথে,যবর,পেশ,খাড়া যবর, তাশদীদ মিলে হয় এমন।।তাহলে মুসলিমরা লিখতেই পারে। কিন্ত কেন এমন লিখেন?

👉পৃথিবীর প্রাচীন ১০টি ভাষার মধ্যে নেই আরবি ভাষা

https://www.daytranslations.com/blog/2018/01/what-are-the-worlds-oldest-languages-10620/

১ম স্থানে আছে সংস্কৃত,তামিল ভাষা তাহলে নিজেই বিবেচনা করুন আরবি ভাষা থেকে "ঔঁ"আসছে নাকী সংস্কৃত ভাষা থেকে আল্লাহু শব্দটি বানানো হয়েছে?

রাসেদুলের কাছে প্রশ্ন ::-

#প্রশ্ন:১/কোরানে ১২৪০০০০ নবী,রাসুলের কথা বলা থাকলেও পুরো কোরান, হাদিসে ২৫-৩০জনের নাম আছে মাত্র কিন্তু কেন আরগুলা কোই !?

#প্রশ্ন২/১০৪টা আসমানি কিতাবের মধ্যে ১০টা কিতাবের নাম রেফারেন্স সহ দিন।

#প্রশ্ন৩/আল্লাহর ঘর ‘কাবা’ (Quran 3:96) মুহম্মদের মৃত্যুর পর কয়েকবার ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় ! কাবার কালো পাথর (Black stone) বিদীর্ণ হয় বহু খন্ডে, Qarmatians-রা সেটা চুরি করে এবং বহু বছর পরে তার বিনিময়ে মুক্তিপন আদায় করে ! সর্ব শক্তিমান আল্লাহ কেন সমগ্র মুসলিম জাহানের এই পবিত্র ঘর এবং পাথর কে বাঁচাতে কোন ধরনের পদক্ষেপ নিলেন না ?

http://en.wikipedia.org/wiki/Kaaba#After_Muhammad
http://www.al-islam.org/kaaba14/1.htm
http://en.wikipedia.org/wiki/Black_Stone#History_and_tradition

#প্রশ্ন৪/কালো পাথরে চুম্মাচাট্টির করার জন্য কোরানে কোথায় বলা হয়েছে?আর মোহাম্মদ কার নির্দেশে কালোপাথর চুম্মাচাট্টি করতেন রেফারেন্স দিন।।

#প্রশ্ন৫/কুরান জানায়, আমাদের মহাবিশ্ব সাত স্তর বিশিষ্ট (Quran 71:15) ! কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এই মহাবিশ্ব ট্রিলিয়ন সংখ্যক ছায়াপথ আর সাথে বিলিয়ন বিলিয়ন নক্ষত্র নিয়ে গঠিত, যেখানে সপ্তস্তর বলে কিছু নেই ! তবে কেন এ ধরনের অসত্য তথ্য ?

http://en.wikipedia.org/wiki/Galaxy

অনেকেই দাবি করেন আয়াতে উল্লেখিত সপ্তস্তর বলতে আকাশের বায়ু মন্ডলিয় স্তর বোঝানো হয়েছে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীর উপরিভাগে বায়ুস্তর রয়েছে পাঁচটা http://en.wikipedia.org/wiki/Atmosphere_of_Earth#Principal_layers

#প্রশ্ন৬/কুরান অনুসারে, আল্লাহ এই মহাবিশ্ব তৈরি করেছেন কোন ধরনের অসঙ্গতি (বা ফাটল) ব্যতীত (Quran 67:3) ! তিনি কি ব্লাক হোলের (Black Hole) ব্যাপারে কিছুই জানতেন না ?

The evidence of Black Hole indicates certain degree of instability in the galaxy. Black holes absorb stars and even galaxies in regions of space where from which no entity, including light, can escape.

http://en.wikipedia.org/wiki/Black_hole

#প্রশ্ন৭ পর্বতরাজি কি আসলেই ভুমিকম্প প্রতিরোধ করে বা পৃথিবিকে কম্পন থেকে রক্ষা করে (Quran 16:15 21:31 31:10 79:32-33) ? তবে বিজ্ঞান কেন ভিন্ন কথা বলে (They could form a barrier to a giant earthquake — and they could also easily trigger a giant earthquake) ?

http://www.ouramazingplanet.com/2464-diving-mountains-stop-start-earthquakes-subduction-seamounts.html
http://earthquake.usgs.gov/earthquakes/recenteqsww/

#প্রশ্ন৮ ভুমিকম্প আর প্রবল ঘূর্ণিঝড় হওয়ার মূল কারন কি কাফের বা অবিশ্বাসিদের ভয়ভীতি প্রদর্শন বা তাদের নিধন করা (Quran 16:45, 29:37, 17:68) ? তবে মুসলিমদেশ গুলোতে এতো ভুমিকম্প সংগঠিত হয় কেন ?

http://www.ageofislam.com/content/view/5/5/

#প্রশ্ন৯ মুহম্মদের ভাষ্যমতে, যদি কোন পুরুষের প্রথমে বীর্য স্থলন ঘটে তবে সন্তানের চেহারা হবে তার (বাবার) মত, যদি স্ত্রীর আগে ঘটে তবে হবে মায়ের মত (Sahih Bukhari 4:55:546) ! নবীর এধরনের মিথ্যাচারে আপনি বিশ্বাস স্থাপন করে যাচ্ছেন কেন ?

http://au.answers.yahoo.com/question/index?qid=20100201220421AATRr1l
http://www.dnaftb.org/1/

#প্রশ্ন১০ কোন কথা আস্থাযোগ্য না হলেই মানুষ শপথ করে / কছম কাটে ! তবে কেন আল্লাহকে কুরানে এতোবার কছম কাটতে হলো (Quran 57:1-4, 52:1-6, 53:1, 56:75, 70:40, 74:31-34, 84:16-18, 89:1-4, 92:1-3, 95:1-3 … ইত্যাদি) ?

#প্রশ্ন১১ মুসলিম দের দাবী অনুসারে কুরান যদি মানুষের জন্যে সৃষ্টকর্তার পাঠানো জীবন বিধানই হবে, তবে কেন এতে পুরো একটা সুরা জুড়ে স্থান পাবে Abu Lahab নামক তৎকালিন এক ব্যক্তির প্রতি আল্লাহর আক্রোশ এবং অভিশাপ পূর্ণ বানী (Quran 111:1-5) এটা কি একজন সৃষ্টিকর্তার জন্যে হাস্যকর নয় ?

#প্রশ্ন১২ কুরানের ভাষ্যমতে, এটা যদি আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কারো রচিত হত তবে তাতে বৈপরিত্য দেখা যেত (Quran 4:82) ! কিন্তু কুরানে প্রচুর আয়াত খুঁজে পাওয়া যায় যেগুলো একটার সাথে অন্যটা সাঙ্ঘর্ষিক (যেমন Quran 29:46 and 9:29) ! এর মানে কি এই নয় যে কুরান আসলে মুহম্মদেরই রচনা ?

#প্রশ্ন১৩ আল্লাহ কেন Cousin দের মধ্যে বিয়ের অনুমোদন দিয়েছেন (Quran 4:23), এমনকি উৎসাহিত পর্যন্ত করেছেন (মুহম্মদের ক্ষেত্রে, Quran 33:37) ? তিনি কি জানতেন না যে এর ফলে পরবর্তি প্রজন্মে genetic disorder ঘটে থাকে ?
Raj Bhowmick II

আপনি কি এই তথ্যগুলি জানেন?

আপনি কি এই তথ্যগুলি জানেন?
১ভারতীয় উপমহাদেশ ব্যতীত গোটা বিশ্বের মুসলমানরা রমজানকে রামাদান বলে, শুধুমাত্র ভারতীয় উপমহাদেশে নিজেদের নকল লুকোতে এরা রমজান বলে, রামাদান সংস্কৃত শব্দ রামজ্ঞান এর অপভ্রংশ!
২। কাবা শরীফ একটি শিবমন্দির ছিল, মুসলমানরা হজ করার সময় হিন্দু রীতি অনুসারে কাবা শরীফকে মন্দিরের মত প্রদক্ষিণ করে, একে সজদা বলে!
৩। মহম্মদের পূর্বে পুরো আরবে হিন্দু সংস্কৃতি প্রচলিত ছিল ,হজরত মহম্মদের নিজের কাকা Pagan বা, হিন্দু ছিলেন. তিনি শয়ার উল ওকুল নামে একটা বই লিখেছিলেন, পরে তাঁকে হজরত মহম্মদ মেরে ফেলেন !
৪। মুসলিমদের নামাজ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ নমস থেকে যার অর্থ সামনের দিকে ঝুঁকে শ্রদ্ধা জানান বা নীচু হওয়া!
৫।মুসলিমদের দিনে ৫ বার নামাজ পড়া হিন্দুদের বেদের ত্রিসন্ধ্যা আহ্নিক ও পঞ্চ মহাযজ্ঞের নকল!
৬। মুসলমানদের উৎসব শবেবরাত হিন্দুদের শিবরাত্রি উৎসবের অপভ্রংশ, মক্কার বিখ্যাত মক্কেশ্বর মহাদেবের মন্দির ছিল, সেখানে ধুমধাম সহকারে শিবরাত্রি উৎসব পালিত হত, সেইটি বন্ধ করে মহম্মদ শবেবরাত উৎসব চালু করেন!
৭। নামাজের পূর্বে শরীরের ৫ অঙ্গ ধোওয়া হিন্দুদের বেদের সন্ধ্যা আহ্নিকের পূর্বে পঞ্চাঙ্গ শৌচের নকল!
৮। ঈদ উল ফিতর হল হিন্দুদের পিতৃপুরুষদের স্মৃতি চারণ বা শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের নকল!
৯। গ্যারহারি শরীফ হল আমাদের একাদশী ব্রতের নকল, হিন্দুদের পুরাণের নকল হল কুরাণ, হিন্দুদের মল মাস হল মুসলিমদের সফর মাস।Sukumar Sarker Srabon

ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে রাধা ও কৃ্ষ্ণের চরিত্রের স্বরূপ : # (পর্ব-২)





শ্রীকৃষ্ণের নাম অধিকাংশ সময়েই রাধা এর সাথে উচ্চারিত হয়।বর্তমান সময়ে রাধা ব্যতীত কৃষ্ণমন্দির খুঁজে পাওয়া বিরল।কৃষ্ণ ভজনে কৃষ্ণের চেয়েও গুরুত্বপূর্ন উপাদান ই হয়ে গিয়েছেন তিনি!একবার রাধা নাম নেয়াইতো নাকি তিনবার কৃষ্ণ নাম নেয়ার সমতূল্য!
আজকের লেখার মূল উদ্দেশ্য ইহল রাধা চরিত্রটির উপর আলোকপাত করা।কতটুকু সত্য এই চরিত্রটি?এটা সর্বজনসম্মত যে মহাভারত এ রাধা এর উল্লেখ নেই,১৮টি পুরান এর প্রথম সতেরটিতেও নেই,নেই হরিবংশে এমনকি নেই বৈষ্ণবদের মূল উত্‍স বিষ্ণু পুরানেও বা তাদের মূল প্রেরনা ভাগবতামেও।
প্রশ্ন হল এতই যদি গুরুত্ব এই রাধা এর,তবে মহর্ষি ব্যসদেব একবার উচ্চারন পর্যন্ত করলেন না নামটি!আর মহাভারত যুগের পর একের পর এক সৃষ্ট হওয়া ভাগবতাম অব্দি বৈষ্ণব সাহিত্যগুলোতেও চরিত্রটির কোন উল্লেখ নেই।
এর কারন এই যে মূলত ওই সময়ে রাধা নামক কারো অস্তিত্বই ছিলনা,শ্রীকৃষ্ণের রাধা নাম্নী কোন বান্ধবীও নয়!
তাহলে কোথা থেকে এই রাধার উত্‍পত্তি ঘটল?
বিস্তারিত জানার পূর্বে সংক্ষেপে এটুকু জেনে নেই যেরুপকথা মতে বৃন্দাবনের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বসবাসরত নন্দরাজ এর বন্ধু বৃষভানু ও কৃতিকুমারীর কন্যা শ্রীমতি রাধারানী।বৃষভানু ও কৃতিকুমারী আগের জন্মে ছিলেন সুচেন্দ্র ও কলাবতী যারা ব্রহ্মা কর্তৃক বরপ্রাপ্ত হয়েছিলেন যে পরবর্তী জন্মে শ্রীলক্ষ্মীতাদের ঘরে কন্যা হয়ে জন্মাবেন।এক মেলায় নন্দরাজ সপরিবারে বৃন্দাবনে গেলে নন্দরাজের সাথে তাদের দেখা হয় এবং সেখানেই কৃষ্ণের সাথে রাধার প্রথম সাক্ষাত্‍ হয়।এরপরের ঘটনা সবাই অল্প বেশী বিদিত বটে...এখন দেখি কোথা থেকে এসেছে এই চরিত্রটি।
পুরানসমূহের মধ্যে সর্বশেষলিখিত বা সর্বাপেক্ষা আধুনিক হল ব্রহ্মবৈবর্ত পুরান।সর্বপ্রথম রাধা চরিত্রটির উপস্থাপন ঘটে এই ব্রহ্মবৈবর্ত পুরানে।এরপর যথাক্রমে কবি জয়দেব এর গীতগোবিন্দ এবং অধুনা লিখিত চৈতন্যচরিতমৃততে তার উল্লেখ হয়েছে।এছাড়া ব্রহ্মবৈবর্ত পুরান এর ঠিক আগে লেখা ভাগবত পুরানের দশমস্কন্ধে বিশেষ একজন গোপীর কথা থাকলেও রাধা নামটি নেই।
তাহলে এটা পরিস্কার যে প্রথম রাধা চরিত্রের অবতরন ব্রহ্মবৈবর্ত পুরান এ।দেখেনেয়া যাক এক নজরে শ্রীকৃষ্ণ ও রাধা সম্পর্কে এ পুরানটি কি বলছে-
১)অন্যান্য পুরানের তুলনায় এই পুরানে শ্রীকৃষ্ণের কনসেপ্টটা বেশ ভিন্ন।শ্রীকৃষ্ণ বিষ্ণুর অবতার হলেও ব্রহ্মবৈবর্ত পুরানে তিনি তা নন বরং তিনিই ব্রহ্মা,বিষ্ণু ও শিবএর স্রষ্টা।
২)এই পুরানে গোলকধাম যা শ্রীকৃষ্ণের বাসভূমি তার মর্যাদা বিষ্ণুর বৈকুন্ঠেরচেয়েও বেশী!এখানেই আমরা প্রথম রাধাকে দেখতে পাই যিনি গোলকধামে অন্যান্য দেবীদের সাথে সেখানে প্রতিষ্ঠিত।
৩)এই পুরানে আরেকটি চরিত্র আছে যার নাম বৃজ,যিনি শ্রীকৃষ্ণের প্রেমলাভের ক্ষেত্রে রাধার প্রতিদ্বন্দী।একদিন যখন শ্রীকৃষ্ণ চুপি চুপি বিরাজের গৃহে যাচ্ছিলেন তখন রাধা এই খবরটি পেয়ে যানএবং তার পিছু নেন।রাধা বৃজের ঘরে পৌঁছলে দ্বাররক্ষী শ্রীদাম তাকে বাঁধা দেন।এদিকে বিরাজ রাধার আগমন সংবাদ শুনে এতই ভয় পান যে তিনি গলে নদী হয়ে যান।কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ অলৌকিক ক্ষমতাবলে তাকে আবার পূর্বরুপ ফিরিয়ে দেন।তাদের দুজনের গভীর প্রেমলীলার(সংগম) ফলস্বরুপ তাদের একে একে সাতটি সন্তানএর জন্ম হয়।বৃজ এর অভিশাপে এই সাতটি সন্তান সাতটি নদী হয়ে যায় কেননা শিশুসন্তানগুলো সংগমের সময়নাকি তাদের বিরক্ত করেছিল!অপরদিকে রাধা তাদের এ প্রেমলীলার কারনে এতই রাগান্বিত হন যে তিনি শ্রীকৃষ্ণকে অভিশাপ দেন যেন তাকে আবার পৃথিবীতে জন্ম নিতে হয়।এতে আবার দ্বাররক্ষী শ্রীদাম রাধাকেতিরস্কার করেন ফলশ্রুতিতে রাধা অত্যন্ত রাগান্বিত হয়ে তাকেও অভিশাপ দেন যে শ্রীদাম পরবর্তীতে অসুর হয়ে জন্মাবে।শ্রীদামও রাধাকে অভিশাপ দেন এই বলে যে পরজন্মে রাধা একজন খারাপচরিত্রের মহিলা হয়ে জন্মাবেন।তখন শ্রীদাম ও রাধা উভয়েই পরস্পরকে দেয়া অভিশাপ কাটানোর জন্য শ্রীকৃষ্ণের কাছে যান।তখন শ্রীকৃষ্ণ শ্রীদাম কে বর দেন যে পরজন্মে তিনি অসুর শ্রেষ্ঠ হবেন।অপরদিকে রাধাকে স্বান্তনা দেন এই বলে যে রাধা যখন পৃথিবীতে আসবেন তখন তিনিও তার সাথে আসবেন।
(শ্রীকৃষ্ণ জন্ম খন্ড,অধ্যয়২৩)
শ্রীকৃষ্ণকে রাধার অভিশাপ
হে কৃষ্ণ বৃজকান্ত!গচ্ছ মহৎপুরতী হরে।
কথং দূতীষিমানং লীলং রতি চোর অতি লম্পট।।
মো জগোতো অসি ভদ্র তে গচ্ছ মীমাশ্রামান।।
শশ্বতে মনুষযানং চ ব্যবহারস্য লম্পট।
লভতাং মানুষী যোনি গোলোকাদ ব্রজ ভরতম।।
হে সুশীলে,হে শশিকলে, হে পদ্মাবতি মাধবী।
নিবার্য তাচ্চ্বধূর্ত য কিমস্রত্র প্রযোজতম।।
(ব্রহ্মবৈবর্ত পুরান,শ্রীকৃষ্ণ জন্মখন্ড,অধ্যায় ৩,শ্লোক ৫৯,৬০,৬১,৬২)
অনুবাদ-হে কৃষ্ণ,বৃজের প্রিয়তম,তুমি লম্পট,দুশ্চরিত্র।এখন­ তোমাকে আমি চিনেছি,এখান থেকে বেরিয়ে যাও।তুমি যৌনতাড়নায় তাড়িত দুশ্চরিত্র,তোমাকে অভিশাপ দিচ্ছি যে তোমাকে পুনরায় জন্ম নিতে হবে।হে শুশীল,হে শশীকল,হে পদ্মাবতী মাধবী,কৃষ্ণ ধূর্ত,তাকে এখান থেকে তুলে নাও,তার এখানে কিছু করার নেই।
সুপ্রিয় পাঠকগন চিন্তা করুন! আমরা কি বিনা কারনে পুরানকে বর্জনের কথা বলি?কি অপুরনীয় ক্ষতি করেছে এই পুরানগুলো আমাদের!যোগেশ্বর শ্রীকৃষ্ণকে একজন দুশ্চরিত্র বানিয়েছে এই বানোয়াট পুরানগুলোই। পুরানলেখকগন যারা মূলত কামসূত্র বিশেষজ্ঞ তাদের কথামতে অবৈধ যৌন সংসর্গের অপরাধে শ্রীকৃষ্ণের ধরনীতে আসার গল্পে আর যেই বিশ্বাস করুক না কেন আর্যরা করবেনা কেননা তারাই শ্রীকৃষ্ণকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে।
(চলবে...)

একটি ঘটনা

আমি পাকিস্তানী হিন্দু মেয়ে
আমি ভয় আর আতংকের মাঝে বড় হয়েছি। আমার চারপাশে যে মুখগুলো দেখি তা ভয়ের প্রতিচ্ছবি ছাড়া আমার কাছে আর কিছু মনে হয় না। আমি নিশ্চিত আমার জন্মের পর পিতা মাতার মুখেও ভয়ের ছাপ দেখা দিয়েছিল কারণ আমি একজন পাকিস্তানি হিন্দু ঘরে মেয়ে হিসেবে জন্ম নিয়েছি। কেন আমি আমার বাবা মার জীবনে ভয় এনেছিলাম? আমি বড় হচ্ছিলাম এবং চিন্তা করতাম। কিন্তু আমি কোন সমাধান খুজে পেতাম না। আমি কি বোকা ছিলাম!
বুঝতে না বুঝতেই স্কুলে ভর্তি হলাম। স্কুলের জীবন ছিল আরামদায়ক। কিন্তু মাঝে মাঝে আমাকে অনাহুত বলে হত। ধর্মীয় সংখ্যাগুরুরা আমার দিকে বাঁকা চোখে তাকাত। আমার ধর্ম বিশ্বাসে আঘাত দিত। কিন্তু তাদের বিশ্বাস রক্ষার জন্য রয়েছে ব্লাসফেমি আইন। যখন তারা আমার সাথে কোন কিছু খেতে বা কোন কিছু পান করতে অস্বীকৃতি জানাত তখন বুঝতাম আমি পাকিস্তানি হয়ে উঠতে পারি নাই।
বাড়ির অবস্থাও ভিন্ন ছিল না। মা আমাকে জিজ্ঞাসা করতেন স্কুলজীবন সম্পর্কে। হয়ত তিনি আমার মুখে এমন কিছু শুনতে চাইতেন যা তাকে তার অজানা ভয় থেকে মুক্তি দিবে। কিন্তু তা হত না। বুঝতে পারলাম জীবনের শুরুতেই আমার মা আমার বন্ধু হতে পারছেন না।

বেড়ে উঠা সহজ ছিল না।এবং একদিন তা ঘটলো। যে ভয় আমার মা পেতেন, যে ভয় সকল পাকিস্তানী হিন্দু মা বাবা পান তা একদিন সত্য হয়ে এল আমার জীবনে। কান্ধকোটের একটি বড় বাজার থেকে আমাকে অপহরণ করা হল। অপহরণকারী আর কেউ ছিল না। আমাদের মন্দিরের প্রহরী।

সে আমাকে এমন এক জায়গাতে নিয়ে গেল যে জায়গা আমি আগে দেখিনি। আমি ভয়ে চিৎকার দিলাম। কিন্তু সে আমাকে জোরে ধমক দিল এবং চুপ থাকার হুমকি দিল। ঘটনার আকস্মিকতা বুঝতে না বুঝতেই সে একটা নির্জন বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামাল।


আমরা একটি বড় ঘরে প্রবেশ করলাম। সেই ঘরে কোন ফার্নিচার ছিল না। ছিল শুধু একটি কার্পেট। আমাকে সেই কার্পেটের উপর বসতে বাধ্য করা হল।

আমি জানতাম না আমার ভাগ্যে কি ঘটতে যাচ্ছে। আমার মনের পাতায় ভেসে উঠল সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা। হিন্দু মেইয়েদের অপহরণ এবং জোরপূর্বক ধর্মান্তর। আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। আমার চোখের সামনে বায়স্কোপের মত ভেসে উঠল আমার জীবনের ইতিহাস। মায়ের চোখের আতংক, বাবার সতর্কবার্তা এবং আমার অসহায় চেষ্টা একজন প্রকৃত বন্ধু খুঁজে পাওয়ার আশা।
আমার জীবনের সবথেকে খারাপ আশংকা সত্য প্রমাণিত হল যখন তুরবান পরিহিত এক লোক ঘরে ঢুকে আমাকে এমন এক ধর্ম সম্পর্কে শিক্ষা দিতে লাগলো যেটার কথা শুনতে শুনতে বড় হয়েছি। কিন্তু কখনও তা গ্রহণ করার ইচ্ছা জাগে নাই। সে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বকবক করতেই থাকল কিন্তু আমি তাতে কান দিলাম না। এটা সে বুঝল এবং এই স্থান ত্যাগ করার আগে আমাকে ‘সত্য ধর্ম’ গ্রহণের হুমকি দিল।

আমার মনে কোন ক্রোধের আগুন জ্বলে উঠল না। আমি শুধু ভাবতে লাগ্লাম আমার পিতা মাতা কেন এই দেশ ত্যাগ করেন নাই যখন তাদের সামনে সুযোগ ছিল? কেন বছরের পর বছর আতংকের ভিতর কাটাতে হচ্ছে তাদের এমন এক সমাজে যা ভিন্ন ধর্ম্যালম্বিদের মানুষ বলে গণ্য করে না? আমি কি সেই মেয়েদের মত ভাগ্যবরণ যারা এই ‘সত্য ধর্মের ‘ অনুসারীদের হাতে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত হয়েছিল?একটি একটি করে দিন যায় আর নির্যাতন বাড়তে থাকে। প্রতিদিন তারা আমাকে তাদের ধর্ম গ্রহণ করতে বলত। যখন তারা ব্যর্থ হল তারা আমাকে হুমকি দিল।


রুটিন এভাবেই অব্যাহত ছিল। মৃত্যুর হুমকি থেকে বেহেশতের লোভ যা সুনে আমার মত ‘ অবিশ্বাসী ’ শুধু বিস্মিত হতাম এই ভেবে আমরা কি সবাই এক ঈশ্বরেরই উপাসনা করি না? সেই ঈশ্বর যিনি সকল আনন্দ, বেদনা, রং এবং প্রকৃতির মাঝে প্রকাশিত। আথলে কেন কি আমাকে হিন্দু বলে শাস্তি দিবেন?

এরপর আমাকে ভয় দেখানো হল আমার পরিবারকে তারা ক্ষতি করবে। এরপর আমাকে জোরপূর্বক ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা হল একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এবং এক অপরিচিত লোককে বিয়ে করতে বাধ্য করা হল। তারা সেই লোকটিতে বলতে লাগল ত্রাণকর্তা যে আমাকে এক অবিশ্বাস আর পাপের জগত থেকে উদ্ধার করে এনেছে সত্যের পথে।অনুষ্ঠানের পর আমাকে নিয়ে যাওয়া হল স্থানীয় আদালতে যেখানে একজন মুসলিম ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে আইনত ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করলেন এবং আমার বিবাহ লিপিবদ্ধ করলেন।


আমার ধর্মান্তর এবং মুসলিম পুরুষকে বিয়ে করার খবর দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ল।
আমি ভয় পাচ্ছিলাম আমার বাবা মার সাথে দেখা করার। আমি কখনই চাইনি তাদের দুঃখক্লিষ্ট মুখ দেখতে। আমার মা কে আদালতে দেখলাম এবং তার মুখ আমার যেন মৃত্যু ঘটাল।

আমি তাকে বলতে চাইলাম আমি তাকে ভালোবাসি। আমি ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য হয়েছি তাদের নিরাপত্তার জন্য।

আমি আমার বাবাকে বলতে চাইলাম আমার বোনদের নিরাপদে রাখতে।

আমি আমার ভাইদের বলতে চাইলাম এই দেশ ত্যাগ করতে।
আমি আরও বলতে চাইলাম আমি কেন একজন মেয়ে হিসেবে না জন্মালাম?

আমি কেন পাকিস্তানে জন্মালাম?

আমার নিজের ধর্ম পালন করার অধিকার কেন পেলাম না?

আমি কেন এমন ধর্মে দীক্ষিত হলাম যেটা পালন করার কোন ইচ্ছা আমার নাই?

আমি সবাইকে বলতে চাইলাম ঈশ্বর একজনই এবং প্রত্যেকের নিজের সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।যে মুখগুলো আমি এতদিন ধরে চিনতাম তাদের দিকে তাকালাম এবং জিজ্ঞাসা করলাম নিজেকে “আমি কে? “

আমি একজন কিন্তু অনেকের সমন্বিত যন্ত্রণা। আমি রচনা কুমারী, রিঙ্কেল কুমারী, মনীষা কুমারী এবং নাম না জানা আরও অনেক হিন্দু মেয়ে যাদের কে পাকিস্তানে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। আমি তাদের পরিবারের ভয় আতংক এবং যে জ্বালা যন্ত্রণা তারা দিনের দিনের পর দিন বহন করে চলেছে। আমি সেই সব মেয়ের প্রতীক যারা দিনের পর দিন অবর্ণনীয় জ্বালা যন্ত্রণা ভোগ করতে করতে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

আমি একটি অসহিষ্ণু সমাজে বসবাসকারি একজন ধর্মীয় সংখ্যালঘু।


( পাকিস্তানের প্রভাবশালী দৈনিক দি ডন পত্রিকায় ফাইজা মির্জার লেখাটি ২০১২ সালের ২০ আগস্ট প্রকাশিত হয়।)
(Collected)

কৃষ্ণ ও রাধা নামের গানীতিয় যুক্তি

সনাতনের কিছু ক্যানসার যারা রাধা নামক কাল্পনিক চরিত্রের


ভক্ত তারা মানুষকে প্রায়ই বলেন যে একবার রাধা নাম নিলে ৩ বার কৃষ্ণ  নামের সমান হয়। 
সেই সব ক্যানসারদের গানিতীয় যুক্তি দেব।
 রাধা নামে =  ৩ টা কৃষ্ণ নাম
রাধা = ৩কৃষ্ণ
Radha= 3(krishna)
R word ইংরেজি বর্ণমালার১৮ তম
R×A×D×H×A
18×1×4×8×1
=576
 আবার 
3(krishna)
3( k× R×I×s×H×n×a)
3( 11×18×9×19×8×14×1)
3(3792096)
=11376288
কই মিললো না কোথায় 576 আর কোথায় 11376288
আমি শব্দ গুলিকে নাম্বারে কনভার্ট করছি 😇

শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

রাধা চরিত্রের আবির্ভাব

কে এই রাধা। এই চরিত্রটি সর্বপ্রথম ব্রহ্মবৈবর্ত পুরানে দেখা যায়। শ্রীমদ্ভগবতে যা কৃষ্ণর বৃন্দাবনে সময়কাল নির্দেশ করে সেখানে রাধা বলে কেউ নেই।
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরানে কৃষ্ণের চরিত্রকে
কলঙ্কিত করেছে।
রাধা চরিত্র ছাড়া কৃষ্ণের কোনো মূল্য নেই।
রাধা কে? কৃষ্ণের বৃৃৃন্দাবন ত্যাগের পর রাধার কি হয়েছিল?
বৈষ্ণব কবিদের মতে যা জানা গেছে
১. রাধা কৃষ্ণের মামী।
২.রাধা কৃষ্ণের চেয়ে ১২ বছরের বড়।
অর্থাত কৃষ্ণের জন্মের ১২ বছর আগে রাধার আবির্ভাব ঘটেছে এখন কোন যুগে   ত্রেতা নাকি দ্বাপর বৈষ্ণবরা ও জানেন না।
কৃষ্ণের একটাই মামা  কংস ত রাধা
কি করে কৃৃৃৃষ্ণের মামী হয়?
কৃষ্ণ যখন বৃন্দাবন ত্যাগ করেন তখন তার বয়স ছিল ১১ বছর সেই হিসেবে রাধার বয়স ১১+১২=২৩  বছর অর্থাত রাধা তখন যুবতি।  অর্থাত এভাবে বললে রাধার সাথে কৃষ্ণের কখন  প্রেম হয়
যেহেতু কৃৃৃৃষ্ণের বয়স তখন অল্প। একজন   শিশুর মনে এসব প্রেম বা যৌনতার চিন্তা আসতে পারে না।

কাউন্টার পোষ্ট

#counter_post_from_krishna_sokha
দাবীঃ
Abdullah Al-Amin >
১) সনাতনে ধর্ষনের বিচার কি?
২) নারীরা পিতৃপরিবার থেকে কি পরিমান সম্পদ উত্তরাধিকার হিসেবে পাবে?
৩) যুদ্দবন্দি নারীদের ইদ্দতের নীতিমালা কি?
৪) মনুসংহিতা ২/২১৩, বলছে ইহলোকে পুরুষের দূষিত করাই নারীদিগের কর্ম।
মনুর বিচারে নারীদের কি অধিকার থাকে?
****পিতৃসম্পত্তির সমবন্টন নিশ্চিতকারী সর্বপ্রথম গ্রন্থ পবিত্র বেদ। অনেক বিধর্মীরা এ ব্যাপারে উচ্চবাচ্য করলেও একমাত্র বেদই এক্ষেত্রে সাম্য বজায় রেখেছে।
ঋগ্বেদে বলা হয়েছে-
“ন জাময়ে তান্বো রিকথমারৈক্ চকার গর্ভং সনিতুর্নিধানম্। যদী মাতরো জনয়ন্ত বহ্নিমন্যঃ কর্তা সুকৃতোরণ্য ঋন্ধন্।।” ঋগ্বেদ ৩/৩১/২
অর্থাৎ পুত্র কন্যাকে (ভাই তার বোনকে) পিতৃসম্পত্তি থেকে আলাদা করে দেয় না, তা সমানই থাকে। বরং সে তার বোনকে শিক্ষিত, সংস্কৃতিবান করে গড়ে তোলে এবং স্বামীর হাতে তুলে দেয়। পিতা-মাতা পুত্র-কন্যার জন্ম দেন প্রথমজনকে (পুত্রকে) পারিবারিক দায়িত্ব অর্পণের জন্য এবং দ্বিতীয়জনকে (কন্যাকে) পবিত্রতা ও গুণের প্রতীক হিসেবে।
.
ব্যাখ্যাঃ এই মন্ত্রে পুত্র ও কন্যার সম্পত্তির উত্তরাধিকারের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। কোন দম্পতির যদি একটি কন্যাসন্তান থাকে তবে পিতৃসম্পত্তির পুরো ভাগটাই সে পাবে, যদি তার ভাই থাকে তবে সম্পত্তি দুজনের মধ্যে সমানভাবে ভাগ হবে, পুত্র কখনোই এককভাবে সম্পত্তি পাবে না। আর ভাইয়ের কর্তব্য হল বোনকে শিক্ষা-সংস্কৃতিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হিসেবে গড়ে তোলা। পুত্রসন্তানের কাজ সংসারের দায়িত্বভার নেয়া আর কন্যাসন্তনকে পিতা-মাতার জন্য পবিত্রতা ও গুণের প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
@@@@সনাতন ধর্মে ধর্ষণের শাস্তি ---- মনুস্মৃতি--- ৮।৩৭২ পশুমাংসং দাহয়েৎ পাপং শয়নে তপ্ত আয়সে। অভ্যাদধ্যুশ্চ কাষ্ঠানি তত্র দহ্যেত পাপকৃৎ।।
.
★অনুবাদঃ সেই রূপে যে পুরুষ তাহার স্ত্রীকে পরিত্যাগ করিয়া পরস্ত্রী বা বেশ্যাগমন করে বা অন্য স্ত্রীলোককে ধর্ষণ করে,, সেই পাপীকে উতপ্ত লৌহ পালঙ্কে শায়িত করিয়া বহুলোকের সম্মুখে জীবিত অবস্থায় ভস্মীভূত করিবে
★★★★দাসদাসীর প্রতি আচরণবিধি,মনুসংহিতা ও একজন 'নাদিয়া মুরাদ ' এর দুঃখগাথা"
সনাতন ধর্মগ্রন্থ সকলের প্রতি সর্বক্ষেত্রে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করতে বলে।এ প্রসঙ্গেবেদের পবিত্র বাণীঃ মনুর্ভবঃ(মানুষ হও)।একজন মানুষ সকলের প্রতিই সমান আচরণ করবে এটাই বিধেয়।সে হোক তার অধীন দাসদাসী বা অন্য কেউ।তাই সনাতন শাস্ত্রে দাস দাসীদের প্রতি অত্যন্ত মানবিক আচরণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মনুসংহিতার বিধান নিম্নরূপঃ
भुक्तवत्स्वथ विप्रेषु स्वेषु भृत्येषु चैव हि ।भुञ्जीयातां ततः पश्चादवशिष्टं तु दम्पती ।। (মনুস্মৃতি ৩/১১৬)
অনুবাদঃ
ব্রাহ্মণ আত্মীয় স্বজন ও দাস দাসীদের ভোজনের পর বাকি খাদ্য গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী ভোজন করবে।
मातापितृभ्यां जामीभिर्भ्रात्रा पुत्रेण भार्यया ।दुहित्रा दासवर्गेण विवादं न समाचरेत् ।। (মনুস্মৃতি ৪/১৮০)
অনুবাদঃ পিতামাতা, নারী আত্মীয়া,ভ্রাতা,পত্নী-পুত্র ও দাস-দাসীর সাথে কেউ যেন বিবাদ না করে।
किं चिद् एव तु दास्यः स्यात् संभाषां ताभिर् आचरन् । प्रैष्यासु च-एकभक्तासु रहः प्रव्रजितासु च ।।
(মনুস্মৃতি ৮/৩৬৩)
অনুবাদঃ
এরপরে ও যে তার দাসী বা তপস্বিনীর সাথে গোপনে মিলিত হয়, তার জন্য জরিমানা বিধান রয়েছে।
সিদ্ধান্তঃ
1.দাসদাসীদের খাদ্যসহ সকল মৌলিক অধিকার কর্তা দেবেন।
2.দাসদাসীদের উপর কোনো নির্যাতন ও কলহ করা চলবে না।
3.দাস দাসী ও তপস্বিনী (দেবদাসী)দের সাথে অবৈধ যৌন সম্পর্কও নিষিদ্ধ।
তবে আমাদের প্রতিবেশী ও তথাকথিত সাম্যের ধর্ম ইসলামে দাসী নারীর প্রতি ব্যবহার দেখে মানুষ কেন,পশুরাও বোধহয় শঙ্কিত হবে।
>>>>মনুসংহিতা ২/২১৩, বলছে ইহলোকে পুরুষের দূষিত করাই নারীদিগের কর্ম।
এইখানে, অধার্মিক নারীকে বুঝানো হয়েছে।
কেননা ধার্মিক, সৎ নারীর হয়,কল্যাণময়ী, গৃহের শোভাবর্দ্ধনকারী, পতি সেবা পরায়ন, শশুরের শক্তিদায়িনী, শাশুড়ীর আনন্দ দায়িনী, গৃহকার্যে নিপুনা হও।
এছাড়াও দেখে নিন
इयमग्ने नारी पतिम्विदेष्ट सोमो हि राजा सुभगा कृणोति । सुवाना पुत्रान्महिषी भवाति गत्वा पति सुभगा वि राजतु ।। অথর্ব বেদ ২/৩৬/৩
অনুবাদঃ হে প্রজাপতি, এই রমণী যেন উপযুক্ত স্বামী পায়। উপযুক্ত সদাচারী স্বামী তাকে সর্বদা খুশি রাখে। এই নারী যেন বংশধারা বহন করে ও তার গৃহের কর্ত্রী হয়ে স্বামীর সঙ্গী হয় ও তাকে উন্নতির পথে পরিচিলিত করে।(বিদ্যানাথ শাস্ত্রী)
भगस्त्वेतो नयतु हस्तगृह्याश्विना त्वा प्र वहतां रथेन । गृहान्नाछ गृहपत्नी यथासो वसिनी त्वं विदथमा वदासि ।। অথর্ব বেদ ১৪/১/২০
অনুবাদঃ
হে নারী,সদাচারী স্বামী যেন তোমার হাত ধরে ঘরে নিয়ে যায়।শ্বশুর শাশুড়ি যেন রথে করে ঘরে নিয়ে গিয়ে সকল আরাম আয়েশ ও নিরাপত্তা প্রদান করে।তোমার নতুন ঘরে নতুন সাথীদের সাথে যাও।সেখানে সংসারের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করে সংসারের কর্ত্রী হয়ে সবাইকে সন্মান ও
 #counter_post_from_krishna_sokha
দাবীঃ
Abdullah Al-Amin >
১) সনাতনে ধর্ষনের বিচার কি?
২) নারীরা পিতৃপরিবার থেকে কি পরিমান সম্পদ উত্তরাধিকার হিসেবে পাবে?
৩) যুদ্দবন্দি নারীদের ইদ্দতের নীতিমালা কি?
৪) মনুসংহিতা ২/২১৩, বলছে ইহলোকে পুরুষের দূষিত করাই নারীদিগের কর্ম।
মনুর বিচারে নারীদের কি অধিকার থাকে?
****পিতৃসম্পত্তির সমবন্টন নিশ্চিতকারী সর্বপ্রথম গ্রন্থ পবিত্র বেদ। অনেক বিধর্মীরা এ ব্যাপারে উচ্চবাচ্য করলেও একমাত্র বেদই এক্ষেত্রে সাম্য বজায় রেখেছে।
ঋগ্বেদে বলা হয়েছে-
“ন জাময়ে তান্বো রিকথমারৈক্ চকার গর্ভং সনিতুর্নিধানম্। যদী মাতরো জনয়ন্ত বহ্নিমন্যঃ কর্তা সুকৃতোরণ্য ঋন্ধন্।।” ঋগ্বেদ ৩/৩১/২
অর্থাৎ পুত্র কন্যাকে (ভাই তার বোনকে) পিতৃসম্পত্তি থেকে আলাদা করে দেয় না, তা সমানই থাকে। বরং সে তার বোনকে শিক্ষিত, সংস্কৃতিবান করে গড়ে তোলে এবং স্বামীর হাতে তুলে দেয়। পিতা-মাতা পুত্র-কন্যার জন্ম দেন প্রথমজনকে (পুত্রকে) পারিবারিক দায়িত্ব অর্পণের জন্য এবং দ্বিতীয়জনকে (কন্যাকে) পবিত্রতা ও গুণের প্রতীক হিসেবে।
.
ব্যাখ্যাঃ এই মন্ত্রে পুত্র ও কন্যার সম্পত্তির উত্তরাধিকারের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। কোন দম্পতির যদি একটি কন্যাসন্তান থাকে তবে পিতৃসম্পত্তির পুরো ভাগটাই সে পাবে, যদি তার ভাই থাকে তবে সম্পত্তি দুজনের মধ্যে সমানভাবে ভাগ হবে, পুত্র কখনোই এককভাবে সম্পত্তি পাবে না। আর ভাইয়ের কর্তব্য হল বোনকে শিক্ষা-সংস্কৃতিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হিসেবে গড়ে তোলা। পুত্রসন্তানের কাজ সংসারের দায়িত্বভার নেয়া আর কন্যাসন্তনকে পিতা-মাতার জন্য পবিত্রতা ও গুণের প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
@@@@সনাতন ধর্মে ধর্ষণের শাস্তি ---- মনুস্মৃতি--- ৮।৩৭২ পশুমাংসং দাহয়েৎ পাপং শয়নে তপ্ত আয়সে। অভ্যাদধ্যুশ্চ কাষ্ঠানি তত্র দহ্যেত পাপকৃৎ।।
.
★অনুবাদঃ সেই রূপে যে পুরুষ তাহার স্ত্রীকে পরিত্যাগ করিয়া পরস্ত্রী বা বেশ্যাগমন করে বা অন্য স্ত্রীলোককে ধর্ষণ করে,, সেই পাপীকে উতপ্ত লৌহ পালঙ্কে শায়িত করিয়া বহুলোকের সম্মুখে জীবিত অবস্থায় ভস্মীভূত করিবে
★★★★দাসদাসীর প্রতি আচরণবিধি,মনুসংহিতা ও একজন 'নাদিয়া মুরাদ ' এর দুঃখগাথা"
সনাতন ধর্মগ্রন্থ সকলের প্রতি সর্বক্ষেত্রে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করতে বলে।এ প্রসঙ্গেবেদের পবিত্র বাণীঃ মনুর্ভবঃ(মানুষ হও)।একজন মানুষ সকলের প্রতিই সমান আচরণ করবে এটাই বিধেয়।সে হোক তার অধীন দাসদাসী বা অন্য কেউ।তাই সনাতন শাস্ত্রে দাস দাসীদের প্রতি অত্যন্ত মানবিক আচরণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মনুসংহিতার বিধান নিম্নরূপঃ
भुक्तवत्स्वथ विप्रेषु स्वेषु भृत्येषु चैव हि ।भुञ्जीयातां ततः पश्चादवशिष्टं तु दम्पती ।। (মনুস্মৃতি ৩/১১৬)
অনুবাদঃ
ব্রাহ্মণ আত্মীয় স্বজন ও দাস দাসীদের ভোজনের পর বাকি খাদ্য গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী ভোজন করবে।
मातापितृभ्यां जामीभिर्भ्रात्रा पुत्रेण भार्यया ।दुहित्रा दासवर्गेण विवादं न समाचरेत् ।। (মনুস্মৃতি ৪/১৮০)
অনুবাদঃ পিতামাতা, নারী আত্মীয়া,ভ্রাতা,পত্নী-পুত্র ও দাস-দাসীর সাথে কেউ যেন বিবাদ না করে।
किं चिद् एव तु दास्यः स्यात् संभाषां ताभिर् आचरन् । प्रैष्यासु च-एकभक्तासु रहः प्रव्रजितासु च ।।
(মনুস্মৃতি ৮/৩৬৩)
অনুবাদঃ
এরপরে ও যে তার দাসী বা তপস্বিনীর সাথে গোপনে মিলিত হয়, তার জন্য জরিমানা বিধান রয়েছে।
সিদ্ধান্তঃ
1.দাসদাসীদের খাদ্যসহ সকল মৌলিক অধিকার কর্তা দেবেন।
2.দাসদাসীদের উপর কোনো নির্যাতন ও কলহ করা চলবে না।
3.দাস দাসী ও তপস্বিনী (দেবদাসী)দের সাথে অবৈধ যৌন সম্পর্কও নিষিদ্ধ।
তবে আমাদের প্রতিবেশী ও তথাকথিত সাম্যের ধর্ম ইসলামে দাসী নারীর প্রতি ব্যবহার দেখে মানুষ কেন,পশুরাও বোধহয় শঙ্কিত হবে।
>>>>মনুসংহিতা ২/২১৩, বলছে ইহলোকে পুরুষের দূষিত করাই নারীদিগের কর্ম।
এইখানে, অধার্মিক নারীকে বুঝানো হয়েছে।
কেননা ধার্মিক, সৎ নারীর হয়,কল্যাণময়ী, গৃহের শোভাবর্দ্ধনকারী, পতি সেবা পরায়ন, শশুরের শক্তিদায়িনী, শাশুড়ীর আনন্দ দায়িনী, গৃহকার্যে নিপুনা হও।
এছাড়াও দেখে নিন
इयमग्ने नारी पतिम्विदेष्ट सोमो हि राजा सुभगा कृणोति । सुवाना पुत्रान्महिषी भवाति गत्वा पति सुभगा वि राजतु ।। অথর্ব বেদ ২/৩৬/৩
অনুবাদঃ হে প্রজাপতি, এই রমণী যেন উপযুক্ত স্বামী পায়। উপযুক্ত সদাচারী স্বামী তাকে সর্বদা খুশি রাখে। এই নারী যেন বংশধারা বহন করে ও তার গৃহের কর্ত্রী হয়ে স্বামীর সঙ্গী হয় ও তাকে উন্নতির পথে পরিচিলিত করে।(বিদ্যানাথ শাস্ত্রী)
भगस्त्वेतो नयतु हस्तगृह्याश्विना त्वा प्र वहतां रथेन । गृहान्नाछ गृहपत्नी यथासो वसिनी त्वं विदथमा वदासि ।। অথর্ব বেদ ১৪/১/২০
অনুবাদঃ
হে নারী,সদাচারী স্বামী যেন তোমার হাত ধরে ঘরে নিয়ে যায়।শ্বশুর শাশুড়ি যেন রথে করে ঘরে নিয়ে গিয়ে সকল আরাম আয়েশ ও নিরাপত্তা প্রদান করে।তোমার নতুন ঘরে নতুন সাথীদের সাথে যাও।সেখানে সংসারের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করে সংসারের কর্ত্রী হয়ে সবাইকে সন্মান ও স্নেহের সাথে পরিচালনা করো। (তুলসী শর্মা)
गृह्णामि ते सौभगत्वाय हस्तं मया पत्या जरदष्टिर्यभासः । भगो अर्यमा सविता पुरधिर्मह्य त्वादुर्गार्हपत्वाय देवाः ।।
অথর্ব বেদ ১৪/১/৫০
অনুবাদঃ হে নারী,আমি,তোমার স্বামী তোমার হাত ধরলাম যেন আমাদের পরিবারে সৌভাগ্য আসে ও তুমি সুখী জীবনযাপন করতে পার।ভগ,অর্যমা,সবিতা,পুরন্ধী ও অন্য সকল প্রাকৃতিক সত্তা তোমাকে আমার কাছে উত্তম গার্হস্থ্য জীবনের জন্য পাঠিয়েছে। (তুলসী শর্মা)
सुकिंशुकं वहतुं विश्वरुपं हिरण्यवर्णं सुबृत सुचक्रम् । आरोह सुर्ये अमृतस्य लोकं स्योनं पतिभ्यो बहतुं कृणु त्वम् ।।
অথর্ব বেদ ১৪/১/৬১
অনুবাদঃ
হে বধূ উত্তমরূপে সাজানো পুষ্পশোভিত গার্হস্থ্য জীবনের চূড়ায় ওঠো এবং সদাচারী হয়ে এগিয়ে যাও।তুমি এই নতুন গৃহে নতুন ভোরের সূর্য।গার্হস্থ্য জীবনের মাধ্যমে মুক্তি ও অমরত্বের নতুন দিগন্তে যাও।তোমার পতি ও পরিবারের অন্য সদস্যদের জীবন মঙ্গলময় করে তোল ও পৃথিবীতে এক টুকরো স্বর্গ রচনা কর। (তুলসী শর্মা)
ঔঁ শান্তি

অর্থবেদ ৬/১১/১-২ নিয়ে কটুক্তির জবাব

শমীমশ্বথ আরুধস্তত্র পুংসবনম কৃতম।
তদ্বৈ পুত্রস্য বেদানাং তস্তত্রীস্ব ভরামসি"।।
"পুংসি বৈ রেতো ভবতি তত্স্ত্রীয়ামনু সিচ্যতে।
তদ্বৈ পুত্রস্য বেদানাং তৎপ্রজাপতিরব্রবীত"।।
(অথর্ববেদ ৬.১১.১-২)
অথর্ববেদ এর এই মন্ত্র দুটি নিয়ে দেখলাম গ্রুপ বেশকয়েকদিন ধরে বেশ সরগরম।
বেদ এমন ই এক সর্বোচ্চ অথোরিটি যে বেদ সম্বন্ধে হাজার হাজার মোল্লা চুনোপুঁটি,যাদের কিনা এক লাইনে কয়েকটা করে বানান ভুল থাকে,যাদের ইংরেজি জ্ঞান দেখলে আজই ব্রিটিশদের স্বাধীনতাসূর্যের অস্ত ঘটে যাবে।।
#পুংসবন কি তা কে না জানে!সাধারণ কাউকে জিজ্ঞেস করলেও সে আপনাকে বলে দেবে!গর্ভবতী মা যেন সুস্থভাবে সুস্বাস্থ্যের সাথে বাচ্চা জন্ম দিতে পারে এজন্য যে অনুষ্ঠান এবং কার্যাবলী তাই হল পুংসবন।
এখানে তিনি অশ্বথ গাছের কথা বলছেন,সেটা তুলসী রাম এর ইংরেজি অনুবাদ থেকে নেয়া,কিছুটা এরকম
-শমী বৃক্ষের উপর রোপিত এবং বৃদ্ধিপ্রাপ্ত চারা পুংসবন এর ওষুধ।শমী বৃক্ষ হয়তো চিনতে পেরেছেন।। বিরাটপর্বে পাণ্ডবরা অজ্ঞাতবাসের সময় ছদ্দবেশ নিতে গিয়ে নিজেদের অস্ত্রগুলো যে বৃক্ষের কোটরে লুকিয়ে রেখেছিল সেই গাছটির নাম ছিল “শমীবৃক্ষ”।
মূলত এই বৃক্ষটি মরু অঞ্চলে জন্মায়,এটি ভারতের রাজস্থানের খুব পরিচিত একটি গাছ।তবে এই উদ্ভিদের আলোচনায় একটু পরে আসছি।
কথা হল শমী বৃক্ষের উপর কিভাবে অশ্বথ গাছ রোপণ করা সম্ভব!একটা গাছের উপর কি আরেকটি গাছ রোপণ করা সম্ভব!একটি গাছের উপর আরেকটি গাছই বা কি করে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়!
আবার পুত্র শব্দের অর্থ সন্তান সে ছেলেই হোক বা মেয়ে ঠিক যেমনি বেদে পুরুষ শব্দের অর্থ মানুষ,তা যেকোন লিঙ্গের ই হোক না কেন।
শমী বৃক্ষের সাথে যখন অশ্বথ নিকটে/কাছে/সাথে থাকে তখন পুংসবন কৃত হয়।এটা স্ত্রীর(অনাগত সন্তানের মা) জন্য প্রদত্ত জ্ঞান।১
পুংসি বৈ রেতো ভবতি
পুরুষ এ রেত(যেকোন সৃষ্টির কারন,এখানে সন্তানের বীজ) থাকে
তত্স্ত্রীয়ামনু ষিচ্যতে
তা স্ত্রীতে স্থাপিত হয়।
তদ্বৈ পুত্রস্য
তাতেই পুত্র হয়
তৎপ্রজাপতিরব্রবীত
এই হল প্রজাপতি কর্তৃক প্রদত্ত জ্ঞান।প্রথমে ধরে নেই এখানে পুত্র অর্থ হল ছেলে সন্তান,তাও যদি হয় এই মন্ত্রে কোথাও শমী বা অশ্বথ কোন বৃক্ষের কথা ই বলা হয়নি!কোথাও বলা হয়নি অশ্বথ বা শমী বৃক্ষের কিছু খেলে পুত্র সন্তান জন্মাবে!বরং যদি পুত্র অর্থ ছেলে সন্তান ই হয় তাহলে তো বলতে হয় এই মন্ত্রটি আধুনিক বিজ্ঞানের এক অনবদ্য আবিস্কারের কথাই বলেছে কেননা সেক্ষেত্রে এই মন্ত্রের অর্থ দাঁড়াচ্ছে পুরুষ এর প্রদত্ত বীজ এর কারনেই পুত্র সন্তান জন্মায় যা আধুনিক বিজ্ঞান আবিস্কার করেছে যে একমাত্র পুরুষ এর শুক্রানুতে থাকা Y ক্রোমসোম এর কারনেই ছেলে সন্তান হতে পারে!
এখন প্রথম মন্ত্রটি খুব চমকপ্রদ!শমী বৃক্ষ যার বৈজ্ঞানিক নাম
 Prosopis cineraria
এটি ভারতে মূলত খেজরি গাছ হিসেবে পরিচিত।এই গাছটির আয়ুর্বেদ গুণ এক কথায় চমকপ্রদ কেননা এর এমন কোন অংশ নেই যা মানুষের কোন না কোন অসুখ সারানোর কাজে লাগেনা যার কারনে একে ‘কল্পতরু’ এবং ‘মরুর রাজা’ বলে অভিহিত করা হয়।১৯৮৮ সালে ওয়ার্ল্ড হেলথ ডে তে ভারতের ডাকবিভাগ এই খেজরি গাছের ছবি সম্বলিত একটা স্ট্যাম্প প্রকাশ করে এর ঔষধি তাৎপর্য এর কথা মাথায় রেখে।
আয়ুর্বেদ এ বলা হয়েছে-
“শমী তিক্ত কটু শীতা কাশায়া রেচ লঘু
কফকাশাভ্রমস্বসাকুষ্ঠরসা ক্রিমিজিত স্মৃতা.....”
অর্থাৎ শমী বৃক্ষ তিক্ত,কটু স্বাদের যা কাশি,কফ,কনসটিপেসন,মাথা ঘোরানো,ক্রিমি,শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি রোগের ঔষধ।
এই বৃক্ষের উপকারিতা নিয়ে বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রচুর প্রবন্ধ রচিত হয়েছে,তবে এ নিয়ে সবচেয়ে বিখ্যাত একটি গ্রন্থ হল Kenneth G Zysk এর Religious Healing in the Veda : with Translations and Annotations of Medical Hymns from the Ṛgveda and the Atharvaveda and Renderings from the Corresponding Ritual Texts যাতে তিনি এই শমী বৃক্ষসহ বিভিন্ন বৃক্ষের আয়ুর্বেদিক গুণ বর্ণনা করেছেন।
মজার বিষয় কি জানেন?এই গাছের বাকলের গুঁড়ো চিনির সাথে মিশিয়ে খেলে তা গর্ভবতী মায়ের মিসকেরিয়েজ(সন্তান গর্ভে নষ্ট হওয়া) এর সম্ভাবনা কমে যায় এবং এর পাতা Estrogenic অর্থাৎ এটি মায়ের জরায়ুর গঠন সুসংগঠিত করে বাচ্চা ধারন এবং সঠিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।”
(The treatise on Indian Medicinal plants in India,Vol 11,Page 112,Pakrashi and Chatterje)
অপরদিকে যেহেতু আগেই আমি উল্লেখ করেছি যে শমী বৃক্ষের উপর রোপিত বা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত অশ্বথ বৃক্ষ যেহেতু সম্ভব নয় তাহলে এখানে অশ্বথ কোন বৃক্ষ অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে বলেই ধরে নেয়া উচিৎ।আমরা জানি যে বৈদিকভাবে অশ্বথ হল ব্রহ্ম এর একটি নাম(কঠউপনিষদ) এবং পৌরাণিকভাবেও শিব এবং বিষ্ণুর অপর নাম অশ্বথ।নিঘণ্টু অনুযায়ী “অশ্বথ” এর সন্ধি হল শ্ব(আগামীতে) থ(যা থাকবে) অর্থাৎ যা সবসময় ই থাকবে(ঈশ্বর)।
সে হিসেবে প্রথম মন্ত্রের অর্থ দাঁড়ায় এরকম
শমীমশ্বথ আরুধস্তত্র পুংসবনম কৃতম।
তদ্বৈ পুত্রস্য বেদানাং তস্তত্রীস্ব ভরামসি।।
শমীমশ্বথ আরুধ স্তত্র
শমীবৃক্ষ এর ঔষধি গুনের সাথে(উপরে) ঈশ্বর এর আশীর্বাদ(অশ্বথ এর উপস্থিতি) এ পুংসবন(গর্ভে বাচ্চার বৃদ্ধি ও রক্ষা) কৃত হয়।
তদ্বৈ পুত্রস্য
তাতে পুত্র(সন্তান) হয় এই হল
তস্তত্রীস্ব
স্ত্রী(গর্ভধারনকারী মা)
বেদানাং ভরামসি
এর জন্য জ্ঞান(পরামর্শ)