এই ব্লগটি সন্ধান করুন

রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

বেদ ও গোমাতা

ওঁ তৎসৎ
#অনেক সনাতনীর মনে প্রায়শঃই প্রশ্ন জাগে যে সনাতনীরা গোমাংস ভক্ষণ করে না কেন? অনেক বিধর্মী তাদের গোমাংস ভক্ষণে প্ররোচিত করে। তারা প্রচার করে বেদে গোমাংস ভক্ষণের কোন নিষেধ নেই বরং গোমাংসভক্ষণের অনুমতি আছে। এ অপপ্রচারটা জাকির নায়েক নামক তথাকথিত পণ্ডিত(যে আদৌ সনাতনের কিছু বুঝে না) তার দ্বারা আরম্ভ হয় এবং তার লেকচার শুনে অনেকে সঠিকটা যাচাই না করে তার বাক্যকে সত্যবচন ভেবে ভুল পথে পা বাড়ায়, গোমাংসভক্ষণ এমনকি সনাতন ধর্মত্যাগ করতেও দ্বিধাবোধ করে না। তাদের জন্য অাকুল আবেদন সনাতন ধর্মের নামে প্রচারিত কুৎসাতে বিশ্বাস না করে নিজেই যাচাই করুন। যারা প্রশ্ন করেন সনাতনীরা গোমাংস ভক্ষণ করে না কেন- তার উত্তর স্বয়ং বেদে পরমেশ্বর প্রদান করেছেন-
ঋগ্বেদে গোহত্যা নিষেধ-
মাতা রুদ্রাণাং দুহিতা বসূনাং স্বসাদিত্যানামমৃতস্য নাভিঃ।
প্রনুবোচং চিকিতুষে জনায়, মা গামনাগামদিতিং বধিষ্ট।।
(ঋগ্বেদ ৮/১০১/১৫)
অনুবাদঃ গাভী রুদ্র ব্রহ্মচারী বিদ্বানগণের মাতা, নির্মাতা। দুষ্টের রোদনকর্তা বিদ্বান্, সৈনিক, সেনাপতি ইত্যাদিগণ গাভীকে মাতৃতুল্য পূজনীয়া বলে মনে করেন। গাভী বিদ্বান্ বসুগণের পুত্রী। সমাজের সংস্থাপক ব্যবস্থাপক প্রবন্ধক আদির জন্য গাভী পুত্রী-সমা পালনীয়া, রক্ষণীয়া রূপে স্বীকৃত। গাভী অমৃতের কেন্দ্র। গোরক্ষার দ্বারা চিরজীবন সমাজচেতনা লাভ হয়। গো নির্দোষ, নিষ্পাপ, অদিতি, অখণ্ডনীয়, অবধ্য সুতরাং তাকে হত্যা করো না।
যজুর্বেদে গোহত্যা নিষেধ-
ইমং সাহস্রং শতধারমুৎসং বাচ্যমানং সরিরস্যমধ্যে।
ঘৃতং দুহানামদিতিং জনাযাগ্রে মা হিংসীঃ পরমে ব্যোমন্।।(যজুঃ ১৩/৪৯)
অনুবাদঃ- এই গাভী মানুষের অসংখ্য সুখের সাধন, দুগ্ধের জন্য বিভিন্নভাবে পালনীয়া। গো, ঘৃত দুগ্ধ দাতৃ, অদিতি অখণ্ডনীয়া। হে মানব, একে হত্যা করো না।
অজস্রমিন্দুমরুষং ভুরণ্যুমগ্নিমীডে পূর্বচিত্তিং নমোভিঃ। স পর্বাভির্ঋতুশঃ কল্পমানো গাং মা হিংসীরদিতিং বিরাজম্।।
(যজুর্বেদ ১৩/৪৩)
অনুবাদঃ অক্ষয়, ঐশ্বর্য্যযুক্ত, অক্রোধ, পূর্বতন ঋষিদের দ্বারা গৃহীত অন্ন দ্বারা অগ্নিকে স্তুতি করি। হে অগ্নি, প্রতিপর্বে প্রতিঋতুতে কর্মের সম্পাদক, তুমি অদিতি, নিরীহ গোসমূহকে হত্যা করো না।
অথর্ববেদে গোসমূহের নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে।
সংজগ্মানা অবিভ্যুষিরস্মিন্ গোষ্ঠে করীষিণীঃ।
বিভ্রতীঃ সোম্যং মধ্বনমীবা উপেতন।।
(অথর্ববেদ ৩/১৪/৩)
অনুবাদঃ- এই গোশালায় ধেনু সকল নির্ভয়ে থাকুক, একসঙ্গে মিলিয়া বিচরণ করুক, গোময় উৎপন্ন করুক, অমৃতময় দুগ্ধ ধারণ করুক এবং নীরোগ হইয়া আমার নিকট আসুক।
যূয়ং গাবো মেদয়থা কৃশং চিদশ্রীরং চিৎ কৃণুথা সুপ্রতীকম্।
ভদ্রং গৃহং কৃণুথ ভদ্রবাচো বৃহদ্বো বয় উচ্যতে সভাসু।।
(অথর্ববেদ ৪/২১/৬)
অনুবাদঃ হে ধেনু সকল, তোমরা কৃশ মনুষ্যকে হৃষ্ট পুষ্ট কর। বিশ্রী মানুষকে সুশ্রী কর, গৃহকে মঙ্গলময় কর। তোমাদের রব মঙ্গলময়। সভাসমূহে তোমাদের বহু গুণ বর্ণনা করা হয়।
শুধু তাই নয়, গোহত্যাকারীদের সীসার গুলি দ্বারা হত্যা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে -
যদি নো গাং হংসি যদ্যশ্বং যদি পূরুষম্।
তন্ত্বা সীসেন বিধ্যামো যথা নোহসি অবীরহা।।
(অথর্ববেদ ১/১৬/৪)
অনুবাদঃ যদি তুমি আমাদের গাভী সকল হত্যা কর, যদি আমাদের ঘোড়া ও পুরুষদের হত্যা কর, তাহলে তোমাকে সীসের গুলি করে ধ্বংস করা হবে যাতে, তুমি আমাদের কোন প্রকার ক্ষতি সাধন করতে না পারো।
গোঘাতকদের রাজ্য থেকে বহিষ্কার করার আদেশ এবং তাদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়ার আদেশ পর্য্যন্ত দেয়া হয়েছে।
বিষং গাং বা যাতুধানা ভবন্তামা বৃশ্চন্তামদিতয়ে দুরেবাঃ।
পরেনৈনান্ দেবঃ সবিতা দদাতু পরা ভাগমোষ ধীনাং জয়ন্তাম্।।
(অথর্ববেদ ৮/৩/১৬)
অনুবাদঃ যদি প্রজার উপর অত্যাচারকারীরা গবাদিপশুকে বিষ দেয় ও গাভীকে কর্তন করে, তবে রাজা এদের রাজ্য থেকে বহিষ্কৃত করুন অথবা তাদের সর্বস্ব কেড়ে নিন এবং তারা যেন অন্ন ও ঔষধের অংশ প্রাপ্ত না হয়।
তাছাড়া যজুর্বেদ ৩০/১৮ তে গোহত্যাকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিধান দেয়া হয়েছে-
অন্তকায় গোঘাতকম্।।
অর্থাৎ যে গোঘাতক তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক।
এর চেয়ে বেশী গোহত্যাকে মহাপাপ ও মহাপরাধ প্রতিপন্ন করার অন্য আদেশ আর কী হতে পারে?
এছাড়া মহাভারতের শান্তিপর্বে ২৬২ অধ্যায়ের ৪৭ শ্লোকে বলা হয়েছে-
অঘ্ন্যা ইতি গাবাং নাম, ক্ব এতা হন্তুমর্হতি।
মহচ্চকারাকুশলং বৃষং গাং বা লভেত্তু যঃ।।
অনুবাদঃ গাভীর অপর নাম অঘ্ন্যা, এরা অবধ্যা। এই সকল গাভী ও বৃষকে হত্যা করে সে মহাপাপ করে।
 ব্যাস সংহিতার প্রথম অধ্যায়ের দ্বাদশ শ্লোকে গোমাংসভোজীদের নীচু, হীন, অন্ত্যজ জাতি বলা হয়েছে।
এরকম অসংখ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা যায় যেখানে গোহত্যা মহাপাপ বলে পরিগণিত এবং গোহত্যাকারীদের শাস্তি দিতে বলা হয়েছে। বৈদিক আর্য্য সভ্যতায় বর্তমানে শাকাহারী ও মাংসাহারী দু'ধরনের লোক রয়েছে। যারা শাকাহারী তারা তো মাংস খায়ই না, যারা আর্য সভ্যতায় ঘোরতর মাংসাহারী তারাও গোমাংস ভক্ষণকে মহাপাপ ও অধর্ম বিবেচনা করে। গোহত্যাকারী তথা ওঁ তৎসৎ
#অনেক সনাতনীর মনে প্রায়শঃই প্রশ্ন জাগে যে সনাতনীরা গোমাংস ভক্ষণ করে না কেন? অনেক বিধর্মী তাদের গোমাংস ভক্ষণে প্ররোচিত করে। তারা প্রচার করে বেদে গোমাংস ভক্ষণের কোন নিষেধ নেই বরং গোমাংসভক্ষণের অনুমতি আছে। এ অপপ্রচারটা জাকির নায়েক নামক তথাকথিত পণ্ডিত(যে আদৌ সনাতনের কিছু বুঝে না) তার দ্বারা আরম্ভ হয় এবং তার লেকচার শুনে অনেকে সঠিকটা যাচাই না করে তার বাক্যকে সত্যবচন ভেবে ভুল পথে পা বাড়ায়, গোমাংসভক্ষণ এমনকি সনাতন ধর্মত্যাগ করতেও দ্বিধাবোধ করে না। তাদের জন্য অাকুল আবেদন সনাতন ধর্মের নামে প্রচারিত কুৎসাতে বিশ্বাস না করে নিজেই যাচাই করুন। যারা প্রশ্ন করেন সনাতনীরা গোমাংস ভক্ষণ করে না কেন- তার উত্তর স্বয়ং বেদে পরমেশ্বর প্রদান করেছেন-
ঋগ্বেদে গোহত্যা নিষেধ-
মাতা রুদ্রাণাং দুহিতা বসূনাং স্বসাদিত্যানামমৃতস্য নাভিঃ।
প্রনুবোচং চিকিতুষে জনায়, মা গামনাগামদিতিং বধিষ্ট।।
(ঋগ্বেদ ৮/১০১/১৫)
অনুবাদঃ গাভী রুদ্র ব্রহ্মচারী বিদ্বানগণের মাতা, নির্মাতা। দুষ্টের রোদনকর্তা বিদ্বান্, সৈনিক, সেনাপতি ইত্যাদিগণ গাভীকে মাতৃতুল্য পূজনীয়া বলে মনে করেন। গাভী বিদ্বান্ বসুগণের পুত্রী। সমাজের সংস্থাপক ব্যবস্থাপক প্রবন্ধক আদির জন্য গাভী পুত্রী-সমা পালনীয়া, রক্ষণীয়া রূপে স্বীকৃত। গাভী অমৃতের কেন্দ্র। গোরক্ষার দ্বারা চিরজীবন সমাজচেতনা লাভ হয়। গো নির্দোষ, নিষ্পাপ, অদিতি, অখণ্ডনীয়, অবধ্য সুতরাং তাকে হত্যা করো না।
যজুর্বেদে গোহত্যা নিষেধ-
ইমং সাহস্রং শতধারমুৎসং বাচ্যমানং সরিরস্যমধ্যে।
ঘৃতং দুহানামদিতিং জনাযাগ্রে মা হিংসীঃ পরমে ব্যোমন্।।(যজুঃ ১৩/৪৯)
অনুবাদঃ- এই গাভী মানুষের অসংখ্য সুখের সাধন, দুগ্ধের জন্য বিভিন্নভাবে পালনীয়া। গো, ঘৃত দুগ্ধ দাতৃ, অদিতি অখণ্ডনীয়া। হে মানব, একে হত্যা করো না।
অজস্রমিন্দুমরুষং ভুরণ্যুমগ্নিমীডে পূর্বচিত্তিং নমোভিঃ। স পর্বাভির্ঋতুশঃ কল্পমানো গাং মা হিংসীরদিতিং বিরাজম্।।
(যজুর্বেদ ১৩/৪৩)
অনুবাদঃ অক্ষয়, ঐশ্বর্য্যযুক্ত, অক্রোধ, পূর্বতন ঋষিদের দ্বারা গৃহীত অন্ন দ্বারা অগ্নিকে স্তুতি করি। হে অগ্নি, প্রতিপর্বে প্রতিঋতুতে কর্মের সম্পাদক, তুমি অদিতি, নিরীহ গোসমূহকে হত্যা করো না।
অথর্ববেদে গোসমূহের নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে।
সংজগ্মানা অবিভ্যুষিরস্মিন্ গোষ্ঠে করীষিণীঃ।
বিভ্রতীঃ সোম্যং মধ্বনমীবা উপেতন।।
(অথর্ববেদ ৩/১৪/৩)
অনুবাদঃ- এই গোশালায় ধেনু সকল নির্ভয়ে থাকুক, একসঙ্গে মিলিয়া বিচরণ করুক, গোময় উৎপন্ন করুক, অমৃতময় দুগ্ধ ধারণ করুক এবং নীরোগ হইয়া আমার নিকট আসুক।
যূয়ং গাবো মেদয়থা কৃশং চিদশ্রীরং চিৎ কৃণুথা সুপ্রতীকম্।
ভদ্রং গৃহং কৃণুথ ভদ্রবাচো বৃহদ্বো বয় উচ্যতে সভাসু।।
(অথর্ববেদ ৪/২১/৬)
অনুবাদঃ হে ধেনু সকল, তোমরা কৃশ মনুষ্যকে হৃষ্ট পুষ্ট কর। বিশ্রী মানুষকে সুশ্রী কর, গৃহকে মঙ্গলময় কর। তোমাদের রব মঙ্গলময়। সভাসমূহে তোমাদের বহু গুণ বর্ণনা করা হয়।
শুধু তাই নয়, গোহত্যাকারীদের সীসার গুলি দ্বারা হত্যা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে -
যদি নো গাং হংসি যদ্যশ্বং যদি পূরুষম্।
তন্ত্বা সীসেন বিধ্যামো যথা নোহসি অবীরহা।।
(অথর্ববেদ ১/১৬/৪)
অনুবাদঃ যদি তুমি আমাদের গাভী সকল হত্যা কর, যদি আমাদের ঘোড়া ও পুরুষদের হত্যা কর, তাহলে তোমাকে সীসের গুলি করে ধ্বংস করা হবে যাতে, তুমি আমাদের কোন প্রকার ক্ষতি সাধন করতে না পারো।
গোঘাতকদের রাজ্য থেকে বহিষ্কার করার আদেশ এবং তাদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়ার আদেশ পর্য্যন্ত দেয়া হয়েছে।
বিষং গাং বা যাতুধানা ভবন্তামা বৃশ্চন্তামদিতয়ে দুরেবাঃ।
পরেনৈনান্ দেবঃ সবিতা দদাতু পরা ভাগমোষ ধীনাং জয়ন্তাম্।।
(অথর্ববেদ ৮/৩/১৬)
অনুবাদঃ যদি প্রজার উপর অত্যাচারকারীরা গবাদিপশুকে বিষ দেয় ও গাভীকে কর্তন করে, তবে রাজা এদের রাজ্য থেকে বহিষ্কৃত করুন অথবা তাদের সর্বস্ব কেড়ে নিন এবং তারা যেন অন্ন ও ঔষধের অংশ প্রাপ্ত না হয়।
তাছাড়া যজুর্বেদ ৩০/১৮ তে গোহত্যাকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিধান দেয়া হয়েছে-
অন্তকায় গোঘাতকম্।।
অর্থাৎ যে গোঘাতক তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক।
এর চেয়ে বেশী গোহত্যাকে মহাপাপ ও মহাপরাধ প্রতিপন্ন করার অন্য আদেশ আর কী হতে পারে?
এছাড়া মহাভারতের শান্তিপর্বে ২৬২ অধ্যায়ের ৪৭ শ্লোকে বলা হয়েছে-
অঘ্ন্যা ইতি গাবাং নাম, ক্ব এতা হন্তুমর্হতি।
মহচ্চকারাকুশলং বৃষং গাং বা লভেত্তু যঃ।।
অনুবাদঃ গাভীর অপর নাম অঘ্ন্যা, এরা অবধ্যা। এই সকল গাভী ও বৃষকে হত্যা করে সে মহাপাপ করে।
 ব্যাস সংহিতার প্রথম অধ্যায়ের দ্বাদশ শ্লোকে গোমাংসভোজীদের নীচু, হীন, অন্ত্যজ জাতি বলা হয়েছে।
এরকম অসংখ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা যায় যেখানে গোহত্যা মহাপাপ বলে পরিগণিত এবং গোহত্যাকারীদের শাস্তি দিতে বলা হয়েছে। বৈদিক আর্য্য সভ্যতায় বর্তমানে শাকাহারী ও মাংসাহারী দু'ধরনের লোক রয়েছে। যারা শাকাহারী তারা তো মাংস খায়ই না, যারা আর্য সভ্যতায় ঘোরতর মাংসাহারী তারাও গোমাংস ভক্ষণকে মহাপাপ ও অধর্ম বিবেচনা করে। গোহত্যাকারী তথা
 ওঁ তৎসৎ
#অনেক সনাতনীর মনে প্রায়শঃই প্রশ্ন জাগে যে সনাতনীরা গোমাংস ভক্ষণ করে না কেন? অনেক বিধর্মী তাদের গোমাংস ভক্ষণে প্ররোচিত করে। তারা প্রচার করে বেদে গোমাংস ভক্ষণের কোন নিষেধ নেই বরং গোমাংসভক্ষণের অনুমতি আছে। এ অপপ্রচারটা জাকির নায়েক নামক তথাকথিত পণ্ডিত(যে আদৌ সনাতনের কিছু বুঝে না) তার দ্বারা আরম্ভ হয় এবং তার লেকচার শুনে অনেকে সঠিকটা যাচাই না করে তার বাক্যকে সত্যবচন ভেবে ভুল পথে পা বাড়ায়, গোমাংসভক্ষণ এমনকি সনাতন ধর্মত্যাগ করতেও দ্বিধাবোধ করে না। তাদের জন্য অাকুল আবেদন সনাতন ধর্মের নামে প্রচারিত কুৎসাতে বিশ্বাস না করে নিজেই যাচাই করুন। যারা প্রশ্ন করেন সনাতনীরা গোমাংস ভক্ষণ করে না কেন- তার উত্তর স্বয়ং বেদে পরমেশ্বর প্রদান করেছেন-
ঋগ্বেদে গোহত্যা নিষেধ-
মাতা রুদ্রাণাং দুহিতা বসূনাং স্বসাদিত্যানামমৃতস্য নাভিঃ।
প্রনুবোচং চিকিতুষে জনায়, মা গামনাগামদিতিং বধিষ্ট।।
(ঋগ্বেদ ৮/১০১/১৫)
অনুবাদঃ গাভী রুদ্র ব্রহ্মচারী বিদ্বানগণের মাতা, নির্মাতা। দুষ্টের রোদনকর্তা বিদ্বান্, সৈনিক, সেনাপতি ইত্যাদিগণ গাভীকে মাতৃতুল্য পূজনীয়া বলে মনে করেন। গাভী বিদ্বান্ বসুগণের পুত্রী। সমাজের সংস্থাপক ব্যবস্থাপক প্রবন্ধক আদির জন্য গাভী পুত্রী-সমা পালনীয়া, রক্ষণীয়া রূপে স্বীকৃত। গাভী অমৃতের কেন্দ্র। গোরক্ষার দ্বারা চিরজীবন সমাজচেতনা লাভ হয়। গো নির্দোষ, নিষ্পাপ, অদিতি, অখণ্ডনীয়, অবধ্য সুতরাং তাকে হত্যা করো না।
যজুর্বেদে গোহত্যা নিষেধ-
ইমং সাহস্রং শতধারমুৎসং বাচ্যমানং সরিরস্যমধ্যে।
ঘৃতং দুহানামদিতিং জনাযাগ্রে মা হিংসীঃ পরমে ব্যোমন্।।(যজুঃ ১৩/৪৯)
অনুবাদঃ- এই গাভী মানুষের অসংখ্য সুখের সাধন, দুগ্ধের জন্য বিভিন্নভাবে পালনীয়া। গো, ঘৃত দুগ্ধ দাতৃ, অদিতি অখণ্ডনীয়া। হে মানব, একে হত্যা করো না।
অজস্রমিন্দুমরুষং ভুরণ্যুমগ্নিমীডে পূর্বচিত্তিং নমোভিঃ। স পর্বাভির্ঋতুশঃ কল্পমানো গাং মা হিংসীরদিতিং বিরাজম্।।
(যজুর্বেদ ১৩/৪৩)
অনুবাদঃ অক্ষয়, ঐশ্বর্য্যযুক্ত, অক্রোধ, পূর্বতন ঋষিদের দ্বারা গৃহীত অন্ন দ্বারা অগ্নিকে স্তুতি করি। হে অগ্নি, প্রতিপর্বে প্রতিঋতুতে কর্মের সম্পাদক, তুমি অদিতি, নিরীহ গোসমূহকে হত্যা করো না।
অথর্ববেদে গোসমূহের নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে।
সংজগ্মানা অবিভ্যুষিরস্মিন্ গোষ্ঠে করীষিণীঃ।
বিভ্রতীঃ সোম্যং মধ্বনমীবা উপেতন।।
(অথর্ববেদ ৩/১৪/৩)
অনুবাদঃ- এই গোশালায় ধেনু সকল নির্ভয়ে থাকুক, একসঙ্গে মিলিয়া বিচরণ করুক, গোময় উৎপন্ন করুক, অমৃতময় দুগ্ধ ধারণ করুক এবং নীরোগ হইয়া আমার নিকট আসুক।
যূয়ং গাবো মেদয়থা কৃশং চিদশ্রীরং চিৎ কৃণুথা সুপ্রতীকম্।
ভদ্রং গৃহং কৃণুথ ভদ্রবাচো বৃহদ্বো বয় উচ্যতে সভাসু।।
(অথর্ববেদ ৪/২১/৬)
অনুবাদঃ হে ধেনু সকল, তোমরা কৃশ মনুষ্যকে হৃষ্ট পুষ্ট কর। বিশ্রী মানুষকে সুশ্রী কর, গৃহকে মঙ্গলময় কর। তোমাদের রব মঙ্গলময়। সভাসমূহে তোমাদের বহু গুণ বর্ণনা করা হয়।
শুধু তাই নয়, গোহত্যাকারীদের সীসার গুলি দ্বারা হত্যা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে -
যদি নো গাং হংসি যদ্যশ্বং যদি পূরুষম্।
তন্ত্বা সীসেন বিধ্যামো যথা নোহসি অবীরহা।।
(অথর্ববেদ ১/১৬/৪)
অনুবাদঃ যদি তুমি আমাদের গাভী সকল হত্যা কর, যদি আমাদের ঘোড়া ও পুরুষদের হত্যা কর, তাহলে তোমাকে সীসের গুলি করে ধ্বংস করা হবে যাতে, তুমি আমাদের কোন প্রকার ক্ষতি সাধন করতে না পারো।
গোঘাতকদের রাজ্য থেকে বহিষ্কার করার আদেশ এবং তাদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়ার আদেশ পর্য্যন্ত দেয়া হয়েছে।
বিষং গাং বা যাতুধানা ভবন্তামা বৃশ্চন্তামদিতয়ে দুরেবাঃ।
পরেনৈনান্ দেবঃ সবিতা দদাতু পরা ভাগমোষ ধীনাং জয়ন্তাম্।।
(অথর্ববেদ ৮/৩/১৬)
অনুবাদঃ যদি প্রজার উপর অত্যাচারকারীরা গবাদিপশুকে বিষ দেয় ও গাভীকে কর্তন করে, তবে রাজা এদের রাজ্য থেকে বহিষ্কৃত করুন অথবা তাদের সর্বস্ব কেড়ে নিন এবং তারা যেন অন্ন ও ঔষধের অংশ প্রাপ্ত না হয়।
তাছাড়া যজুর্বেদ ৩০/১৮ তে গোহত্যাকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিধান দেয়া হয়েছে-
অন্তকায় গোঘাতকম্।।
অর্থাৎ যে গোঘাতক তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক।
এর চেয়ে বেশী গোহত্যাকে মহাপাপ ও মহাপরাধ প্রতিপন্ন করার অন্য আদেশ আর কী হতে পারে?
এছাড়া মহাভারতের শান্তিপর্বে ২৬২ অধ্যায়ের ৪৭ শ্লোকে বলা হয়েছে-
অঘ্ন্যা ইতি গাবাং নাম, ক্ব এতা হন্তুমর্হতি।
মহচ্চকারাকুশলং বৃষং গাং বা লভেত্তু যঃ।।
অনুবাদঃ গাভীর অপর নাম অঘ্ন্যা, এরা অবধ্যা। এই সকল গাভী ও বৃষকে হত্যা করে সে মহাপাপ করে।
 ব্যাস সংহিতার প্রথম অধ্যায়ের দ্বাদশ শ্লোকে গোমাংসভোজীদের নীচু, হীন, অন্ত্যজ জাতি বলা হয়েছে।
এরকম অসংখ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা যায় যেখানে গোহত্যা মহাপাপ বলে পরিগণিত এবং গোহত্যাকারীদের শাস্তি দিতে বলা হয়েছে। বৈদিক আর্য্য সভ্যতায় বর্তমানে শাকাহারী ও মাংসাহারী দু'ধরনের লোক রয়েছে। যারা শাকাহারী তারা তো মাংস খায়ই না, যারা আর্য সভ্যতায় ঘোরতর মাংসাহারী তারাও গোমাংস ভক্ষণকে মহাপাপ ও অধর্ম বিবেচনা করে। গোহত্যাকারী তথা যবন ও বিদেশীরা বৈদিক আর্য সংস্কৃতি নষ্ট করার হাজারো চেষ্টা চালাচ্ছে, বেদের ব্যাখ্যা দূষিত করার চেষ্টা করছে যেমন মেক্সমুলার, গ্রিফিথ, হরফ প্রকাশনী ইত্যাদি বেদের অনুবাদ করার নামে বেদে গোমাংস ঢুকানোর মাধ্যমে সনাতনীদের মুসলিম, খ্রিস্টানে পরিণত করার অপচেষ্টা করেছিল যার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক সনাতনী বিভ্রান্ত হয়ে সত্যতা যাচাই না করে গোমাংস ভক্ষণ ও খ্রিস্টান ও মুসলিম হয়ে যায়। তাই সকলের প্রতি অনুরোধ রইল কারো কথায় বিভ্রান্ত হওয়ার আগে পোস্টটি পড়ে নিন এবং পোস্টটা সংরক্ষণ করে রাখুন এবং সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিন।
লেখকঃ শ্রী নিলয় ঘোষ
জয় শ্রীরাম। জয় শ্রীকৃষ্ণ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন