এই ব্লগটি সন্ধান করুন

মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২১

সনাতন ধর্ম নিয়ে কিছু প্রশ্নের জবাব।

 Md Rashidul এর সনাতন ধর্ম নিয়ে কিছু প্রশ্নের জবাব।


#Repost from Arya sudipto kumer

রাশেদুলের দাবী-
১/পবিত্র বেদে সনাতন শব্দ নেই।
২/সনাতনে শাখা, সিঁদুরের স্বীকৃতি নেই।
৩/সনাতনে ঢাক ঢোল স্বীকৃত নয়।
৪/পবিত্র বেদে লক্ষী,সরস্বতীসহ কোন দেবদেবীর নাম স্বীকৃত নয়।

অথর্ববেদে 10/8/22 এ সনাতন শব্দটি আছে-

★Bhogyo bhavadatho annamadad bahu.
Yo devamuttaråvantamupåsåtai sanåtanam.

>Whoever worships and meditates on Eternal
Brahma, highest object of worship, would receive
unbounded food of life and joy, and indeed Brahma itself
would reveal its presence as food for his joyous
experience in meditation.�

অথর্ববেদ 10/8/23 এও সনাতন শব্দটি আছে-

★Sanåtanamenamåhurutådya syåtpunarƒava¨.
Ahoråtre pra jåyete anyo anyasya rμupayo¨�

>They say this Brahma is Sanatana, Eternal,
beyond time and age, and yet it arises ever anew in time
and presence, as the day and night arise anew and follow
each other in relation to the form and time of the
occasion.�

অথর্ববেদ 18/3/1 এ ও সনাতন নাম আছে। 
★ইয়ং নারী পতি লোকং বৃণানা নিপদ্যত উপত্ব্য মর্ন্ত্য প্রেতম্।
.
★ধর্মং পুরাণমনু পালয়ন্তী তস্ম্যৈ প্রজাং দ্রবিণং চেহ ধেহি।।
.
পদার্থ:---- মর্ত্য-হে মনুষ্য, ইয়ং নারী-এই স্ত্রী, পতিলোকম-পতিলোককে অর্থাত্ বৈবাহিক অবস্থাকে, বৃণনা-কামনা করিয়া, প্রেতম-মৃত পতির, অনু-পরে, উপ ত্বা-তোমার নিকট, নিপদ্যতে-আসিতেছে, পুরাণম-সনাতন, ধর্ম্মম-ধর্মকে, পালয়ন্তী-পালন করিয়া, তস্য-তাহার জন্য, ইহ-এই লোকে,
প্রজাম্-সন্তানকে, দ্রবিণং-এবং ধনকে, ধেহি-ধারন করাও।
.
★বঙ্গানুবাদঃ---হে মনুষ্য!এই স্ত্রী পুনর্বিবাহের আকাঙ্খা করিয়া মৃত পতির পরে তোমার নিকট আসিয়াছে।সে সনাতন ধর্মকে পালন করিয়া যাতে সন্তানাদি এবং সুখভোগ করতে পারে।
,মনুস্মৃতিতে সনাতন নাম আছে।
★সত্যং ব্রুয়াৎ প্রিয়ং ব্রুয়ান্নব্রুয়াৎ সত্যমপ্রিয়ম্।
.
★প্রিয়ং চ নানৃতং ব্রুয়াদেষ ধর্ম্মঃ সনাতনঃ।।
.
অনুবাদ--: অপরের হিতকর প্রিয় সত্য কথা বলিবে, অপ্রিয় সত্য কথা কখনো বলিবেনা যাহা লোকের মর্মভেদ করে, অপরকে প্রসন্ন করার সহিতে মিথ্যা বলিবে না, ইহাই বেদবিহিত সনাতন ধর্ম।
(4/138)
শ্রীগীতাতে সনাতন আছে।
আর না ই দিলাম যেহেতু বেদ থেকে উত্তর চেয়েছেন তা দেয়া হয়েছে । এছাড়া মনুস্মৃতি 9/54 এ ও বেদবিহিত সনাতন ধর্মের কথা আছে।
■ কোনো ধর্মগ্রন্থে কি শাঁখা সিঁদুরের কথা আছে??
আদি পিতা মনু কর্তৃক আইনে অলঙ্কার বেশভূষণের ব্যবহারের কথা পাওয়া যায়।
অলঙ্কার বলতে শাঁখা সিঁদুর,সোনা রুপা গহনার ব্যবহার ,,দেখি কি বলেছেন আমাদের আদি পিতা !
পিতৃভির্ভ্রাতৃভিশ্চৈতাঃ পতিভির্দেবরৈস্তথা ।
পুজ্যা ভূষয়িতব্যাশ্চ বহুকল্যাণমীপ্সুভিঃ ।।
অনুবাদঃ-- বিবাহের সময়ে বরই কন্যাকেব ধন দেবেন এমন নয়। বিবাহোত্তর কালেও পিতা, ভ্রাতা, পতি, দেবর, এরা সকলেই যদি অতুল কল্যাণরাশির অভিলাষী হয়, তাহলে ঐ কন্যাদের ভোজনাদির দ্বারা পুজা করবে ও বস্ত্র- অলঙ্কারাদির দ্বারা ভূষিত করবে । (মনুস্মৃতি :--৩/৫৫, )
এখানে অলঙ্কারের ব্যবহারের কথা পাওয়া যায় । 
আরও দেখি কি বলেছেন অলঙ্কার ভূষণ নিয়ে ,,
যত্র নার্য্যস্তু পুজ্যন্তে রমন্তে তত্র দেবতাঃ ।
যত্রৈতাস্তু ন পূজ্যন্তে সর্বাস্তত্রাফলাঃ ক্রিয়াঃ ।।
অনুবাদ:-- যে বংশে স্ত্রীলোকেরা বস্ত্রালাঙ্কারাদির দ্বারা পুজা বা সমাদর প্রাপ্ত হয়, সেখানে দেবতারা প্রসন্ন থাকেন, আর যে বংশে স্ত্রীলোকদের সমাদর নেইন, সেখানে ( যাগ ,হোম, দেবতার আরাধনা প্রভৃতি ) সমস্ত ক্রিয়াই নিষ্ফল হয়ে যায় । (মনুস্মৃতি:--৩/৫৬)
এখন বুঝেন সনাতন নারীরা কেন অলঙ্কার পরিধান করে ,, শাঁখা সিধুর পরে ,, 
তারপরের রেফারেন্স হলো ,,
তস্মাদেতাঃ সদা পূজ্যা ভূষণাচ্ছাদনাশনৈঃ ।
ভূতিকামৈর্নরের্নিত্যং সৎকারেষুৎসবেষু চ । ।
অনুবাদ:-- অতএব যারা ভৃতি অর্থাৎ ঐশ্বর্য বা সম্পদ কামনা করে, এই রকম পতিসম্বন্ধীয় লোকেরা বিভিন্ন সৎকার্যের অনুষ্ঠানে এবং নানা উৎসবে অলঙ্কার, বস্ত্র ও ভোজনাদির দ্বারা নিত্য স্ত্রী- লোকদের সন্তুষ্টির বিধান করবে ।( মনুস্মৃতি :-৩/৫৯)

■ কোনো গ্রন্থে কি ঢাক ঢোল আদি বাদ্যের উল্লেখ আছে??
সামবেদে গানের কথা পাওয়া যায় মন্ত্রঃ
পান্তমা বো অন্ধস ইন্দ্রমভি প্র গায়ত। বিশ্বাসাহং শতক্রতুং মংহিষ্ঠং চর্ষণীনাম্‌।।১।
প্র ব ইন্দ্রায় মাদনং হর্যশ্বায় গায়ত। সখায়ঃ সোমপাব্‌নে।।২।।
অনুবাদঃ
তোমাদের মঙ্গলের জন্য ইন্দ্রের উদ্দেশে পানযোগ্য সোমরস নিবেদন করে’ গান কর; তিনি বিশ্বজিৎ, শতকর্মা, মানুষের শ্রেষ্ঠদাতা।।১
হে সখাগণ, হরিতবর্ণ রশ্মিযুক্ত (=হর্ষশ্ব); সোমপায়ী (=জলরাশির পালক), ইন্দ্রের উদ্দেশে আনন্দজনক গান গাও।।২ 
(সামবেদ ২/৫)
এখন না বুঝার কিছু নেই, আশা করি উত্তর পেয়েছেন ,, ।
আর ঢাকঢোলের ব্যবহার যুদ্ধ ক্ষেত্রে ব্যবহার হতো ,, সেই সুবাদে পরিবর্তণ হয়ে সনাতন ধর্মের পূজা পালিতে ব্যবহার্য হয়ে উঠে ,, ঢাক ঢোল শ্রীগীতাতে ব্যবহার করার উল্লেখ পাওয়া যায় । যেহেতু শ্রীগীতা সনাতন ধর্মের তাহলে ঢাক ঢোল সনাতন ধর্মের ব্যহার্য । তাহলে দেখি রেফারেন্স গুলো ,,
তস্য সঞ্জনয়ন্‌ হর্ষ্‌ম্ কুরু-বৃদ্ধঃ পিতামহঃ ।
সিংহ নাদম্‌ বিনদ্য উচ্চৈঃ শঙ্খম্‌ দধ্‌মৌ প্রতাপবান ।১২।
অর্থ- তখন কুরু বংশের বৃদ্ধ পিতামহ ভীষ্ম দুর্য্যধনের হর্ষ উত্পাদনের জন্য সিংহের গর্জ্জনের মত অতি উচ্চনাদে তার শঙ্খ বাজালেন।
ততঃ শঙ্খাঃ চ ভের্যঃ চ পনবআনক গোমুখাঃ ।
সহসা এব অভ্যহন্যন্ত সঃ শব্দঃ তুমুলঃ অভবত্ ।১৩।

অর্থ- তারপর শঙ্খ ভেরী পনক আনক ঢাক এবং গোমুখ সিংঙ্গা সমুহ হঠাত্ একত্রে ধনিত হয়ে এক তুমুল শব্দের সৃষ্টি হল।
ততঃ শ্বেতৈঃ হয়ৈঃ যুক্তে মহতি স্যন্দনে স্থিতৌ ।
মাধবঃ পান্ডবঃ চ এব দিব্যৌ শঙ্খৌ প্রদধ্‌মতুঃ ।১৪।
অর্থ- অন্যদিকে শ্বেত অশ্বসমুহ যুক্ত একদিব্য রথে স্থিত শ্রীকৃষ্ণ এবং অর্জুন উভয়ে তাদের দিব্য শঙ্খ বাজালেন।
পাঞ্চজন্যম্‌ হৃষীক-ঈশঃ দেবদত্তম্‌ ধনঞ্জয়ঃ ।।
পৌন্ড্রম্‌ দধ্‌মৌ মহাশঙ্খম্‌ ভীমকর্মা বৃক-উদর ।১৫।
অর্থ- তখন শ্রীকৃষ্ণের পাঞ্চজন্য নামক তার শঙ্খ বাজালেন।এবং অর্জুন বাজালেন তার দেবদত্তক নামক শঙ্খ এবং বিপুল ভোজন পৃয় ভীমকর্মা সেন বাজালেন পৌন্ড্র নামক তার ভয়ঙ্কর শঙ্খ।
অনন্ত বিজয়ম্‌ রাজা কুন্তীপুত্রঃ যুধিষ্ঠিরঃ ।
নকুলঃ সহদেবঃ চ সুঘোষ-মনিপুস্পকৌ ।১৬।
কাশ্যঃ চ পরম-ইষু-আসঃ শিখন্ডী চ মহারথঃ ।
ধৃষ্টদ্যুম্নঃ বিরাটঃ চ সাত্যকি চ অপরাজিতঃ ।১৭।
দ্রুপদঃ দ্রৌপদেয়াঃ চ সর্বশঃ পৃথিবী পতে ।
সৌভদ্রঃ চ মহা বাহু শঙ্খান দধ্‌মুঃ পৃথক্‌ পৃথ্‌ক ।১৮।
অর্থ- কুন্তীপুত্র মহারাজ যুধিষ্ঠির অনন্ত বিজয় নামক শঙ্খ বাজালেন, এবং নকুল এবং সহদেব বাজালেন সুঘোষ এবং মনিপুস্পক নামক শঙ্খ। হে মহারাজ তখন মহান ধনুর্ধর কাশিরাজ, প্রবল যোদ্ধা শিখন্ডি,ধৃষ্টদ্যুম্ন, বিরাট এবং অপরাজিত সাত্যকি, দ্রুপদ দ্রৌপদীর পুত্রগন, সুভদ্রার মহা বলবান পুত্র এবং অন্য সকলে তাদের নিজ নিজ পৃথক শঙ্খ বাজালেন।
সঃ ঘোষঃ ধার্তরাষ্ট্রাণাম্‌ হৃদয়ানি ব্যদারয়াত্ ।
নভঃ চ পৃথিবীম্‌ চ এব তুমুলঃ অভ্যনুনাদয়ন ।১৯
(শ্রীমদভগবদগীতার ১ম অধ্যায়)
■ গীতায় কি অন্য দেবদেবীর পূজার অনুমতি আছে??
শ্রীমদভগবদগীতা বরাবর ই দেবদেবীর পূজার অনুমতি দেয়।
গীতাতে অন্য দেবদেবীর উপাসনাঃ
যো যো যাং যাং তনুং ভক্তঃ শ্রদ্ধয়ার্চিতুমিচ্ছতি৷
তস্য তস্যাচলাং শ্রদ্ধাং তামেব বিদধাম্যহম্৷৷
গীতা 7/21
সরলার্থ: পরমাত্মারুপে আমি সকলের হৃদয়ে বিরাজ করি। যখন কেউ দেবতাদের পূজা করতে ইচ্ছা করে আমি তাদের শ্রদ্ধানুসারে সেই সেই দেবতাদের প্রতি ভক্তি বিধান করি।
স তয়া শ্রদ্ধয়া যুক্তস্তস্যারাধনমীহতে৷
লভতে চ ততঃ কামান্ময়ৈব বিহিতান্ হি তান্৷৷
গীতা 7/22
সরলার্থ: সেই ভক্ত শ্রদ্ধাযুক্ত হয়ে সেই দেবতার আরাধনা করেন এবং সেই দেবতার কাছ থেকে আমারই দ্বারা বিহিত কাম্য বস্তু লাভ করেন।
■ বেদ কি লক্ষ্মী সরস্বতী দূর্গা কালী রূপে ঈশ্বরের আরাধনার অনুমতি দেয়???

ঋগবেদ ১০/১২৫- দেবী সূক্ত
অহং রুদ্রেভির্বসুভিশ্চরাম্যহমাদিত্যৈরুত বিশ্বদেবৈঃ।
অহং মিত্রাবরুণোভা বিভর্ম্যহমিন্দ্রাগ্নী অহমশ্বিনোমা।।১।
সরলার্থঃ আমি দুষ্টের দমনকারী এবং পৃথিবী আদি সমস্ত লোকের সাথে ব্যাপ্য। আমি ১২ মাস এবং সমস্ত তেজোময় পদার্থের সাথে ব্যাপ্য। দিন এবং রাত্রী উভয় কে আমিই ধারণ করি। সূর্য ও অগ্নি, দ্যুলোক ও পৃথিবীলোক উভয় কেও আমিই ধারণ করি।।১।।
অহম সোমাহনসং বিভর্ম্যহং ত্বষ্টারমুত পুষণং ভগম্।
অহং দধামি দ্রবণং হবিষ্মতে সুপ্রাব্যে যজমানায় সুন্বতে।।২।।
সরলার্থঃ আমি সব দুষ্ট কে নাশকারী শাসক কে ধারণ করি। আমি কান্তিমান সূর্য কে এবং সর্বপোষক ভূমি কে এবং সমস্ত ঐশ্বর্য্য কে ধারণ করি। আমি অন্নাদি হবিষ্য পদার্থ সম্পন্ন দানশীল যজ্ঞকর্তা এবং সুখ পূর্বক উত্তম রীতি দ্বারা সবাইকে রক্ষাকারী উপসনাশীল, ঐশ্বর্য্যযুক্ত শাসক কে ধন প্রদান করি।। ২।।
অহং রাষ্ট্রী সঙ্গমনী বসুনাং চিকিতুষী প্রথমা যজ্ঞিয়ানাম্।
তাং মা দেবা ব্যদধুঃ পুরুত্রা ভূরিস্থাত্রাং ভূর্যবেশ্যন্তীম্।।৩।।
সরলার্থঃ আমি রাষ্ট্রের স্বামিনী। আমি নানা ঐশ্বর্য্য কে প্রাপ্ত করানোকারী, যজ্ঞ দ্বারা উপাস্য, সব থেকে শ্রেষ্ঠ জ্ঞানবতী। সেই আমাকেই বহু প্রকার দ্বারা বিদ্যমান এবং বহু তত্ব বা শক্তির প্রদানকারী আমাকেই বিদ্বান জন বিবিধ প্রকার দ্বারা প্রতিপাদন করেন।
ময়া সো অন্নমত্তি যো বিপশ্যতি যঃ প্রাণিতি য ই শৃণোত্যুক্তম্।
অমন্তবো মাং ত উপ ক্ষিয়ন্তি শ্রুধি শ্রুত শ্রুদ্ধিবং তে বদামি।। ৪।।
সরলার্থঃ আমার দ্বারা অনুমোদিত তিনি ভোজন করেন, যিনি বিশিষ্টরূপে দেখেন, যিনি প্রাণ ধারণ করেন, যিনি উক্ত শ্রবন করেন। আমাকে অমান্যকারী তিনি নাশ প্রাপ্ত হয়, তোমাকে শ্রদ্ধাযুক্ত সত্যবচন বলছি - হে বিশ্রুদ্ধ শ্রবন করো ৪।।
অহমেব স্বয়মিদং বদামি জুষ্টং দেবেভিরুত মানুষেভিঃ।
যং কাময়ে তংমুগ্রং কৃণোমি তং ব্রহ্মাণং তমৃষি তং সুমেধাম্।।৫।।
সরলার্থঃ আমিই ইহা স্বয়ম উপদেশ করি যাকে বিদ্বান এবং মননশীল জন প্রেমপূর্বক শ্রবন এবং মনন করে। আমি যাকে ইচ্ছা করি তাকে তাকে বলবান করি তাকে চতুর্বেদবিত্ করি তাকে ঋষি এবং তাকে উত্তম মেধাযুক্ত করি।। ৫।।
অহং রুদ্রায় ধনুরাতনোমি ব্রহ্মদ্বিষে শরবে হন্তবা উ।
অহং জনায় সমদং কৃণম্যহং দ্যাবাপৃথিবী আ বিবেশ।।৬।।
সরলার্থঃ আমি ব্রাহ্মণ, বেদের হিংসক শত্রুবর্গকে নাশের জন্য দুষ্টের রোদনকারী ধনু কে বিস্তার করি। আমি মনুষ্যের উপকারের জন্য সংগ্রাম করি, আমি আকাশ এবং ভূমি উভয়ের মধ্যে ব্যাপ্য।।৬।।
অহং সুবে পিতরমস্য মূর্ধন্মম যোনিরপ্স্বন্তঃ সমুদ্রে।
ততো বি তিষ্ঠে ভূবনানু বিশ্বোতামূ দ্যাং বর্ষ্মণোপ স্পৃশামি।। ৭।।
সরলার্থঃ আমি এই সংসারের সবার উপরে এই জগতের পালক সূর্যকে উৎপন্ন করি। জলের মধ্যে তথা সমুদ্রের প্রতিটি পরমাণুতে আমার নিবাস ।সেই আমিই সমস্ত লোক কে বিশেষ রুপ দ্বারা ব্যাপিয়া আছি। এবং আমি সুখপ্রদ রূপ দ্বারা এই মহান আকাশ বা সূর্য্য কে প্রাপ্ত হই।
অহমেব বাত ইব প্র বাম্যারভমাণা ভূবনানি বিশ্বা।
পরো দিবা পর এনা পৃথিব্যৈতাবতী মহিনা সম্বভূব।।৮।।
সরলার্থঃ আমিই বায়ুর ন্যায় প্রগতি করি। আমি সমস্ত ভূবন কে নির্মাণ করি, দ্যুলোক থেকে পরেও এই পৃথিবী থেকে পরেও আমার মহানত্ব এতটাই হয়।।৮।।
ঋগ্বেদের দেবী সূক্তে এভাবে ই নারীরূপে ঈশ্বরের আরাধনা করা হয়। পৌরাণিক দেবী লক্ষ্মী সরস্বতী দূর্গা কালীরূপী ঈশ্বরের নারীসত্তার উৎপত্তি বিষয়ে বেদে ই পাওয়া যায়।
☆☆☆ এছাড়া বেদে সরাসরি লক্ষ্মী ও সরস্বতী রূপে ঈশ্বরের আরাধনার কথা আছে।।
●●●
আর্যগণ পূর্বেও লক্ষ্মীর আরাধনা বা উপাসনা করতো, এখনো করে এবং ভবিষ্যতেও করবে। কিন্তু হিন্দুগণ এখন যে চিন্তনে লক্ষ্মী পূজা করে (ছবিতে যা দেখছেন ও বছরে একক দিন যা হয়), তার সাথে বৈদিক ঋষি তথা আর্যগণের উপাসনা পদ্ধতি ভিন্ন। আর্যরা প্রতি নিয়তই লক্ষ্মীর উপাসনা তথা আরাধনা করে। দেখুন লক্ষ্মী মানে কি-
লক্ষ্মী- (লক্ষ দর্শনাঙ্কনয়োঃ) এই ধাতু থেকে লক্ষ্মী শব্দ সিদ্ধ হয়।
'য়ো লক্ষয়তি পশ্যতঙ্কতে চিহ্নয়তি চরাচরং জগৎ অথবা
বেদৈরাপ্তৈর্য়োগিভিশ্চ য়ো লক্ষ্যতে স লক্ষ্মীঃ সর্বপ্রিয়েশ্বরঃ'
অথাৎ যিনি সমস্ত চরাচর জগৎকে দেখেন, তা চিহ্নিত অর্থাৎ দর্শনীয় করিয়া নির্মাণ করেন অর্থাৎ যিনি শরীরে নেত্র ও নাসিকা, বৃক্ষের পত্র, পুষ্প, ফল, মূল, পৃথিবী ও জল(অগ্নি) আদি কৃষ্ণ রক্ত ও শ্বেত মৃত্তিকা পাষাণ চন্দ্র ও সূর্য্যাদি চিহ্ন রচনা করেন, তথা সকলকে দেখেন, তিনি সকল শোভার শোভা এবং যিনি বেদাদি শাস্ত্র বা ধার্মিক বিদ্বান যোগীদিগের লক্ষ্য অর্থাৎ দর্শনীয়, এই কারণে সেই পরমেশ্বরের নাম লক্ষ্মী।
এখন বেদ থেকে আমরা লক্ষ্মী সম্পর্কিত একটি মন্ত্র দেখি, সেখানে কিভাবে আমরা লক্ষ্মীর আরাধনা করি তার উল্লেখ পাওয়া যায়-
"সক্তুমিব তিতউনা পুনন্তো যত্র ধীরা মনসা বাচমক্রত।
অত্রা সখায়ঃ সখ্যানি জানতে ভদ্রৈষাং লক্ষ্মীর্নিহিতাধি বাচি।। 
ঋগবেদ ১০।৭১।২.
.
সরলার্থঃ চালনী দ্বারা পরিস্কৃত সুক্তের সমান যেখানে ধীর বিদ্বান মন দ্বারা পবিত্র বাণী বলে সেখানে পরস্পর মিলে জ্ঞানের চর্চাকারী বিদ্বান প্রকৃত মিত্রতাকে অনুভব করে। এদের বাণিতে কল্যাণময়ী লক্ষ্মী নিহিত হয়।"
অর্থাৎ লক্ষ্মী আলাদা কোন দেবী নয়। বরঞ্চ স্বয়ং পরমেশ্বরেরই একটা গুণবাচক নাম।
●●● ঋগ্বেদ 1/3/10 মন্ত্রটিতে সরস্বতীরূপে ঈশ্বরের আরাধনার কথা বলা আছে।
পবকা নঃ স্বরস্বতী বাজেভির্বাজিনীবতী।যজ­্ঞং বষ্টু ধিয়াবসুঃ।।ঋগ্বেদ ১/৩/১০
অনুবাদঃ
May Sarasvati, goddess of divine speech, mother knowledge of arts, science and divinity, come with gifts of food for the mind and intellect and purify us with the light of knowledge. May the mother grace our yajna of arts and sciences and bless us with the light divine. (Dr. Tulsi Ram)
বাংলাঃ সরস্বতী,স্বর্গীয় বাকশক্তির অধিষ্ঠাত্রী,শিল্পকলা,বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের জননী,যেন আমাদের চিত্তের খাদ্য দান করেন এবং জ্ঞানের আলো দ্বারা পরিশুদ্ধি সাধন করেন।মাতা যেন শিল্পকলা ও বিজ্ঞান বিষয়ে আমাদের সাধনা কে ফলদায়ক করেন ও আমাদের স্বর্গীয় আলো দ্বারা আশীর্বাদ করেন।
Special Thanks to:
Jatindra Barman Tanmoy
Kanchan Das
সুমন মিত্র 

বাংলাদেশ অগ্নিবীর

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন