এই ব্লগটি সন্ধান করুন

মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

গীতার বিভ্রান্তকর শ্লোক

নমস্কার সনাতনীগণ  আজ আমি শ্রীমদ্ভগবদগীতার একটি বিভ্রান্তকর শ্লোক নিয়ে কথা বলব। আমরা জানি গীতা হচ্ছে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুখ নিসৃত বানী।আর আমরা যে অধ্যায় কথা বলব সেটি জ্ঞান বিজ্ঞান যোগের ২০ নং শ্লোক যেখানে বলা হয়েছে 
কামৈস্তৈস্তৈর্হৃতজ্ঞানাঃ প্রপদ্যন্তেহন্যদেবতাঃ ।
তং তং নিয়মমাস্থায় প্রকৃত্যা নিয়তাঃ স্বয়া ॥৭/২০॥

কামৈঃ= কামের , তৈঃ=যাদের  তৈঃ= যাদের, হৃতজ্ঞানাঃ=  জ্ঞান অপহৃত
প্রপদ্যযন্তে,=প্রপত্তি করে। অন্য-দেবতাঃ,=
অন্য দেবদেবী
তম্ =সেই
তম্,=সেই নিয়মম্,=নিয়ম আস্থায়, প্রকৃত্যা,=প্রকৃতির নিয়তাঃ=শরনাগত
স্বয়াঃ=স্বীয়
॥২০॥
যার বাংলা অনুবাদ করলে হয়
কামনা-বাসনার দ্বারা যাদের জ্ঞান অপহৃত হয়েছে, তারা অন্য দেব-দেবীর শরণাগত হয় এবং তাদের স্বীয় স্বভাব অনুসারে বিশেষ নিয়ম পালন করে দেবতাদের উপাসনা করে।
এটা বিভ্রান্তিকর। বিধর্মীরা এটিি নিয়ে সনাতনীদের অপপ্রচার করে থাকে।
কিন্তু খুটিয়ে দেখলে বোঝা যায় এটি খুবই সোজা শ্লোক।শব্দ গুলো মিলিয়ে দেয়া হয়েছে।
কিন্তু ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এমন কোনো শ্লোক দেন নি কারন  
গীতা ৭/২১ এ তিনি বলেছেন যো যো যাং যাং তনুং ভক্তঃ শ্রদ্ধয়ার্চিতুমিচ্ছতি ।
তস্য তস্যাচলাং শ্রদ্ধাং তামেব বিদধাম্যহম্ ॥
অর্থাতপরমাত্মারূপে আমি সকলের হৃদয়ে বিরাজ করি। যখনই কেউ দেবতাদের পূজা করতে ইচ্ছা করে, তখনই আমি সেই সেই ভক্তের তাতেই অচলা শ্রদ্ধা বিধান করি ।
দুটো শ্লোকই পরষ্পর বিরেধিতা করে।তাছাড়া ৭/২২ এ দেখতে 
পাই,
স তয়া শ্রদ্ধয়া যুক্তস্তস্যারাধনমীহতে ।
লভতে চ ততঃ কামান্ময়ৈব বিহিতান্ হি তান্ ॥(৭/২২)
অর্থাতসেই ব্যক্তি শ্রদ্ধাযুক্ত হয়ে সেই দেবতার আরাধনা করেন এবং সেই দেবতার কাছ থেকে আমারই দ্বারা বিহিত কাম্য বস্তু অবশ্যই লাভ করেন।
এদুটো শ্লোক প্রমান করে ৭/২০ অনুুুুবাদে ভুল আছে যদিও সকল প্রকাশনীর গীতায় এই অর্থ অনুদিত।
এই ৭/২০ এ যে ভুল তা স্পষ্ট্র প্রমানিত হয় গীতার ৩/১২
ইষ্টান্ ভোগান্ হি বো দেবা দাস্যন্তে যজ্ঞভাবিতাঃ ।
তৈর্দত্তানপ্রদায়ৈভ্যো যো ভুঙক্তে স্তেন এব সঃ ॥
অর্থাত যে দেবতাদিগের পুজা
করে না সে চোর বলিয়া কথিত হন।
তাহলে বোঝা গেল যে গীতা ৭/২০ শ্লোক অনুুবাদ  ভুল।
তাছাড়া গীতায় এমন অনেক সংস্কৃত শব্দ যা বাংলা অনুবাদ কালে প্রথমে বসে।আবার তেমনি অনেক সংস্কৃত বাংলায় অনুবাদে পরে বসে।
তাই গীতার ৭/২০ শ্লোক এর অনুবাদ হবে
কামৈস্তৈস্তৈর্হৃতজ্ঞানাঃ প্রপদ্যন্তেহন্যদেবতাঃ ।
তং তং নিয়মমাস্থায় প্রকৃত্যা নিয়তাঃ স্বয়া ॥২০॥
অনুবাদঃ যাদের জ্ঞান অপহত হয়েছে। তারা দেবতার শরনাগত হয়ে বিবিধ নিয়ম পালন করে পুজার মাধ্যমে ইষ্ট কামনা করে।।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন