এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০২০

কৃষ্ণ পুজা কি তামসিক?

কাউন্টার
কিছু অার্য নামক অনার্যরা পৌরনিক দের পিছনে লাগতে গিয়ে গীতাকে অমান্য করে আসুন
দেখি তাদের ধারনা কতটুকু

গীতা ৪র্থ অধ্যায়ে আমরা দেখতে
পাই
শ্লোক:1:
শ্রীভগবানুবাচ
ইমং বিবস্বতে যোগং প্রোক্তবানহমব্যয়ম্ ।
বিবস্বান্মনবে প্রাহ মনুরিক্ষ্বাকবেহব্রবীৎ ।।১।।
অনুবাদ : পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন- আমি পূর্বে সূর্যদেব বিবশ্বানকে এই অব্যয় নিষ্কাম কর্মসাধ্য জ্ঞানযোগ বলেছিলাম। সূর্য তা মানবজাতির জনক মনুকে বলেছিলেন এবং মনু তা ইক্ষ্বাকুকে বলেছিলেন।

এই শ্লোকের দ্বারা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যে জ্ঞানের কথা অর্জুন কে বলেছেন তা তিনি বহু আগে সূর্যদেব কে বলেছেন

এখন প্রশ্ন হতে পারে যে কৃষ্ণ কি করে সূর্যদেবকে বহু গোপনীয় জ্ঞান দিলেন। কারন সূর্যদেবের জন্ম  বহু আগে।
এই প্রশ্নই  অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে করেছিলেন
এখন দেখি তার উত্তর
শ্লোক:5:
ভগবান উবাচ
বহূনি মে ব্যতীতানি জন্মানি তব চার্জুন ।
তান্যহং বেদ সর্বাণি ন ত্বং বেত্থ পরন্তপ ।।৫।।
অনুবাদঃ পরমেশ্বর ভগবান বললেন- হে পরন্তপ অর্জুন ! আমার ও তোমার বহু জন্ম অতীত হয়েছে ৷ আমি সেই সমস্ত জন্মের কথা স্মরণ করতে পারি, কিন্তু তুমি পার না।

এখানে শ্রীকৃষ্ণ স্বীকার করেছেন যে তার জন্ম হয়েছে।কিন্তু সাধারন ভাবে না কারন সাধারন মনুষ্যরা কখনো তাদের জন্মের কথা মনে করতে পারেন না।
এখন দেখি কৃষ্ণ কিভাবে দেহ ধারন করেন।
শ্লোক:6:
অজোহপি সন্নব্যয়াত্মা ভূতানামীশ্বরোহপি সন্ ।
প্রকৃতিং স্বামধিষ্ঠায় সম্ভবাম্যাত্মমায়য়া

অনুবাদ : যদিও আমি জন্মরহিত এবং আমার চিন্ময় দেহ অব্যয় এবং যদিও আমি সর্বভূতের ঈশ্বর, তবুও আমার অন্তরঙ্গা শক্তিকে আশ্রয় করে আমি আমার আদি চিন্ময় রূপে যুগে যুগে অবতীর্ণ হই।

অর্থাত শ্রীকৃষ্ণ তার মায়া শক্তি দ্বারা জন্ম ধারন করে অবতীর্ণ হন।
এখন কোনো  সাধারন মনুষ্য কি 
এরুপ মায়া শক্তি ব্যবহার করতে পারে সেই সব আর্য নাম অনার্য কাছে আমার প্রশ্ন রয়ে গেল।
আসুন তার (কৃষ্ণ) অবতরনের 
কারন জেনে নিই

শ্লোকঃ 7-8
যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত ।
অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্ ।।৭।।
পরিত্রাণায় সাধূনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্।
ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।।৮//

অনুবাদ : হে ভারত ! যখনই ধর্মের অধঃপতন হয় এবং অধর্মের অভ্যূত্থান হয়, তখন 
সাধুদের পরিত্রাণ করার জন্য এবং দুষ্কৃতকারীদের বিনাশ করার জন্য এবং ধর্ম সংস্থাপনের জন্য আমি যুগে যুগে অবতীর্ণ হই।
 
এখন বোঝাগেল কৃষ্ণ কোন প্রেত৷ বা পিশাচ নই বা কোনো সাধারন মনুষ্য নই।
আর তাকে পুজা করবার জন্য শ্রীকৃষ্ণ  কি বলেছেন?  আসুন দেখে নিই

শ্লোকঃ 65
মন্মনা ভব মদ্ভক্তো মদযাজী মাং নমস্কুরু।
মামেবৈষ্যসি সত্যং তে প্রতিজানে প্রিয়োহসি মে।।৬৫।।.
 
অনুবাদঃ তুমি আমাতে চিত্ত অর্পণ কর আমাকে পুজা কর আমাকে নমষ্কার কর। তাহা হলে
তুমি আমাকে প্রাপ্ত হবে। যেহেতু 
তুমি আমার অতন্ত্য প্রিয়।

অতএব কৃষ্ণ পুজা কখনো তামসিক না। 

তাছারা গীতা ৪/১৫ তে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেনপ্রাচীনকালে সমস্ত মুক্ত পুরুষেরা আমার অপ্রাকৃত তত্ত্ব অবগত হয়ে কর্ম করেছেন। অতএব তুমিও সেই প্রাচীন মহাজনদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তোমার কর্তব্য সম্পাদন কর।

অতএব এটা সম্পুর্ণ মিথ্যা যে কৃষ্ণ পুজা তামসিক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন